আজকের দিনে মোবাইল ফোন আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু অনেকেই না বুঝেই ফোনে গুচ্ছ গুচ্ছ অ্যাপ ইনস্টল করে ফেলেন। গুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপল অ্যাপ স্টোরে পাওয়া গেলেই যে অ্যাপটি নিরাপদ- তা কিন্তু নয়। কোনটি প্রয়োজনীয়, আর কোনটি হতে পারে বিপদের কারণ- তা বুঝে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
সম্প্রতি এমন কিছু অ্যাপের তালিকা প্রকাশ হয়েছে, যেগুলো দ্রুত ফোন থেকে রিমুভ করার জন্য ব্যবহারকারীদের সতর্ক করা হয়েছে। কারণ এই অ্যাপগুলো হ্যাকারদের হাতে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য তুলে দিতে পারে এবং আপনার ডিভাইসের নিয়ন্ত্রণও হারানোর ঝুঁকি থাকে।
ছদ্মবেশী অ্যাপ
অনেক ভুয়া অ্যাপ এখন নেট দুনিয়ায় ঘুরছে, যেগুলো দেখতে হুবহু আসল অ্যাপের মতো। এক ঝলকে বোঝার উপায় নেই, এগুলো আসল না নকল। আর এই অ্যাপগুলোর মাধ্যমেই ছড়ানো হচ্ছে ক্ষতিকর ম্যালওয়্যার।
একবার ইনস্টল করলেই হ্যাকাররা আপনার ফোন বা ডিভাইসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতে পারে। শুধু তাই নয়, আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, ব্যক্তিগত তথ্য, এমনকি ক্যামেরা বা মাইক্রোফোনও তাদের কব্জায় চলে যেতে পারে। ফলে গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা- দুই’ই হুমকির মুখে পড়ে।
কোন কোন অ্যাপ বিপজ্জনক?
১.সেক্স ক্র্যাপ্তকাররেন্সি অ্যাপ
এই অ্যাপটি এখন পর্যন্ত গুগল প্লে স্টোর থেকে অন্তত ১০ হাজার বার ডাউনলোড হয়েছে। যদিও এটি দেখতে একটি সাধারণ ক্রিপ্টো অ্যাপের মতো, কিন্তু বাস্তবে এটি একটি ম্যালওয়্যার।
সাইবার বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এটি ব্যবহারকারীদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলার জন্য তৈরি।
২. টিকটক ক্লোন অ্যাপ
এটি আসল টিকটক নয়, এর নকল সংস্করণ! অনেকেই না বুঝে এটি ইনস্টল করে ফেলেছেন। এই অ্যাপটি আপনার ব্যাঙ্ক ও অনলাইন লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য হ্যাক করে ফেলতে পারে বলে সতর্ক করেছেন সাইবার নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ।
৩. হোয়াটসঅ্যাপ স্টিকার মেকার ও আর্ট ফিল্টার
এই দুই অ্যাপও বিপজ্জনক। এগুলোর মাধ্যমে আপনার ফোনের ব্যক্তিগত ছবি, ভিডিও, লোকেশন বা কনট্যাক্ট লিস্ট চুরি হয়ে যেতে পারে। এরই মধ্যে এই অ্যাপগুলোতে ম্যালওয়্যারের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে।
৪. জিপিএস লোকেশন ফাইন্ডার, আর্ট গার্লস ওয়ালপেপার এইচডি, স্মার্ট কিউআর ক্রিয়েটর
এই অ্যাপগুলোও ভীষণভাবে সন্দেহজনক এবং বিপজ্জনক। এগুলোর মাধ্যমে ফোনে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করে আপনার উপর নজরদারি চালানো হতে পারে।
কীভাবে বুঝবেন কোন অ্যাপ নিরাপদ, আর কোনটি নয়?
নতুন কোনো অ্যাপ ইনস্টল করার আগে নিচের বিষয়গুলো খেয়াল রাখুন...
১) ডেভেলপার কে? বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান কি না দেখে নিন।
২) ইউজার রেটিং ও রিভিউ পড়ুন- অনেক সময় ব্যবহারকারীর মন্তব্যেই ফাঁস হয়ে যায় অ্যাপটির প্রকৃতি।
৩) ডাউনলোড সংখ্যা যাচাই করুন- একটি ভালো অ্যাপের ডাউনলোড সাধারণত বেশি হয়।
৪) অ্যাপটি যদি অতিরিক্ত অনুমতি (অডিয়ো, ভিডিও, ক্যামেরা, লোকেশন ইত্যাদি) চায়, তাহলে সতর্ক হোন।
৫) আপত্তিকর লিঙ্ক বা কনটেন্ট থাকলে সেই অ্যাপ এড়িয়ে চলুন।
আপনার মতামত লিখুন :