কোরবানি যেমন ইবাদত, তেমনই কোরবানির পর পরিবেশ রক্ষা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা একজন মুসলমানের ধর্মীয় ও সামাজিক দায়িত্ব। ইসলাম পরিচ্ছন্নতাকে অর্ধ-ঈমান বলেছে, তাই কোরবানির পর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
কোরবানির স্থান নির্ধারণ ও প্রস্তুতি
কোরবানির পূর্বে এমন একটি জায়গা নির্ধারণ করুন, যেখান থেকে রক্ত ও বর্জ্য সহজে সরানো যায়। মাটির নিচে খোঁড়া গর্ত বা নির্দিষ্ট ড্রেনিং সিস্টেম থাকলে তা ব্যবহারে সুবিধা হয়। কোরবানি করার স্থানে আগে থেকেই পানি ও ব্লিচ মিশ্রণ প্রস্তুত রাখতে হবে।
রক্ত ও বর্জ্য দ্রুত সরিয়ে ফেলা
কোরবানির সঙ্গে সঙ্গে জমে থাকা রক্ত, হাড়, চামড়া ও অবশিষ্টাংশ জমিয়ে না রেখে দ্রুত সরিয়ে ফেলতে হবে। ইসলামি আদব অনুযায়ী, রক্ত ঢালাওভাবে রাস্তায় ছড়িয়ে পড়া উচিত নয়। বরং মাটিতে গর্ত করে সেখানে রক্ত ও অবশিষ্টাংশ ফেলে মাটি দিয়ে ঢেকে দিন।
পানি ও জীবাণুনাশক ব্যবহার
কোরবানির জায়গাটি ভালোভাবে পানিতে ধুয়ে ফেলুন এবং ব্লিচ বা জীবাণুনাশক (ডেটল/সাভলন) দিয়ে পরিষ্কার করুন। এতে দুর্গন্ধ কমে, মাছি ও কীটপতঙ্গ আসা বন্ধ হয় এবং আশপাশের পরিবেশ সংক্রমণমুক্ত থাকে।
চামড়া ও বর্জ্য যথাযথ স্থানে হস্তান্তর
যেসব চামড়া বিক্রি করবেন বা দান করবেন, সেগুলো দ্রুত সংরক্ষণ করুন এবং নির্ধারিত সংস্থায় হস্তান্তর করুন। বর্জ্য যদি নিজ দায়িত্বে সরানো সম্ভব না হয়, তাহলে স্থানীয় পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশনের সহায়তা নিন।
প্রতিবেশী ও এলাকার সুরক্ষা
কোরবানির পর বাড়ির সামনে বা রাস্তায় বর্জ্য ফেলে দেওয়া ইসলামি আদবের পরিপন্থি। এতে প্রতিবেশীরা কষ্ট পেতে পারেন। রাস্তা, ড্রেন বা আশপাশের পরিবেশ অপরিচ্ছন্ন রাখা গুনাহের কাজ হিসেবেও বিবেচিত হতে পারে। তাই সবাইকে কষ্ট না দিয়ে পরিবেশবান্ধবভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে।
কোরবানি আমাদের জন্য ত্যাগের শিক্ষা দেয়, আর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা আমাদের ঈমানের অঙ্গ। তাই কোরবানির পর বর্জ্য সরানো, জায়গা পরিষ্কার করা, জীবাণুনাশক ব্যবহার করা এবং পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখা ইসলামি দায়িত্ব ও সামাজিক সচেতনতার প্রতিফলন।
আপনার মতামত লিখুন :