সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৫, ১২:০৭ এএম

মহাষষ্ঠীতে মহিষাসুরমর্দিনী  দেবী দুর্গাকে বরণ, আজ দুর্গোৎসবের মহাসপ্তমী

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৫, ১২:০৭ এএম

মহাষষ্ঠীতে মহিষাসুরমর্দিনী  দেবী দুর্গাকে বরণ, আজ দুর্গোৎসবের মহাসপ্তমী

মন্ডপে মন্ডপে চন্ডীপাঠ, ঢাকের বাদ্য, শঙ্খ ও উলুধ্বনির মাধ্যমে গতকাল রোববার মহাষষ্ঠীতে মহিষাসুরমর্দিনী দেবী দুর্গাকে বরণ করে নিয়েছেন ভক্তরা। ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবের সূচনা হয়েছে। আজ সোমবার মহাসপ্তমী পূজা। এদিন সকালে দেবী দুর্গার চক্ষুদান, নবপত্রিকা প্রবেশ, স্থাপন, সপ্তাদি কল্পারম্ভ ও সপ্তমীবিহিত পূজা হবে। 

সনাতনী শাস্ত্র অনুযায়ী, মহাসপ্তমীতে ষোড়শ উপাচারে দেবী দুর্গাকে পূজিত করা হবে। এ ছাড়া চক্ষুদানের পর ভক্তরা আসন, বস্ত্র, নৈবেদ্য, স্নানীয়, পুষ্পমাল্য, চন্দন, ধূপ ও দীপ দিয়ে দেবীকে পূজা করবেন। সকাল ৭টা ২৯ মিনিট ১৭ সেকেন্ডের মধ্যে দেবীর মহাসপ্তমী পূজা শেষ করতে হবে। আগামীকাল মঙ্গলবার মহাষ্টমী ও কুমারী পূজা। আগামী বৃহস্পতিবার প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসবের সমাপ্তি ঘটবে। 

সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, ত্রেতাযুগে ভগবান রাম তার স্ত্রী সীতাকে উদ্ধার করতে দেবী দুর্গার অকালবোধন করেন। ব্রহ্মার নির্দেশ অনুযায়ী দুর্গার সাহায্যে রাবণ বধ করে সীতাকে উদ্ধার করেন তিনি। দেবীর সেই আগমনের সময়ই দুর্গোৎসব। রাম শরৎকালে দেবীকে আহ্বান করেছিলেন বলে এ পূজা শারদীয় দুর্গাপূজা নামে পরিচিত। আর মর্ত্যলোকে আসতে দেবীর সেই ঘুম ভাঙানোকে বলা হয়, অকাল বোধন।

ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসবের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। ষষ্ঠী তিথিতে সকল ম-পে বিল্ববৃক্ষ বা বেলগাছের নিচে ঘট স্থাপন করে ষোড়শ উপাচারে দেবীর কল্পারম্ভ ও ষষ্ঠীবিহিত পূজা হয়েছে। এ সময় ভক্তরা দেবী দুর্গার চরণে পুষ্পার্ঘ্য দিয়ে প্রার্থনা করেছেন অশুভ শক্তির বিনাশ ও শুভশক্তি প্রতিষ্ঠার। এরপর সায়ংকালে দেবীর বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে মূল পূজা শুরু হয়। সন্ধ্যায় ম-প ও মন্দিরে চ-ীপাঠের মাধ্যমে বোধনের মধ্য দিয়ে চলে দক্ষিণায়নে নিদ্রিত দেবীর নিদ্রা ভাঙার বন্দনা।

