মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২৫, ১০:৪৬ এএম

মোবাইলে সর্বত্র নেটওয়ার্ক সংযোগ দেবে স্টারলিংকের ডাইরেক্ট-টু-সেল

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২৫, ১০:৪৬ এএম

স্টারলিংকের লোগো। ছবি- সংগৃহীত

স্টারলিংকের লোগো। ছবি- সংগৃহীত

মোবাইল ফোনে নিরবচ্ছিন্ন  ও নতুন যুগের ইন্টারনেট সেবা নিয়ে হাজির হচ্ছে ইলন মাস্কের স্টারলিংক। তাদের সেবার মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে নেটওয়ার্ক না থাকার ভোগান্তি দূর হবে। কোম্পানিটির ডাইরেক্ট-টু-সেল (ডি২সি) প্রযুক্তির মাধ্যমে চলন্ত অবস্থায় কিংবা একেবারে দুর্গম এলাকায় মোবাইল ফোনে নেটওয়ার্ক পাওয়া যাবে। এ জন্য কোনো রাউটার বা ওয়াইফাইয়ের প্রয়োজন নেই।

স্টারলিংকের ডাইরেক্ট-টু-সেল প্রযুক্তি কী?

ডাইরেক্ট-টু-সেল প্রযুক্তি হলো পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে ঘুরে থাকা স্পেসএক্সের স্যাটেলাইটগুলো থেকে সরাসরি মোবাইল ফোনে সিগন্যাল পাঠানোর এক আধুনিক প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তিতে কোনো মধ্যবর্তী রাউটার বা ওয়াইফাই ডিভাইসের প্রয়োজন হয় না। ফলে যেখানে মোবাইল টাওয়ার নেই, সেখানে থেকেও সহজেই নেটওয়ার্ক সংযোগ পাওয়া যায়।

এই প্রযুক্তি মোবাইল নেটওয়ার্কের ওপর নির্ভরশীলতার মাত্রা অনেকাংশে কমিয়ে দেয়, যা বিশেষ করে দুর্যোগ বা প্রত্যন্ত অঞ্চলের জন্য এক বিশাল দিকপাল।

কোন ফোনগুলোতে ব্যবহার করা যাবে?

স্পেসএক্স জানিয়েছে, বর্তমানে প্রায় ৬০টিরও বেশি মোবাইল মডেল এই সেবা সমর্থন করে। এর মধ্যে রয়েছে:

আইফোন ১৩ ও পরবর্তী মডেল, স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২১ ও পরবর্তী মডেল, গুগল পিক্সেল ৯। এছাড়াও অন্যান্য মডেলেও শিগগিরই এই সেবা চালু হওয়ার কথা রয়েছে।

স্টারলিংকের স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক কেমন?

স্টারলিংকের ডাইরেক্ট-টু-সেল সেবা চালাতে ব্যবহৃত হচ্ছে ৬৫০টির বেশি বিশেষায়িত স্যাটেলাইট, যা স্টারলিংকের বৃহৎ ৭ হাজার ৬০০টিরও বেশি উপগ্রহের নেটওয়ার্কের অংশ।

এই স্যাটেলাইটগুলোতে রয়েছে আধুনিক ‘ইনোডবি’মডেম ও ‘ফেজড-অ্যারে অ্যান্টেনা’ প্রযুক্তি, যা সরাসরি ৪জি এলটিই ফোনের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে সক্ষম।

স্পেসএক্স ফ্যালকন ৯ ও ভবিষ্যতে স্টারশিপ রকেটে এসব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করে থাকে। লেজার ব্যাকহল প্রযুক্তির মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী দ্রুত ও নির্ভরযোগ্য নেটওয়ার্ক সংযোগ নিশ্চিত হয়। পাশাপাশি স্যাটেলাইটের উচ্চগতির কারণে সৃষ্ট ‘ডপলার শিফট’ সমস্যা মোকাবিলা করা হয়।

কাজের পদ্ধতি ও প্রযুক্তিগত দিক

স্টারলিংকের স্যাটেলাইটগুলো পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার (প্রায় ২১৭ মাইল) উচ্চতায় সৌরশক্তিচালিত অবস্থায় কক্ষপথে ঘুরছে। এদেরকে বলা যেতে পারে ‘মহাকাশে মোবাইল টাওয়ার’।

মোবাইল ফোন থেকে পাঠানো সংকেত সরাসরি এই স্যাটেলাইটে পৌঁছায় এবং সেখান থেকে ইন্টারনেট বা কলের জন্য প্রয়োজনীয় ডেটা পুনরায় মোবাইল ফোনে প্রেরণ করা হয়।

