রবিবার, ১০ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ১০, ২০২৫, ০৭:১৭ পিএম

কী পরিমাণ ভিটামিন ই শরীরে প্রয়োজন?

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ১০, ২০২৫, ০৭:১৭ পিএম

কী পরিমাণ ভিটামিন ই শরীরে প্রয়োজন। ছবি - সংগৃহীত

কী পরিমাণ ভিটামিন ই শরীরে প্রয়োজন। ছবি - সংগৃহীত

সুস্থ থাকার জন্য সুষম ও পুষ্টিকর খাবারের গুরুত্ব আমরা সবাই কমবেশি জানি। এসব খাবার আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরণের ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করে। আর এসব ভিটামিনের মধ্যে ভিটামিন ই অন্যতম। এটি একটি ফ্যাট-সোলিউবল (চর্বিতে দ্রবণীয়) ভিটামিন যা মূলত একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। ভিটামিন ই শরীরের কোষগুলোকে ফ্রি-র‌্যাডিক্যাল থেকে রক্ষা করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।

তবে শরীরে ভিটামিন ই এর ঘাটতি বা অতিরিক্ত উপস্থিতি—দুটিই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই সঠিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার জন্য শরীরে ভিটামিন ই এর সঠিক মাত্রা জানা জরুরি।

এই প্রতিবেদনে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে, কিভাবে শরীরে ভিটামিন ই এর পরিমাণ জানা যায়, কীভাবে রক্ত পরীক্ষা করা হয়, কোন কোন লক্ষণে ভিটামিন ই এর ঘাটতি বোঝা যায় এবং কীভাবে খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে ভিটামিন ই এর ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব।

ভিটামিন ই এর ভূমিকা ও গুরুত্ব

ভিটামিন ই শরীরের জন্য এক ধরনের “সুপার প্রোটেকশন শিল্ড” এর মতো কাজ করে। এটি কোষ ঝিল্লিকে (cell membrane) ক্ষতি থেকে রক্ষা করে, রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং বয়সজনিত ক্ষয়প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয়।

ভিটামিন ই এর প্রধান উপকারিতা:

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে: কোষের ক্ষতি রোধ করে এবং বার্ধক্য বিলম্বিত করে।
ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে: ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং চুলের রুক্ষতা কমায়।
ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করে: সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
হৃদযন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখে: খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে আনে।
চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে: বয়সজনিত চোখের সমস্যা প্রতিরোধ করে।

শরীরে ভিটামিন ই এর ঘাটতির কারণ

যদিও সুষম খাদ্য গ্রহণ করলে ভিটামিন ই এর ঘাটতি হওয়ার সম্ভাবনা কম, তবুও কিছু কারণে শরীরে এটির ঘাটতি দেখা দিতে পারে। যেমন:

পুষ্টির অভাবজনিত খাদ্যাভ্যাস – পর্যাপ্ত বাদাম, বীজ, সবুজ শাকসবজি না খাওয়া।
ফ্যাট শোষণজনিত সমস্যা – যেসব রোগে ফ্যাট শরীরে ঠিকভাবে শোষিত হয় না (যেমন সিস্টিক ফাইব্রোসিস)।
অকালপ্রসূত শিশু – নবজাতক ও অকালপ্রসূত শিশুদের শরীরে ভিটামিন ই এর মজুদ কম থাকতে পারে।
জেনেটিক সমস্যা – কিছু বিরল জেনেটিক সমস্যায় ভিটামিন ই শোষণে ব্যাঘাত ঘটে।

শরীরে ভিটামিন ই এর পরিমাণ জানার উপায়

১. রক্ত পরীক্ষা

শরীরে ভিটামিন ই এর সঠিক মাত্রা জানতে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উপায় হলো রক্ত পরীক্ষা।

কীভাবে পরীক্ষা হয়:

একজন স্বাস্থ্যকর্মী আপনার বাহুর শিরা থেকে রক্তের নমুনা নেবেন।
নমুনাটি ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হবে।
পরীক্ষায় রক্তে আলফা-টোসোফেরল (α-tocopherol) এর মাত্রা মাপা হয়, যা ভিটামিন ই এর প্রধান উপাদান।

