প্রাকৃতিক ও ঘরোয়া স্বাস্থ্য টোটকার মধ্যে গরম পানির সঙ্গে আদা খাওয়া অন্যতম। আদার ঝাঁজালো স্বাদ ও উপাদান যেমন জিঞ্জারল প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং প্রদাহনাশক হিসেবে কাজ করে। অন্যদিকে, গরম পানি শরীরের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়, হজম উন্নত করে এবং বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়। এই দুই উপাদানের সম্মিলনে প্রতিদিন সকালে এক কাপ গরম পানির সঙ্গে আদা পান করলে শরীর ও মন দুইই সতেজ থাকে।
জেনে নিন গরম পানির সঙ্গে আদা খাওয়ার বিস্ময়কর উপকারিতা-
(ক) হজম শক্তি উন্নত করে
গরম পানির সঙ্গে আদা খেলে হজম শক্তি বাড়ে। এটি পাচক রস নিঃসরণ বাড়ায়, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমায় এবং খাবার দ্রুত হজমে সহায়তা করে। যাদের প্রায়ই পেটে ভারি ভাব বা বদহজম হয়, তাদের জন্য এটি অত্যন্ত কার্যকর।
(খ) সর্দি-কাশি ও গলা ব্যথার উপশম করে
আদার অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান ঠান্ডাজনিত সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। গরম পানির সঙ্গে আদা পান করলে গলা নরম হয়, কাশি কমে এবং গলা ব্যথা দূর হয়। শীতকালে এটি বিশেষভাবে উপকারী।
(গ) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
গরম পানি এবং আদার মিশ্রণ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে তোলে। নিয়মিত খেলে সর্দি-জ্বর, সংক্রমণসহ বিভিন্ন ঋতু পরিবর্তনের রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা তৈরি হয়।
(ঘ) শরীর গরম রাখে ও রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়
শীতকালে শরীরকে গরম রাখতে গরম পানির সঙ্গে আদা অত্যন্ত কার্যকর। এটি রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং শীতজনিত জড়তা দূর করে।
(ঙ) ওজন কমাতে সহায়ক
আদার উপাদান বিপাকক্রিয়া বাড়ায়, ফলে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে। যারা ওজন কমাতে চান, তাদের জন্য সকালে খালি পেটে এক কাপ গরম পানির সঙ্গে আদা খুব ভালো ফল দেয়।
(চ) প্রদাহ কমায় ও গাঁটের ব্যথায় উপকার
আদার প্রদাহনাশক গুণাবলী গাঁটের ব্যথা, বাতের ব্যথা এবং পেশির জড়তা কমাতে সহায়ক। গরম পানির তাপও এতে বাড়তি উপকার দেয়।
(ছ) বমিভাব বা মর্নিং সিকনেস কমায়
আদা বহু বছর ধরেই প্রাকৃতিকভাবে বমিভাব বা মর্নিং সিকনেস দূর করতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। গরম পানির সঙ্গে আদা পান করলে বমিভাব দ্রুত কমে যায়।
(জ) মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমাতে সহায়ক
গরম পানির সঙ্গে আদা খেলে শরীর শিথিল হয় এবং মানসিক চাপ কমে। এটি এক ধরনের প্রাকৃতিক রিলাক্সিং ড্রিঙ্ক হিসেবেও কাজ করে।
কখন ও কীভাবে খাওয়া উচিত
১. সকালে খালি পেটে এক কাপ গরম পানির সঙ্গে এক টুকরো আদা কুচি বা আদার রস মিশিয়ে পান করলে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়।
২. দিনে ১-২ বার খাওয়া যেতে পারে, বিশেষ করে ঠান্ডার দিনে বা শরীর দুর্বল লাগলে।
৩. চাইলে সামান্য মধু মিশিয়েও পান করা যায়, এতে স্বাদ বাড়ে এবং আরও উপকারী হয়।