রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৭, ২০২৫, ১০:১৪ এএম

শীতের সকালে কেন মধু খাবেন?

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৭, ২০২৫, ১০:১৪ এএম

ছবি- সংগৃহীত

ছবি- সংগৃহীত

শীতের কুয়াশা, হিমেল হাওয়া আর কম তাপমাত্রায় শরীর ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা দুটোই ঝুঁকির মুখে থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শীতকাল শুরু হতেই সকালের নাস্তায় প্রাকৃতিক মধু খাওয়া শরীরের জন্য বেশ উপকারী। মধু শুধু প্রাকৃতিক শর্করা নয়, এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যও ধারণ করে। তাই এটি শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, গলা ও হজম ব্যবস্থাকে সুস্থ রাখে।

মধুর গঠনে আছে আশ্চর্য পুষ্টি। এতে প্রায় ৮০ শতাংশ প্রাকৃতিক শর্করা যেমন গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ, প্রায় ১৮ শতাংশ পানি এবং বাকিটা এনজাইম, ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এতে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রনসহ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান আছে যা শরীরকে ভেতর থেকে শক্তিশালী করে। মধুতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট কোষের ক্ষয়রোধ করে এবং শরীরে ফ্রি র‌্যাডিক্যালের ক্ষতিকর প্রভাব কমায়, ফলে বার্ধক্য ধীর হয় এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। প্রতিদিনের জীবনে মধু একটি চমৎকার শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে।

এতে থাকা প্রাকৃতিক শর্করা শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি যোগায়। যাদের সারাদিন কাজ করতে হয় বা শারীরিক পরিশ্রম বেশি, তাদের জন্য এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে এক চামচ মধু মিশিয়ে খাওয়া খুবই উপকারী। অনেক ক্রীড়াবিদও প্রাকৃতিক এনার্জি বুস্টার হিসেবে মধু ব্যবহার করেন, কারণ এটি শরীরকে দ্রুত পুনরুজ্জীবিত করে। কফি বা চিনিযুক্ত পানীয়ের পরিবর্তে সকালে মধু খেলে দিনটা শুরু হয় আরও উদ্যমে। মধু রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এতে থাকা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ভাইরাল উপাদান শরীরের ক্ষতিকর জীবাণু প্রতিরোধ করে। ঠান্ডা-কাশি, গলাব্যথা বা হালকা জ্বরের ক্ষেত্রে এক চামচ মধু খেলে আরাম মেলে। গবেষণায় দেখা গেছে, বিশেষ করে শিশুদের কাশি কমাতে মধু কার্যকর এবং এটি ঘুমের মান উন্নত করে। প্রাকৃতিক এই উপাদানটি শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে মজবুত করে, ফলে মৌসুমি রোগ থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়। হজম সমস্যায় ভোগা মানুষদের জন্য মধু এক নির্ভরযোগ্য উপায়। এতে থাকা এনজাইম খাবার ভাঙতে সাহায্য করে এবং অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ঘটায়।

সকালে খালি পেটে কুসুম গরম পানি, লেবুর রস ও এক চামচ মধু মিশিয়ে পান করলে শরীরের টক্সিন দূর হয়, হজমশক্তি বাড়ে ও পেটের গ্যাস-অম্লতা কমে যায়। যারা ডায়েট করছেন, তাদের জন্যও এটি উপকারী, কারণ এটি বিপাকক্রিয়া সক্রিয় রাখে। মধু হৃদযন্ত্রের জন্যও অত্যন্ত উপকারী। এটি রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমিয়ে এবং উপকারী কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দেয়। নিয়মিত মধু খাওয়া রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। যারা কৃত্রিম চিনি কমাতে চান, তাদের জন্য মধু হতে পারে একটি নিরাপদ বিকল্প। এতে থাকা প্রাকৃতিক চিনি শরীরে ধীরে শোষিত হয়, ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়ে না। মধু শুধু শরীরের জন্য নয়, সৌন্দর্যের জন্যও বিস্ময়কর এক উপাদান। এটি ত্বকের প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে, যা ত্বককে নরম ও উজ্জ্বল রাখে। মুখের দাগ, ব্রণ বা শুষ্কতা দূর করতে মধু একটি প্রাকৃতিক সমাধান। অনেকেই ঘরোয়া ফেসমাস্কে মধু ব্যবহার করেন, যা ত্বককে উজ্জ্বল ও তরতাজা রাখে। 

চুলের যত্নেও মধুর ব্যবহার পুরোনো।এটি স্কাল্পে আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনে, খুশকি দূর করে এবং চুলের গোড়া শক্তিশালী করে। আজকাল অনেক প্রসাধনী কোম্পানি তাদের ক্রিম ও শ্যাম্পুতে মধুর নির্যাস ব্যবহার করছে। মানসিক প্রশান্তি ও ঘুমের ক্ষেত্রেও মধুর প্রভাব লক্ষণীয়। রাতে ঘুমের আগে এক গ্লাস গরম দুধে সামান্য মধু মিশিয়ে খেলে শরীরে সেরোটোনিন হরমোনের নিঃসরণ বাড়ে, যা মানসিক শান্তি এনে দেয় এবং ভালো ঘুমে সহায়তা করে। উদ্বেগ, চাপ বা অনিদ্রায় ভোগা ব্যক্তিদের জন্য এটি একদম প্রাকৃতিক সমাধান হতে পারে।

তবে মধু খাওয়ার ক্ষেত্রেও কিছু সতর্কতা জরুরি। এক বছরের নিচে কোনো শিশুকে মধু দেওয়া উচিত নয়, কারণ এতে থাকা ব্যাকটেরিয়ার স্পোর শিশুদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এ ছাড়া, ডায়াবেটিস রোগীদের মধু খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। বাজারে অনেক ভেজাল বা প্রক্রিয়াজাত মধু পাওয়া যায়, যা আসল মধুর গুণাগুণ নষ্ট করে দেয়। তাই সবসময় খাঁটি, কাঁচা বা অর্গানিক মধু বেছে নেওয়াই শ্রেয়।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!