স্বাভাবিক মাত্রা:

সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৫.৫–১৭ মিগ্রা/লিটার (mg/L) ভিটামিন ই স্বাভাবিক ধরা হয়।
কারা এই পরীক্ষা করাবে: যাদের শরীরে দুর্বলতা, দৃষ্টিশক্তির সমস্যা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া বা স্নায়বিক সমস্যা রয়েছে।

২. শারীরিক লক্ষণ পর্যবেক্ষণ

কিছু ক্ষেত্রে ভিটামিন ই এর ঘাটতি রক্ত পরীক্ষার আগেই শারীরিক লক্ষণ দিয়ে বোঝা যায়। যেমন:

  • মাংসপেশীর দুর্বলতা ও ব্যথা।
  • চোখে ঝাপসা দেখা বা দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া।
  • হাঁটা বা শরীরের ভারসাম্য রাখতে অসুবিধা।
  • ক্ষত সারতে দেরি হওয়া।
  • ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া।

৩. খাদ্যাভ্যাস মূল্যায়ন

যদি আপনার দৈনিক খাদ্যতালিকায় ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার খুবই কম থাকে, তবে ঘাটতির ঝুঁকি বেশি।

ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার:

বাদাম ও বীজ: কাঠবাদাম, সূর্যমুখী বীজ, হ্যাজেল নাট।
উদ্ভিজ্জ তেল: সূর্যমুখী তেল, অলিভ অয়েল, গমের তেল।
সবুজ শাকসবজি: পালং শাক, ব্রকলি।
অন্যান্য: অ্যাভোকাডো, মাছ।

৪. ডাক্তারের পরামর্শ

যদি আপনি মনে করেন আপনার শরীরে ভিটামিন ই এর অভাব বা অতিরিক্ততা রয়েছে, তাহলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চিকিৎসক প্রয়োজনীয় রক্ত পরীক্ষা করে নিশ্চিত করবেন এবং সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি জানাবেন।

ভিটামিন ই এর অভাবের প্রভাব

দীর্ঘমেয়াদে ভিটামিন ই এর ঘাটতি হলে:

  • স্নায়ু ক্ষতি হতে পারে।
  • পেশী দুর্বল হয়ে যেতে পারে।
  • হৃদযন্ত্রের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা মারাত্মকভাবে কমে যেতে পারে।

ভিটামিন ই এর অতিরিক্ততা ও সতর্কতা

যদিও ভিটামিন ই এর ঘাটতি ক্ষতিকর, তবে অতিরিক্ততা (Hypervitaminosis E) ও বিপজ্জনক হতে পারে। অতিরিক্ত ভিটামিন ই সাধারণত সাপ্লিমেন্টের মাধ্যমে হয়ে থাকে। এর ফলে:

  • রক্ত পাতলা হয়ে যেতে পারে।
  • অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
  • পেট ব্যথা, ডায়রিয়া ও মাথা ঘোরা হতে পারে।

কীভাবে ভিটামিন ই এর সঠিক ভারসাম্য রক্ষা করবেন?

প্রাকৃতিক খাবার থেকে গ্রহণ করুন – বাদাম, বীজ, সবুজ শাকসবজি।
প্রয়োজন হলে সাপ্লিমেন্ট নিন – তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নয়।
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন – বছরে অন্তত একবার ভিটামিনের মাত্রা চেক করুন।

ভিটামিন ই শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পুষ্টি উপাদান। এর অভাব বা অতিরিক্ততা—দুটিই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই সঠিক মাত্রা বজায় রাখা জরুরি। রক্ত পরীক্ষা, শারীরিক লক্ষণ এবং খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে আপনি শরীরে ভিটামিন ই এর অবস্থা জানতে পারেন। সবচেয়ে ভালো উপায় হলো চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সঠিক পরীক্ষা করানো এবং সুষম খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!