বিউটি রুটিন এখন আর একরকম নয়। বেছে নেওয়ার মতো বিকল্পের অভাব নেই। তবে কোনটা কার্যকর হবে, তা নির্ভর করে ত্বকের ধরন ও প্রোডাক্টের টেক্সচারের ওপর।
সৌন্দর্যচর্চার একদম গোড়ার প্রশ্ন—কী দিয়ে মুখ ধোয়া হবে? এখন বাজারে ক্লিনজিং অয়েল, বাম, মাইসেলার ওয়াটারসহ হরেক রকম ক্লিনজার পাওয়া যায়। এর মধ্যে কোনটি কার ত্বকের জন্য বেশি উপযোগী, সেটা বোঝার জন্য চাই সচেতনতা ও প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ।
ক্লিনজিং অয়েল সাধারণত গ্রেপ সিড, সানফ্লাওয়ার বা রাইস ব্রান অয়েল দিয়ে তৈরি হয়, যা ত্বকের গভীর থেকে ময়লা দূর করে এবং পুষ্টিও জোগায়। যদি এটি নন-কমেডোজেনিক হয়, তাহলে তা ব্রণ সৃষ্টি না করে ত্বককে স্নিগ্ধ রাখে। মেকআপ, ওয়াটারপ্রুফ সানস্ক্রিন এবং অতিরিক্ত সিবাম তুলতে এটি বেশ কার্যকর।
তবে ব্যবহারের পর অবশ্যই ওয়াটার-বেসড ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নেওয়া দরকার, যাতে তেলজাতীয় অবশিষ্ট কিছু না থাকে। এটি সাধারণ, শুষ্ক, তৈলাক্ত ও কম্বিনেশন ত্বকের জন্য উপযোগী, বিশেষত সন্ধ্যার সময় ব্যবহারে দিনের ধুলাবালি ও সানস্ক্রিন সহজেই উঠে যায়।
অন্যদিকে ক্লিনজিং বাম হয় ঘন ও সলিড টেক্সচারের। মুখে মাসাজ করলে এটি তাপে গলে গিয়ে অয়েলে পরিণত হয় এবং ত্বকের ওপরের স্তর থেকে মেকআপ ও ময়লা গলিয়ে তুলে আনে। এতে থাকে শিয়া বাটার, এসেনশিয়াল অয়েল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান, যা ত্বক পরিষ্কারের পাশাপাশি পুষ্টিও জোগায়। পুরু ঘনত্বের কারণে এটি শুষ্ক, পরিণত বা পানিশূন্য ত্বকে খুব ভালো কাজ করে। বাম সাধারণত রাতে ব্যবহারের জন্য আদর্শ।
মাইসেলার ওয়াটার দেখতে পানির মতো হলেও এতে থাকে মাইসেল নামক অণু, যা ত্বকের তেল ও ময়লা টেনে নেয়। পানি ছাড়া ব্যবহার করা যায় বলে এটি ভীষণ ট্রাভেল-ফ্রেন্ডলি। তুলার প্যাডে নিয়ে সরাসরি মুখ মুছে ফেললেই চলে। বিশেষ করে সংবেদনশীল, ব্রণপ্রবণ বা মেকআপ কম ব্যবহারকারীদের জন্য এটি উপযোগী।
তবে ভারী মেকআপ তুলতে একাধিকবার ব্যবহার করতে হতে পারে। এটি সকালে, ভ্রমণের সময় বা ক্লান্ত রাতে দ্রুত মুখ পরিষ্কারে ভালো কাজ করে।
তিন ধরনের এই ক্লিনজারের মূল পার্থক্য তাদের টেক্সচার ও ব্যবহার পদ্ধতিতে। বাম সাধারণত টাবজাত সলিড ফর্মে আসে, যা ট্রাভেলেও ব্যবহার উপযোগী। ব্যবহার করতে হয় স্প্যাচুলা দিয়ে তুলে, মুখে মাসাজ করে। অয়েল আসে পাম্প বোতলে, সরাসরি মুখে ব্যবহার করা যায়। আর মাইসেলার ওয়াটার একেবারেই হালকা এবং মুখ ধোয়ার প্রয়োজন হয় না।
যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা ডারমাটোলজিস্ট ড. জোডি লোজারফো বলছেন, এই তিনটি প্রোডাক্টই কার্যকর, তবে সেগুলোর ব্যবহারভেদ রয়েছে। অয়েল গলিয়ে তোলে মেকআপ, রক্ষা করে ত্বকের প্রাকৃতিক ব্যারিয়ার। বাম দেয় ‘স্পা-লাইক’ অভিজ্ঞতা ও গভীর পরিচর্যা। আর মাইসেলার ওয়াটার—সহজ, হালকা, বাজেট-ফ্রেন্ডলি এবং বিশেষ করে তৈলাক্ত বা সংবেদনশীল ত্বকে উপযোগী।
ত্বক যেমন একেক জনের একেক রকম, তেমনি একেক দিনে ত্বকের চাহিদাও বদলায়। তাই রুটিন এমনভাবে সাজানো উচিত, যাতে প্রয়োজন অনুযায়ী ক্লিনজার ব্যবহার করা যায়। যেমন- সন্ধ্যায় বা মেকআপের পর বাম বা অয়েল দিয়ে প্রথম ধাপ, এরপর ওয়াটার-বেসড ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধোয়া। অন্যদিকে, ত্বকে বেশি কিছু না থাকলে শুধু মাইসেলার ওয়াটার দিয়েই কাজ সারতে পারেন।
আপনার মতামত লিখুন :