মহাষষ্ঠীর বিষয়ে রাজধানীর রমনা কালীমন্দিরের পুরোহিত হরিচাঁদ চক্রবর্তী জানান, সংকল্প ও আরম্ভÑ এ দুই মিলিয়ে হয় ‘কল্পারম্ভ’। এর মাধ্যমে দেবীর কাছে প্রতিজ্ঞা করা হয়, সমস্ত নিয়ম মেনেই তার পূজার্চনা করা হয়। এ সময় সারা বিশ্বে ‘অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটিয়ে শুভ শক্তি ও শান্তি প্রতিষ্ঠায়’ দুর্গার চরণে গন্ধ, পুষ্প, অর্ঘ্য ও বাদ্য দিয়ে প্রার্থনা করা হয়। তিনি বলেন, স্বামীর ঘর স্বর্গ ছেড়ে মর্ত্যে তার পিতৃগৃহে পদার্পণ করলেন দেবী। এ সফরে তার সঙ্গে আছেন চার সন্তান গণেশ, কার্তিক, লক্ষ্মী ও সরস্বতী এবং কার্তিকের কলা বউ। ষষ্ঠীতে এই সময়টায় দেবী বেলগাছের তলায় ঘুমিয়ে থাকেন। বোধনের মধ্য দিয়ে দেবীর ঘুম ভাঙানো হয়। প্রতিবছরের মতো এবারও সকাল সাতটায় ষষ্ঠী পূজা শুরু ও সকাল ৯টার দিকে শেষ হয়েছে বলে জানান তিনি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মন্ডপে মন্ডপে বেজে উঠেছে ঢাক ও কাঁসর। ফুল, ধূপ ও আগরবাতির সৌরভ ছড়িয়ে পড়েছে চারদিকে। বাহারি আলোকসজ্জায় আজ থেকে উজ্জ্বল হবে দেবী দুর্গা ও তার চার সন্তান সরস্বতী, লক্ষ্মী, কার্তিক-গণেশ। ঢাকেশ্বরী মন্দিরে ভোর থেকেই পূজার আয়োজনের ব্যস্ততা দেখা যায়। দেবীর আরাধনায় ভক্তরা ভিড় করেন সেখানে। দুর্গাপূজাকে ঘিরে এরই মধ্যে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থাগ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি মন্ডপে  পুলিশ, আনসার-ভিডিপির পাশাপাশি কোথাও কোথাও নিযুক্ত করা হয় র‌্যাব-বিজিবি ও সেনা সদস্যদের। সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সদস্যরা ছিল সতর্ক পাহারা। অনেক মন্ডপে  আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টরে কড়া তল্লাশির মধ্য দিয়ে দর্শনার্থীদের প্রবেশ করতে দেখা গেছে। এ ছাড়া প্রত্যেকটি পূজামন্ডপে নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবকদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।

আজ মহাসপ্তমী

আজ সোমবার মহাসপ্তমী পূজা। এ দিন সকালে নবপত্রিকা স্থাপন করা হবে। ‘নবপত্রিকা’ শব্দটির আক্ষরিক অর্থ ৯টি গাছের পাতা। কদলী বা রম্ভা (কলা), কচু, হরিদ্রা (হলুদ), জয়ন্তী, বিল্ব (বেল), দাড়িম্ব (বেদানা), অশোক, মান ও ধানÑ এই ৯টি উদ্ভিদকে পাতাসহ একটি কলাগাছের সঙ্গে একত্র করা হয়। পরে একজোড়া বেলসহ শ্বেত অপরাজিতা লতা দিয়ে বেঁধে লালপাড় সাদা শাড়ি জড়িয়ে ঘোমটা দেওয়া বধূর আকার দেওয়া হয়। তারপর তাতে সিঁদুর দিয়ে সপরিবার দেবীপ্রতিমার ডান দিকে দাঁড় করিয়ে পূজা করা হয়। প্রচলিত ভাষায় নবপত্রিকার নাম ‘কলাবউ’। নবপত্রিকার ৯টি উদ্ভিদ প্রকৃতপক্ষে দেবী দুর্গার ৯টি বিশেষ রূপের প্রতীকরূপে বিবেচনা করা হয়। নবপত্রিকা প্রবেশের পর দর্পণে দেবীকে মহাস্নান করানো হয়। দুর্গাপ্রতিমার সামনে একটি দর্পণ বা আয়না রেখে সেই দর্পণে প্রতিফলিত প্রতিমার প্রতিবিম্বে বিভিন্ন উপচারে দেবীকে স্নান করানো হয়।


 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!