এই প্রযুক্তির বিশেষ সুবিধা হলো, ভূমিকম্প, ঝড়, বন্যা বা অন্য কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে যখন স্থলভিত্তিক টাওয়ার নষ্ট হয়, তখনো মোবাইল সংযোগ সচল থাকবে।

বর্তমান সেবা ও ভবিষ্যতের পরিকল্পনা

এখনো এই প্রযুক্তিতে শুধু টেক্সট মেসেজিং এবং লোকেশন শেয়ারিং চালু আছে। তবে ২০২৫ সালের শেষ কিংবা ২০২৬ সালের শুরুতে ভয়েস কল, মোবাইল ডেটা এবং ইন্টারনেট অব থিংস সেবা চালু করার লক্ষ্য স্পেসএক্সের।

তবে এর জন্য স্থানীয় মোবাইল অপারেটরদের সাথে বিশেষ চুক্তি ও অনুমোদন প্রয়োজন হবে।

স্পেসএক্সের লক্ষ্য ১০ হাজারের বেশি স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পৃথিবীর প্রায় সর্বত্র নেটওয়ার্ক নিশ্চিত করা। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ লাখ বর্গমাইল এলাকা এই প্রযুক্তির মাধ্যমে নেটওয়ার্ক সমস্যা থেকে মুক্ত হয়েছে।

সুবিধা ও প্রভাব

দূরবর্তী অঞ্চলে সংযোগ: যেখানে টাওয়ার নেই, সেখানেও মোবাইলে সিগন্যাল পাওয়া যাবে।
দুর্যোগকালীন সেবা: ভূমিকম্প, বন্যা, ঝড়ের সময় জরুরি যোগাযোগ সচল থাকবে।
শিল্প ও কৃষিক্ষেত্রে: পরিবহন, কৃষি ও অন্যান্য শিল্পে ইন্টারনেট অব থিংস ব্যবহার সহজ হবে।
ব্যবহার সহজ: ফোনে অ্যাপ ডাউনলোড বা আকাশের দিকে তাক করার প্রয়োজন নেই।

সীমাবদ্ধতা ও চ্যালেঞ্জ

বর্তমানে শুধুমাত্র টেক্সট মেসেজিং সেবা চালু। ভয়েস কল ও ডেটা সেবা এখনো অপেক্ষমাণ।

স্যাটেলাইটের মধ্যে হ্যান্ডঅফ বা স্থানান্তরের কারণে মাঝে মাঝে দেরি হতে পারে।

মোবাইল সিগন্যালের তুলনায় বেশি ব্যাটারি খরচ হয়।

ঘন বন, পাহাড়, গভীর উপত্যকা বা সরকারের সীমাবদ্ধতার কারণে কিছু জায়গায় সেবা পাওয়া কঠিন হতে পারে।

ঘরের ভেতর বা গাছপালার ঘন ঘেরা এলাকায় সিগন্যাল ব্লক হতে পারে। তবে আকাশ দেখা যায় এমন স্থানে ভালো সংযোগ পাওয়া যায়।

স্টারলিংকের ডাইরেক্ট-টু-সেল প্রযুক্তির ভবিষ্যত

স্টারলিংকের এই প্রযুক্তি শুধু বিকল্প নেটওয়ার্ক নয়, এটি বিশেষ করে দুর্গম ও গ্রামীণ অঞ্চলে জীবন বাঁচানোর মতো গুরুত্ব বহন করে। যদিও এখনো এটি সম্পূর্ণ ৫জি প্রতিস্থাপন নয়, কিন্তু সংকটকালে মোবাইল যোগাযোগে ভরসাযোগ্য মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে।

বিশ্বজুড়ে দ্রুতগতিতে স্যাটেলাইট সংখ্যা বাড়ানোর মাধ্যমে এই প্রযুক্তির বিস্তার হবে, যা ডিজিটাল বিভাজন কমিয়ে এনে প্রত্যেক নাগরিকের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ বাড়াবে।

বিশ্বে ইন্টারনেটের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে, আর তার সঙ্গে বৃদ্ধি পাচ্ছে দ্রুত, নির্ভরযোগ্য ও সর্বব্যাপী নেটওয়ার্কের প্রয়োজন। স্টারলিংকের ডাইরেক্ট-টু-সেল প্রযুক্তি এই চাহিদার এক যুগান্তকারী সমাধান।

বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে যেখানে প্রত্যন্ত এলাকায় ইন্টারনেট পৌঁছানো এখনও চ্যালেঞ্জ, স্টারলিংকের এই প্রযুক্তি ভবিষ্যতে দেশেও নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিতে পারে।

তথ্যসূত্র: গালফ নিউজ

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!