ঢাকা শনিবার, ৩১ মে, ২০২৫

খালি পেটে তোকমা খাওয়ার উপকারিতা

লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ২৯, ২০২৫, ১২:৫৭ পিএম
তোকমা। ছবি- সংগৃহীত

পুষ্টিগুণে ভরা তোকমায় রয়েছে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট ও প্রচুর পরিমাণ ফাইবার। পাশাপাশি ওমেগা-৩, ফ্যাটি অ্যাসিডের অন্যতম একটি ভালো উৎস এটি।

এ ছাড়া তোকমা বীজে আছে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, তামা, ম্যাগনেশিয়াম ও সামান্য ভিটামিন ‘সি’। ১ টেবিল চামচ তোকমা দানায় আনুমানিক ক্যালরি ৬০, ফাইবার ৭ গ্রাম, প্রোটিন ২ গ্রাম, চর্বি ২.৫ গ্রাম, আয়রন ১.৭ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৫৫ মিলিগ্রাম এবং ম্যাগনেশিয়াম ৪১ মিলিগ্রাম রয়েছে।

খালি পেটে তোকমা দানা খাওয়া শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী, বিশেষত যারা প্রাকৃতিক উপায়ে স্বাস্থ্য রক্ষা ও ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চান তাদের জন্য।

খালি পেটে তোকমা খাওয়ার উপকারিতা

১. হজমশক্তি বাড়ায় এবং পেট ঠান্ডা রাখে

তোকমা দানা প্রাকৃতিকভাবে শরীর ঠান্ডা রাখে এবং হজমের জন্য উপকারী। খালি পেটে খেলে এটি পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

২. ওজন কমাতে সাহায্য করে

তোকমা দানা পানিতে ভিজিয়ে খেলে তা জেলির মতো আকার ধারণ করে এবং পেট ভর্তি অনুভব হয়। ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার ইচ্ছা কমে যায়। এটি খালি পেটে খাওয়া ওজন কমানোর ডায়েটে খুব কার্যকর।

৩. ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক

তোকমার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম, তাই এটি রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বাড়তে দেয় না। খালি পেটে খেলে সারাদিনে রক্তে শর্করার ওঠানামা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

৪. ডিটক্স প্রভাব ও হজমে সহায়তা

তোকমা দানা প্রাকৃতিক ডিটক্সিফায়ার হিসেবে কাজ করে। খালি পেটে খেলে এটি শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে।

৫. অ্যাসিডিটি ও গ্যাস্ট্রিক কমায়

তোকমা দানা পেট ঠান্ডা রাখে এবং পাকস্থলীতে অ্যাসিড কমায়। গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটির সমস্যায় যারা ভুগছেন, তাদের জন্য এটি খালি পেটে খাওয়া উপকারী।

৬. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে

ফাইবারে সমৃদ্ধ হওয়ায় তোকমা দানা হজমনালী পরিষ্কার রাখে এবং পায়খানা নরম করতে সাহায্য করে।

৭. ত্বক ও চুলের সৌন্দর্যে সহায়ক

তোকমা দানায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে যা ত্বক ও চুলের জন্য ভালো। খালি পেটে খাওয়া শরীরের ভেতর থেকে পরিষ্কার করে, যা ত্বকে প্রতিফলিত হয়।

তোকমা খাওয়ার অপকারিতা

যেহেতু প্রায় প্রতিটি বিষয়ের খারাপ দিক এবং ভালো দিক রয়েছে, তাই তোকমা খাওয়ার উপকারিতা থাকার পাশাপাশি তোকমা খাওয়ার অপকারিতাও রয়েছে।

যদি কোনো অন্তঃসত্ত্বা নারীদের বেশি তোকমা প্রদান করা হয়, তাহলে তার অনেক সমস্যা হতে পারে। অন্তঃসত্ত্বা নারীদের শরীরে থাকা ইস্ট্রোজেন হরমোনটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু যদি তাকে খুব বেশি পরিমাণ তোকমা বীজ খাইয়ে দেওয়া হয় তখন এই ইস্ট্রোজেন হরমোনটির মাত্রা অনেকটা কমে আসতে পারে।

যদি আমরা খুব ছোট শিশুদের এটি খাওয়াই তাহলেও তাদের অনেক সমস্যা হতে পারে। যেহেতু ছোট শিশুর পেটে খুব বেশি পরিমাণে বিপাকীয় ক্ষমতা থাকে না, তাই এটি থেকে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ ছাড়া শিশুদের পেটের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে এই তোকমা।

এমনকি এই তোকমা দানার মারাত্মক একটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে শিশুদের ক্ষেত্রে; সেটা হচ্ছে শিশুদের দমও বন্ধ হয়ে আসতে পারে। এ কারণে শিশুদের এটি কখনোই প্রদান করা যাবে না। সবসময় পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তিরা এটি সেবন করবেন।