বর্তমান প্রজন্মের কাছে জিন্স ছাড়া ফ্যাশন অসম্পূর্ণ। অনেকের আঁটসাঁট জিন্স পরার অভ্যাস রয়েছে। কিন্তু এমন জিন্স কি আদৌ পরিধান করা উচিত? যারা নিয়মিত আঁটসাঁট জিন্স বা ট্রাউজার পরেন এবং ঘণ্টার পর ঘণ্টা একটানা বসে কাজ করেন, তাদের নিতম্বের পেশিতে টান ধরার বা যন্ত্রণা হওয়ার প্রবণতা বেশি।
ভারতের অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. প্রবীরকুমার দত্ত জানিয়েছেন, নিতম্বের সবচেয়ে বড় পেশি ‘গ্লুটিয়াস ম্যাক্সিমাস’ দুর্বল হয়ে পড়লে ব্যথা শুরু হয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানে একে ‘অ্যাভাস্কুলার নেক্রোসিস’ বলা হয়, অর্থাৎ পেশিতে রক্ত সঞ্চালনের ব্যাঘাত। ফলে ধীরে ধীরে আর্থ্রাইটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
গ্লুটিয়াস ম্যাক্সিমাসের নিচে গ্লুটিয়াস মিডিয়াস ও গ্লুটিয়াস মিনিমাস নামের দুটি পেশি আছে, যেগুলো এক নির্দিষ্ট বিন্যাসে কাজ করে। পেশির এই বিন্যাস নষ্ট হলে নিতম্বে যন্ত্রণা বেড়ে যায় এবং অনেক সময় রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকিও থাকে। দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা, অতিরিক্ত আঁটসাঁট জিন্স পরা এবং স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ গ্রহণ করলে এই সমস্যা বাড়তে পারে।
কী করবেন?
* ননস্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ওষুধ ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
* গরম বা ঠান্ডা সেঁক দিলে সাময়িক আরাম মেলে।
* নিয়মিত স্ট্রেচিং এবং উপযুক্ত ব্যায়াম করলে পেশির টান কমে।
* বসার সময় সঠিক ভঙ্গি বজায় রাখা জরুরি, যাতে নিতম্বের উপর চাপ কম পড়ে।
* নিতম্বের হাড়ে চিড় ধরার ফলে ব্যথা হলে ‘আর্টিকুলার কার্টিলেজ রিপ্লেসমেন্ট’ অথবা ‘জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট’ করানো দরকার হতে পারে।
সুতরাং, বেশি আঁটসাঁট জিন্স পরা বা দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার অভ্যাস থাকলে একটু সতর্ক হওয়া জরুরি। শরীরের সংকেত বুঝে সময়মতো চিকিৎসা নিলে ব্যথা থেকে মুক্তি মিলবে, সুস্থ জীবন ফিরে পাবেন।