ঢাকা বুধবার, ০৭ মে, ২০২৫

সমঅধিকার পশ্চিমা এজেন্ডা নয়, হেফাজতকে ৬ নারী

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ৬, ২০২৫, ০৭:৩৮ পিএম
এনসিপির নেত্রী সৈয়দা নীলিমা দোলা, দ্যুতি অরণ্য চৌধুরী, নীলা আফরোজ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব উম্মে রায়হানা, উম্মে ফারহানা, ক্যামেলিয়া শারমিন চূড়া এবং হেফাজতে ইসলামীর লোগো। ছবি: সংগৃহীত

হেফাজতে ইসলামের বিবৃতির প্রেক্ষিতে ছয় নারী বলেছেন, ‘নারীর সমঅধিকার কোনোভাবেই পশ্চিমা এজেন্ডা নয়। নারীদের ব্যাপারে বারবার প্রশ্ন উত্থাপন করে একটি সামাজিক চাপ সৃষ্টি করা অনুচিত।’

আগের দিন হেফাজতকে ছয় নারী একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছিলেন। ওই নোটিশের প্রেক্ষিতে হেফাজত দুঃখ প্রকাশ করে একটি বিবৃতি দেয়। যেখানে নারী সমঅধিকারকে পশ্চিমা এজেন্ডার সঙ্গে তুলনা করা হয়। যার প্রেক্ষিতে পাল্টা বিবৃতি দিয়ে ওই বক্তব্য দেন ছয় নারী।

বিবৃতিতে হেফাজতকে ফ্লেমিং রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বানও জানান তারা।

মঙ্গলবার (৬ মে) বিকেলে বিবৃতিটি পাঠান এনসিপির নেত্রী সৈয়দা নীলিমা দোলা, দ্যুতি অরণ্য চৌধুরী ও নীলা আফরোজ, সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব উম্মে রায়হানা, উম্মে ফারহানা ও ক্যামেলিয়া শারমিন চূড়া। বিষয়টি রূপালী বাংলাদেশকে নিশ্চিত করেন নীলিমা দোলা।

বিবৃতিতে নারীরা বলেন, ‘আমরা বিগত ৫ মে, ২০২৫ হেফাজত ইসলামের সমাবেশে নারীকে বেশ্যা, হিজড়া বলে গালি দেওয়ার কারণে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠাই। সেটির প্রেক্ষিতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ দুঃখপ্রকাশ করে একটি প্রেস রিলিজ প্রকাশ করেছে। নারীকে পাবলিক স্পেসে গালি দেওয়ার পর, লিগ্যাল নোটিশের উত্তরে তাদের ক্ষমা চাওয়াকে আমরা সাধুবাদ জানাই এবং গ্রহণ করি। তবে আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি, তারা প্রেস রিলিজে বলেছেন, ‘নারীকে ‘পণ্য’ বানানোর পশ্চিমা এজেন্ডা তারা মেনে নেবেন না এবং ধর্মীয় ইস্যুতে বাড়াবাড়ি করলে ছাড় দেবেন না।’ এ ছাড়াও তারা বলেন, ‘উগ্র নারীবাদীদের লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

‘এই ফ্রেমিং-এর রাজনীতি থেকে তাদের বেরিয়ে আসার আহ্বান জানাই আমরা। কারো মতের সঙ্গে না মিললেই তাকে কোনো না কোনো ট্যাগ দেওয়া যাবে না। ক্ষমা প্রার্থনাকে মেনে নিয়েই তাদের প্রতি আমাদের অনুরোধ থাকবে, ভবিষ্যতে টেবিল টক কিংবা পাবলিক ডিবেটের মাধ্যমে নারীদের সঙ্গে আলাপে অংশ নিতে। নারীর সমঅধিকার কোনোভাবেই পশ্চিমা এজেন্ডা নয়। সমাজে সবাই বিরাজ করবেন নিজ নিজ ক্ষমতায় আর সেটিই সমাজের নিয়ম। আমরা আশা করব, তারা নিজেদের চিন্তা চেতনাকে আরও শানিত করবেন।’

‘হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের প্রতি সম্মান রেখেই আমাদের ৬ নারীর আহ্বান থাকবে, নারীর সাম্য ও সামাজিক মর্যাদার বিষয় নারীই বুঝবে এবং তারা যেন সেক্ষেত্রে এগিয়ে আসে। সব জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন করাই আমাদের সবার লক্ষ্য। কাজেই নারীদের ব্যাপারে বারবার প্রশ্ন উত্থাপন করে একটি সামাজিক চাপ সৃষ্টি করা অনুচিত।’

‘২০২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানই নারীদের শক্তি তথা ক্ষমতা বোঝার সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম। স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পেছনে নারীদের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। তাই যেকোনো দ্বিমতে এক টেবিলে বসে কথা বলার পরিস্থিতি বজায় রাখবেন এবং ভবিষ্যতে একটি সামাজিক চুক্তিতে আসবেন বলে আমাদের বিশ্বাস।’

‘লিগ্যাল নোটিশের একটি কপি তাদের কার্যালয়ে পৌঁছে যাবে আইন মোতাবেক। তারা তাদের প্রেস রিলিজ দিয়ে, উত্তর জানিয়ে দেবেন লিগ্যাল নোটিশের আইনজীবী বরাবর। আমরা আশা করি, নতুন বাংলাদেশ সবার হবে। আর এই দুঃখ প্রকাশের প্রক্রিয়াকে আমরা সাধুবাদ জানাই।