ঢাকা শনিবার, ২৪ মে, ২০২৫

চার জেলার সীমান্তে পাঁচ বছরে ৩৪ হত্যা

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ২৩, ২০২৫, ০৭:২০ পিএম
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত। ছবি: সংগৃহীত

হত্যা নির্যাতনসহ নানা কারণেই বছরজুড়ে আলোচনায় থাকে ৮ জেলা নিয়ে গঠিত বৃহত্তর রাজশাহী বিভাগের সীমান্ত ইস্যু। যার মধ্যে ৪টি জেলার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক আছে ভারত সীমান্তের। ধান, আম আর সবজি জন্য বিখ্যাত এসব জেলা। 

বাংলাদেশ-ভারতের চোরাকারবারিরাও সুযোগ নেয় সীমান্তগুলোতে। সীমান্ত প্রহরায় কাজ করে দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফ। কিন্তু অবৈধ অনুপ্রবেশ নিয়ন্ত্রণের নামে মাঝে-মধ্যেই চুক্তি ভেঙে উদ্ভট আচরণ করে হত্যা আর নির্যাতনে মেতে উঠে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। সম্প্রতি এমন চিত্রই মিলেছে বেসরকারি সংস্থা ‘আইন ও সালিশ কেন্দ্রে’র কাছ থেকে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট ও নওগাঁ জেলার সীমান্তগুলোতে গেল পাঁচ বছরে হত্যার শিকার হয়েছেন ৩৪ জন বাংলাদেশি। এরমধ্যে, ২০২০ সালে ১৪ জন, ২০২১ সালে ৩ জন, ২০২২ সালে ৭ জন, ২০২৩ সালে ৭ জন ও ২০২৪ সালে ৩ বাংলাদেশিকে হত্যা করে বিএসএফ। আর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন অন্তত আরও ২০ জন। যদিও চলতি বছরে এখনও মৃত্যুর খবর মেলেনি।

এখানেই শেষ নয়। হত্যার পরে লাশ ফেরত না দেয়ারও নজির রয়েছে নওগাঁ সীমান্তে। ২০২০ সালে নওগাঁর পোরশা সীমান্তে গিয়েছিলেন সুভাষ চন্দ্রসহ কয়েকজন। বাকিরা বেঁচে ফিরলেও সুভাষ আজও ফেরেন নি। 

পরিবারের দাবি, বিএসএফর নির্যাতনে মৃত্যু হয়েছে তার।

ওই একই বছরে জেলার নিতপুর সীমান্তে একদিনেই মোস্তাফিজুল, সঞ্জীত ও কামাল হোসেন নামে ৩ বাংলাদেশিকে হত্যা করেছিল বিএসএফ। একদিন পরে তাদের লাশ হস্তান্তর করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ।

পরিবারগুলো বলছে সাম্প্রতিক সময়ে আতঙ্ক বেড়েছে সীমান্তে। ছোটখাটো বিষয় নিয়ে ঝামেলা করার চেষ্টা করে বিএসএফ। নওগাঁ সীমান্তে আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘন করে কাঁটাতারের বেড়া দিতে এসেছিল বিএসএফ। যা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ রুখে দিয়েছে। এছাড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে গাছ কাটার মত তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বড় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর সৈয়দ মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী বলেন, সীমান্ত চুক্তিতে স্পষ্টতায় বলা আছে অবৈধ অনুপ্রবেশের জন্য জেল অথবা আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। কিন্তু বারবারই সেই চুক্তি লংঘন করে গুলি করার মতো অপরাধ করে বিএসএফ। যা খুবই দুঃখজনক। এজন্য দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে সীমান্ত চুক্তির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে সহনীয় মনোভাব পোষণের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

তবে এসব বিষয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতে রাজি নয় বিজিবি। পরিচয় গোপন রাখার শর্তে ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা জানান, দু’দেশের চোরাকারবারিদের দুঃসাহসের জন্যই এমন ঘটনার মুখোমুখি হতে হয়। তবে সীমান্ত ঠান্ডা রাখতে নতুন নতুন কৌশলে বিজিবি কাজ করছে বলেও জানান তিনি। 

তথ্যসূত্র: চ্যানেল ২৪