ফেইসবুক, ইনস্টাগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাট ও এক্স-এর মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো একদিকে যেমন তথ্য ও বিনোদনের উৎস, অন্যদিকে সেগুলো মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর ফেলছে নেতিবাচক প্রভাব।
অতিরিক্ত ব্যবহার কর্মদক্ষতা কমানো, একাকিত্ব ও উদ্বেগ বাড়ানো এমনকি বাস্তব জীবনের সম্পর্কেও বিরূপ প্রভাব ফেলছে।
তাই এখন অনেকেই প্রশ্ন করছেন—কীভাবে এই আসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়? টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে কিছু বাস্তবসম্মত ও কার্যকর কৌশলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যেগুলো মেনে চললে সামাজিক মাধ্যমের নেতিবাচক প্রভাব কমিয়ে আনা সম্ভব।
ব্যবহারের ওপর নজর রাখুন
সামাজিক মাধ্যম থেকে দূরে থাকার প্রথম ধাপ হলো—ব্যবহারটা বুঝে নেওয়া। অ্যাপল ও গুগল উভয়ই তাদের ডিভাইসে এমন কিছু বিল্ট-ইন টুল দিয়েছে, যার মাধ্যমে দেখা যায় কোন অ্যাপে কতটা সময় ব্যয় করা হচ্ছে।
আইফোনে: স্ক্রিন টাইম ফিচার ব্যবহার করে আপনি জানতে পারবেন কোন অ্যাপে কত সময় দিয়েছেন, দিনে কতবার ফোন আনলক করেছেন।
অ্যান্ড্রয়েডে: গুগল ডিজিটাল ওয়েলবিয়িং ফিচার ব্যবহার করে স্ক্রিন টাইম ও অ্যাপ ব্যবহারের বিস্তারিত পরিসংখ্যান পাওয়া যায়।
ডিটক্স অ্যাপ ব্যবহার করুন
সামাজিক মাধ্যমের ব্যবহার সীমিত করতে সহায়ক কিছু অ্যাপ আছে:
Dumb Phone: অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ সরিয়ে একটি সহজ ও নিরুৎসাহজনক হোমস্ক্রিন তৈরি করে, যাতে বারবার ফোন ধরার প্রবণতা কমে।
Opal: এটি মনোযোগ বিঘ্নকারী অ্যাপগুলো ব্লক করে স্ক্রিন টাইম নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং আসক্তি কমায়।
Forest: গেমের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের ফোন থেকে দূরে রাখে। নির্ধারিত সময় ফোন না ধরলে একটি ভার্চুয়াল গাছ বড় হয়, আর ফোন ধরলে গাছটি মরে যায়—এভাবে এক ধরণের ইতিবাচক চাপ তৈরি হয়।
ডিভাইস বদলান
যারা কঠোরভাবে সামাজিক মাধ্যম থেকে বিরতি নিতে চান, তাদের জন্য 'ডাম্ব ফোন' হতে পারে কার্যকর সমাধান।
নোকিয়া ২৬৬০-এর মতো ফোনগুলো শুধু মৌলিক ফিচার দেয়, যাতে সামাজিক মাধ্যমের আকর্ষণ থেকে দূরে থাকা সহজ হয়।
নির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন
সামাজিক মাধ্যম পুরোপুরি ত্যাগ করা অনেকের পক্ষেই সম্ভব নয়। তাই ধাপে ধাপে ব্যবহার কমানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করুন।
যেমন, প্রতি সপ্তাহে স্ক্রিন টাইম ২০% কমানো।
নিজেকে সময় দিন, আসক্তি দূর করতে ধৈর্য জরুরি।
বিকল্প অভ্যাস গড়ে তুলুন
সামাজিক মাধ্যমে সময় ব্যয় করার পরিবর্তে এমন কাজের দিকে মনোযোগ দিন, যা মানসিক ও শারীরিক সুস্থতা বাড়ায়। যেমন- বই পড়া, ব্যায়াম করা, রান্না ও প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটানো।
এসব অভ্যাস ব্যক্তি জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং ধীরে ধীরে প্রযুক্তিনির্ভরতার ভারসাম্য আনে।
সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণই হতে পারে সুস্থ জীবনের চাবিকাঠি। প্রযুক্তির সদ্ব্যবহার যেমন আমাদের এগিয়ে নিতে পারে, তেমনি তার অপব্যবহার আমাদের দূরে ঠেলে দিতে পারে বাস্তবতা ও সম্পর্ক থেকে। তাই প্রয়োজন সচেতন সিদ্ধান্ত ও আত্মনিয়ন্ত্রণের অভ্যাস।

 
                             
                                     সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251025002118.webp) 
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন