বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া আজ মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল ১০টা ৪৮ মিনিটের দিকে ঢাকায় পৌঁছবেন। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে সকাল থেকেই বিমানবন্দরে বিএনপি নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছে। নির্ধারিত সময়ের অনেক আগে থেকেই নেতাকর্মীরা বাইরের সড়কে জড়ো হতে শুরু করেছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা দলীয় ও জাতীয় পতাকা হাতে রাস্তার দুই পাশে অবস্থান নিচ্ছেন এবং খালেদা জিয়ার পক্ষে স্লোগান দিচ্ছেন। তার আগমন উপলক্ষে বিমানবন্দর এলাকায় অতিরিক্ত ভিড়ের আশঙ্কায় ট্রাফিক পুলিশও বাড়তি প্রস্তুতি নিয়েছে।
প্রিয় নেত্রীকে অভ্যর্থনা জানাতে ভোর থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসতে শুরু করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা।
দলীয় সূত্র জানা গেছে, খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানাতে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি অবস্থান করবে বিমানবন্দর থেকে লো মেরিডিয়েন হোটেল পর্যন্ত এলাকায়। ছাত্রদল অবস্থান করবে লো মেরিডিয়েন হোটেল থেকে খিলক্ষেত পর্যন্ত এলাকায়। যুবদল অবস্থান করবে খিলক্ষেত থেকে হোটেল র্যাডিসন পর্যন্ত এলাকায়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি অবস্থান করবে হোটেল র্যাডিসন থেকে আর্মি স্টেডিয়াম পর্যন্ত এলাকায়। স্বেচ্ছাসেবক দল অবস্থান করবে আর্মি স্টেডিয়াম থেকে বনানী কবরস্থান পর্যন্ত এলাকায়। কৃষক দল অবস্থান করবে বনানী কবরস্থান থেকে কাকলী মোড় পর্যন্ত এলাকায়। শ্রমিক দল অবস্থান করবে কাকলী মোড় থেকে বনানীর শেরাটন হোটেল পর্যন্ত এলাকায়। ওলামা দল, তাঁতী দল, জাসাস, মৎস্যজীবী দল অবস্থান করবে শেরাটন হোটেল থেকে বনানী কাঁচাবাজার পর্যন্ত এলাকায়। পেশাজীবী সংগঠনগুলো অবস্থান করবে বনানী কাঁচাবাজার থেকে গুলশান-২ পর্যন্ত এলাকায়। মহিলা দল অবস্থান করবে গুলশান-২ নম্বর গোলচত্বর থেকে গুলশান অ্যাভিনিউ রোড পর্যন্ত এলাকায়।
গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়া যুক্তরাজ্যের লন্ডনে যান। সেখানে তিনি লন্ডন ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি তাকে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠান। সেই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তিনি লন্ডন পৌঁছান এবং এখন আবার সেই একই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে দেশে ফিরছেন।
এর আগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান লন্ডনের কিংস্টনের বাসা থেকে নিজে গাড়ি চালিয়ে মাকে নিয়ে হিথরো বিমানবন্দরে যান। এরপর সেখানে তাকে বিদায় জানান। এ ছাড়া দলীয় চেয়ারপারসনকে বিদায় জানাতে বিমানবন্দরে যুক্তরাজ্য ও লন্ডন বিএনপির নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে খালেদা জিয়া এবং তার দুই পুত্রবধূকে বরণে এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বিএনপি। অঙ্গ সংগঠনগুলোকে ১১টি স্পটে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবন ‘ফিরোজা’ পর্যন্ত নেতাকর্মীরা রাস্তার দুই ধারে সুশৃঙ্খলভাবে দাঁড়িয়ে নেত্রীকে অভ্যর্থনা জানাবেন।
গুলশানে খালেদা জিয়ার ভাড়া বাসা ‘ফিরোজা’র ভেতরের কক্ষগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজও শেষ হয়েছে। সামনের সবুজ আঙিনায় ফুলগাছের টব দিয়ে সাজানো হয়েছে।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ওয়াসা, বাসার আঙিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, সাজসজ্জা কোনো কিছুই বাদ নেই। ম্যাডামের স্বজনরা সব কিছু তদারকি করেছেন।
এছাড়া জুবাইদা রহমান দেশে ফিরে প্রথমত শাশুড়ির সঙ্গে গুলশানে তার বাসা ফিরোজায় যাবেন। পরে তিনি ধানমণ্ডিতে তার পৈতৃক বাসভবন ‘মাহবুব ভবন’-এ থাকবেন। সাবেক নৌবাহিনী প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খানের বাসা ধানমণ্ডির ৫ নম্বর সড়কে এই ‘মাহবুব ভবন’। এখানে এখন তার সহধর্মিণী সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু এবং বড় মেয়ে শাহীনা জামান ও তার পরিবার বসবাস করেন। বয়োবৃদ্ধ সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু কয়েক দিন আগে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ছোট মেয়ে জুবাইদা রহমান ঢাকায় এসে বাবার বাসায় উঠবেন বলে বাসার নিরাপত্তা ও সাজসজ্জা করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :