পার্বত্য জেলা রাঙামাটির ‘ঝুলন্ত সেতু’ দীর্ঘদিন ধরেই কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ডুবে রয়েছে। বর্ষার টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে চলতি বছরের ৩০ জুলাই থেকে সেতুটি পানির নিচে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা এখানে এসে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ হয়েছিল আশির দশকের গোড়ার দিকে, পার্বত্য জেলা শহরের তবলছড়ি এলাকায় দুই পাহাড়ের সংযোগ ঘটিয়ে কাপ্তাই হ্রদের ওপর। দীর্ঘ চার দশকের বেশি সময় সেতুটি এখানকার এক গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন আকর্ষণ হিসেবে বিবেচিত হলেও বর্তমানে তা পানির নিচে ডুবে আছে।
পর্যটকরা আগ্রহ নিয়ে এখানে আসেন, সেতুর ওপর হাঁটতে চান, সেলফি-ভিডিও ধারণ করেন। তবে বর্ষাকালে সেতুটির এই অবস্থা তাদের প্রত্যাশার ব্যাঘাত ঘটায়।
রাজশাহী থেকে আসা মাসুদ রানা বলেন, ‘পরিবার নিয়ে এসে দেখি টিভি ও পত্রিকায় যেটা দেখেছি, সেতুটি পানির নিচে ডুবে আছে। সবাই হাঁটার ইচ্ছা পোষণ করেছিল, কিন্তু হতাশ হলাম।’
রাঙামাটি পর্যটন ঘাটের ম্যানেজার ফখরুল আলম বলেন, ‘কাপ্তাই হ্রদের ড্রেজিং না হওয়ায় বর্ষায় সেতু পানির নিচে চলে যায়। পর্যটকরা হতাশ হয়ে ফিরছেন, বোট ব্যবসাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সেতু সংস্কার করা গেলে পর্যটক সারা বছর আসতে পারবেন।’
পর্যটন করপোরেশনের ম্যানেজার আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, ‘আমরা পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডকে আধুনিক নতুন ঝুলন্ত সেতু নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছি। যদি কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নেয়, তাহলে নতুন সেতু নির্মাণ হবে এবং পর্যটকরা নতুন উদ্যমে এখানে আসবেন।’
ঝুলন্ত সেতু ডুবে যাওয়ার মূল কারণ হিসেবে রয়েছে কাপ্তাই হ্রদের তলদেশ ভরাট হওয়া। পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে সল্ট ও পলিমাটি জমে হ্রদের গভীরতা কমে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে ড্রেজিং নিয়ে আলোচনা থাকলেও এখন পর্যন্ত তা কার্যকর হয়নি। রাঙামাটি জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সংস্কারের দাবি উঠলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।
পর্যটকেরা আশা করেন, শীঘ্রই ঝুলন্ত সেতু সংস্কার বা পুনর্নির্মাণ করা হবে, যাতে রাঙামাটির অন্যতম পর্যটন আকর্ষণটি স্বাভাবিক রূপে ফিরতে পারে এবং পর্যটন ক্ষেত্র সচল থাকে।