ধান চাষ করে তাক লাগালেন মহাকাশচারীরা। সম্প্রতি ইন্টারেস্টিং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিয়াংগং মহাকাশ স্টেশনে সফলভাবে ধানের চারা উৎপাদন করেছেন চীনের মহাকাশচারীরা। এর মাধ্যমে মহাকাশ গবেষণায় আরও একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হলো।
মহাকাশে ধান চাষের পরীক্ষা আগেও চালানো হলেও এবারই প্রথম তিয়াংগং মহাকাশ স্টেশনে উদ্ভিদের সম্পূর্ণ জীবনচক্র সম্পন্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে এবং এতে সফলতাও মিলেছে।
গবেষণাটি ধানের বীজ রোপণের মাধ্যমে শুরু হয় এবং পর্যায়ক্রমে গাছের পরিপক্ব বৃদ্ধি ও নতুন বীজ উৎপাদনের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘ সময় ধরে মহাকাশে টিকে থাকার জন্য মহাকাশচারীদের খাদ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করতে এটি একটি নতুন দিগন্তের উন্মোচন করেছে। এর আগে ধান চাষের কিছু পরীক্ষা মহাকাশে পরিচালিত হলেও এই প্রথমবার তিয়াংগং মহাকাশ স্টেশনে উদ্ভিদের সমগ্র জীবনচক্র সম্পন্ন করার প্রচেষ্টা করা হয়েছে এবং এতে সফলতাও এসেছে।
গবেষণাটি ধানের বীজ রোপণের মাধ্যমে শুরু হয় এবং ধান গাছ পরিপক্বকভাবে বেড়ে উঠে নতুন বীজ উৎপাদনের মাধ্যমে শেষ হয়।
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আএসএস) দীর্ঘদিন ধরে পরীক্ষামূলকভাবে বিভিন্ন সবজি চাষ করছে, যেখানে লেটুস পাতা, মুলা ও কাঁচা মরিচসহ একাধিক সবজির সফল চাষ করা হয়েছে।
দীর্ঘ সময় ধরে মহাকাশে টিকে থাকার জন্য মহাকাশচারীদের খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে এটি একটি বড় সাফল্য।
ভবিষ্যতে চাঁদে বসবাসকারী প্রজন্মকে খাদ্য উৎপাদনে সক্ষম করার লক্ষ্যে ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা (ইএসএ) একটি বিশেষ প্রকল্প হাতে নিয়েছে, যা পরিচালনা করছে নরওয়েজিয়ান সংস্থা ‘সলসিস মাইনিং’।
গবেষকরা চাঁদের মাটি- যা রেগোলিথ নামে পরিচিত। তা থেকে সার উৎপাদনের উপায় খুঁজে বের করার জন্য কাজ করছেন। যান্ত্রিক, রাসায়নিক ও জৈবিক প্রক্রিয়ার এক অনন্য সমন্বয়ে এই সার উৎপাদন করা হবে।
গবেষণায় দেখা গেছে, চাঁদের মাটিতে নাইট্রোজেন যৌগসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ বিদ্যমান। তবে পানি যোগ করলে এটি সংকুচিত হয়ে যায়, যা গাছের শিকড় বৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করে।
ইএসএ জানিয়েছে, হাইড্রোপনিক কৃষিকাজ চাঁদে খাদ্য উৎপাদনের জন্য একটি বাস্তবসম্মত বিকল্প হতে পারে। এই প্রযুক্তিতে মাটির প্রয়োজন হয় না, বরং গাছের শিকড় সরাসরি পুষ্টি সমৃদ্ধ পানি থেকে প্রয়োজনীয় উপাদান গ্রহণ করতে পারে।
‘বেনিফিশিয়েটেড রেগোলিথ থেকে সার উৎপাদন করে লুনার ইন-সিটু এগ্রিকালচার সক্ষম করা’ প্রকল্পের আওতায় নরওয়ের জিওটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট এবং সেন্টার ফর ইন্টারডিসিপ্লিনারি রিসার্চ ইন স্পেস চাঁদে কৃষিকাজের সম্ভাবনা নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে। তারা রেগোলিথ থেকে খনিজ পুষ্টি আহরণের জন্য বিভিন্ন প্রক্রিয়ার সংমিশ্রণের চেষ্টা করছেন।
ভবিষ্যতের জন্য নতুন দিগন্ত এই গবেষণার মাধ্যমে চাঁদে কৃষিকাজের একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। সহজলভ্য চন্দ্র উপাদান ব্যবহার করে খাদ্য উৎপাদনের মাধ্যমে ভবিষ্যতে পৃথিবী থেকে চাঁদে খাদ্য পরিবহনের খরচ ও ঝুঁকি কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
এ বিষয়ে ইএসএ উপকরণ ও প্রক্রিয়া প্রকৌশলী মালগোরজাটা হলিনস্কা বলেন, চাঁদে একটি টেকসই উপস্থিতি অর্জনের জন্য স্থানীয় সম্পদের ব্যবহার অপরিহার্য। চন্দ্র রেগোলিথে উপস্থিত পুষ্টি ব্যবহার করে উদ্ভিদ চাষের সম্ভাবনা রয়েছে।
সলসিস মাইনিং টিম প্রকল্পের সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদী এবং ইতোমধ্যে সিমুলেটেড লুনার হাইল্যান্ড রেগোলিথ ব্যবহার করে শিম চাষের পরীক্ষামূলক উদ্যোগ নিয়েছে। এই সাফল্য ভবিষ্যতে চাঁদে মানুষের দীর্ঘমেয়াদী বসবাসের সম্ভাবনাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।

 
                             
                                     সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন