ইউটিউব ভিডিওতে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বা সাউন্ড ইফেক্ট ব্যবহার এখন অনেকটাই স্বাভাবিক ও প্রয়োজনীয় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে ভুলভাবে সংগীত ব্যবহারের কারণে কপিরাইট ক্লেইমের মুখে পড়তে হয় অনেক কনটেন্ট নির্মাতাকে। কপিরাইট ক্লেইম আসলে ভিডিওর আয় বন্ধ হয়ে যেতে পারে বা ভিডিওটি ইউটিউব থেকে মুছে ফেলা হতে পারে। তাই আগে থেকে সচেতন থাকাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।
১. কপিরাইট ফ্রি বা ফ্রি লাইসেন্সের মিউজিক ব্যবহার করুন
কোনো সংগীত যদি কপিরাইট মুক্ত হয়, তাহলে সেটি ব্যবহার করলেও কোনো সমস্যা হয় না। ইউটিউবের নিজস্ব অডিও লাইব্রেরিতে রয়েছে হাজারো গান ও সাউন্ড ইফেক্ট, যেগুলো বিনামূল্যে এবং নিরাপদভাবে ব্যবহার করা যায়। এসব গান ব্যবহারে ইউটিউব কখনো কপিরাইট ক্লেইম করে না।
২. ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সের মিউজিক ব্যবহার
অনেক মিউজিক নির্মাতা তাদের তৈরি গান ‘ক্রিয়েটিভ কমন্স’ লাইসেন্সে উন্মুক্ত করে দেন, যাতে অন্যরাও তা ব্যবহার করতে পারে। তবে এখানে কিছু শর্ত থাকে- যেমন, গানটির স্রষ্টাকে অবশ্যই কৃতজ্ঞতা স্বরূপ নাম বা সোর্স উল্লেখ করতে হবে এবং অনেক ক্ষেত্রে তা বাণিজ্যিক ভিডিওতে ব্যবহার নিষেধ থাকে। তাই এসব গান ব্যবহারের আগে অবশ্যই শর্তগুলো পড়ে নিন।
৩. লাইসেন্স কিনে মিউজিক ব্যবহার
যদি আপনার ভিডিও বানানো নিয়মিত কাজ হয় এবং আপনি পেশাদার মানের গান ব্যবহার করতে চান, তাহলে বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে নির্দিষ্ট টাকা দিয়ে মিউজিক লাইসেন্স কিনে নিতে পারেন। এতে করে আপনার ভিডিওর মান যেমন বাড়বে, তেমনি কপিরাইট ঝুঁকিও থাকবে না। কয়েকটি জনপ্রিয় মিউজিক লাইসেন্স ওয়েবসাইট হলো- Artlist, Epidemic Sound, AudioJungle ইত্যাদি।
৪. নিজের তৈরি গান বা সাউন্ড ব্যবহার করুন
আপনি যদি নিজেই মিউজিক তৈরি করতে পারেন, তাহলে সেটি সবচেয়ে নিরাপদ ও ইউনিক উপায়। এতে কপিরাইটের কোনো ঝামেলা থাকবে না এবং আপনি পুরোপুরি মালিক থাকবেন আপনার মিউজিকের।
৫. অনুমতি নিয়ে গান ব্যবহার করুন
কোনো জনপ্রিয় গান বা অডিও যদি ব্যবহার করতে চান, তাহলে অবশ্যই আগে গানটির মালিক বা প্রকাশকের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নিয়ে নিন। অনেক সময় নির্দিষ্ট শর্তে তারা অনুমতি দিয়ে থাকে, বিশেষ করে যদি গানটির মাধ্যমে আপনি কোনো আয় না করেন।
৬. মিউজিকের উৎস বা কৃতজ্ঞতা উল্লেখ করুন
যেসব মিউজিক ফ্রি হলেও ক্রেডিট দেওয়া বাধ্যতামূলক, সেখানে ভিডিওর নিচে ডিসক্রিপশনে গানটির নাম, শিল্পীর নাম ও উৎস লিংক যুক্ত করুন। এতে কপিরাইট মালিক সন্তুষ্ট থাকেন এবং ক্লেইম করার সম্ভাবনা থাকে না।
ইউটিউবের অডিও লাইব্রেরি থেকে কিভাবে মিউজিক সংগ্রহ করবেন?
১. প্রথমে ইউটিউব স্টুডিও ওয়েবসাইটে যান এবং আপনার গুগল অ্যাকাউন্ট দিয়ে লগইন করুন।
২. বাঁ পাশের মেনুতে ‘অডিও লাইব্রেরি’ নামের অপশনটিতে ক্লিক করুন।
৩. এখানে ‘মিউজিক’ এবং ‘সাউন্ড ইফেক্টস’– দুই ধরনের অডিও পাবেন।
৪. আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী ঘরানাভিত্তিক বা অনুভূতিনির্ভর মিউজিক খুঁজে নিতে পারেন।
৫. কোনো মিউজিক পছন্দ হলে তার পাশে থাকা ডাউনলোড বোতামে ক্লিক করে ডিভাইসে সেভ করুন।
৬. এরপর সেই অডিও আপনি আপনার ভিডিওতে ব্যবহার করতে পারবেন সম্পূর্ণ নিশ্চিন্তে।
আপনার মতামত লিখুন :