সীমান্ত সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের মধ্যে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে উভয় দেশের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শনিবার স্কটল্যান্ডের নিজস্ব গলফ রিসোর্টে ব্যক্তিগত সফরের শুরুতে ট্রুথ সোশ্যাল-এ এক পোস্টে তিনি জানান, উভয় দেশ ‘তাৎক্ষণিকভাবে সাক্ষাৎ ও যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে দ্রুত শান্তি প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে’।
থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম উইচায়াচাই বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ‘মূল নীতিগত দিক থেকে থাই পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে’, তবে তিনি বলেন, ‘এই প্রক্রিয়ায় কম্বোডিয়ার আন্তরিকতা দেখতে চায় থাইল্যান্ড’।
ট্রাম্প জানান, তিনি কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত ও থাই নেতা ফুমথামের সঙ্গে কথা বলেছেন। যখন সবকিছু শেষ হবে এবং শান্তি আসবে, তখন যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন করবে।
ট্রাম্প আরও লেখেন, সংঘর্ষ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তিনি কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত রেখেছেন, যদিও তিনি শান্তি প্রতিষ্ঠার পর আলোচনা আবার শুরু করার আশা প্রকাশ করেছেন।
এই সংঘর্ষের মধ্যে ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ এমন এক সময়ে এলো, যখন আগামী ১ আগস্ট থেকে কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ড থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ৩৬ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা। যদি এর আগেই একটি চুক্তি না হয়, তাহলে শুল্ক কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।
তবে এখনো পরিষ্কার নয়, কীভাবে ট্রাম্প এই আলোচনায় যুক্ত হলেন। কারণ এর আগের দিনই থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিস সাঙ্গিয়ামপংসা বলেছিলেন, ‘আমরা এখনো তৃতীয় কোনো দেশের মধ্যস্থতার প্রয়োজন দেখি না।’
এর আগে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম দুই দেশের মধ্যে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। শনিবার সকালে কম্বোডিয়াও আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধানের অনুরোধ জানায়।
উল্লেখ্য, দুই দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে সংঘর্ষ শুরুর অভিযোগ তুলেছে। থাইল্যান্ডের দাবি, কম্বোডিয়ার সামরিক বাহিনী সীমান্তে ড্রোন দিয়ে নজরদারি চালানোর মাধ্যমে উত্তেজনা শুরু করে। অপরদিকে, কম্বোডিয়া অভিযোগ করেছে, থাই সেনারা পূর্ববর্তী একটি চুক্তি লঙ্ঘন করে এক খেমার-হিন্দু মন্দিরের দিকে অগ্রসর হয়।
২৪ জুলাই শুরু হওয়া এই সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৩ জন সৈনিক ও বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছে এবং হাজার হাজার থাই ও কম্বোডিয়ান নাগরিক এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
আপনার মতামত লিখুন :