আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহায় সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য কমপক্ষে ৫ দিনের ছুটি ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশের দাবি জানিয়েছে জার্নালিস্ট কমিউনিটি অব বাংলাদেশ।
রোববার (২৫ মে) সংগঠনের পক্ষ থেকে সদস্যসচিব মো. মিয়া হোসেন স্বাক্ষরিত একটি স্মারকলিপি তথ্য উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলমকে প্রদান করা হয়।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, এবার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ঈদে ১০ দিনের ছুটি ঘোষণা করা হলেও সাংবাদিকরা প্রতিবারই ন্যায্য ছুটি থেকে বঞ্চিত হন। গণমাধ্যমে কর্মরতদের জন্য অন্তত ৫ দিনের ছুটি নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় সাংবাদিক মহলে ক্ষোভ ও অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়বে।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, স্বাধীনতার পর থেকেই গণমাধ্যমে সাংবাদিকরা নানা ধরনের বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছেন। সাংবাদিকরা দুই ঈদে ছুটি পেলেও দূর্গাপূজা, বড়দিন ও বৌদ্ধ পূর্ণিমায় কোনো ছুটি দেওয়া হয় না। এমনকি অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ছুটির দিনেও ছুটি পাওয়া যায় না। সেই সঙ্গে ছুটির দিনে কাজ করানোর পরও বিশেষ মজুরিও প্রদান করা হয় না।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, জাতির বিবেক হিসেবে খ্যাত সাংবাদিকদের মৌলিক অধিকার হিসেবে ছুটির ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর হওয়া একান্ত আবশ্যক। সাংবাদিকদের ছুটির বিষয়ে সরকারি কোনো সিদ্ধান্ত না থাকায় গণমাধ্যম মালিকদের বিভিন্ন সংগঠন তাদের ইচ্ছামতো ছুটি দেয় এবং ছুটির দিনে বিশেষ ব্যবস্থার নামে কাজ করিয়ে যথাযথ পারিশ্রমিকও দেয় না।
স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়, গণমাধ্যমে সাংবাদিকরা সরকারি ছুটির দিনে মাত্র কয়েকদিন ছুটি ভোগ করে থাকেন। তার মধ্যে দুই ঈদে ৬ থেকে ৭দিন, পয়লা বৈশাখ, ১ মে, ১২ রবিউল আউয়াল, ১০ মহররম (আশুরা) ও শবে বরাতের দিন। এ ছাড়া সংবাদপত্রে বিশেষ ব্যবস্থায় ২১ ফেব্রুয়ারি, ২৬ মার্চ ও ১৬ ডিসেম্বর এই তিন দিন ছুটি বাবদ নগদ মজুরি দেওয়া হয়।
‘উল্লিখিত ছুটির বাইরে সরকারি অন্যান্য ছুটির দিনে সাংবাদিকদের কোনো প্রকার ছুটি দেওয়া হয় না এবং ছুটির দিনে কাজ করার কোনো পারিশ্রমিকও দেওয়া হয় না।’
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, এসব ছুটির বিষয়ে মাত্র ২৬টি সংবাদপত্রের মালিকদের একটি সংগঠন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। যা গোটা গণমাধ্যম সেক্টরে পালিত হয়ে আসছে। এ সংগঠনের সিদ্ধান্তে পবিত্র ঈদুল ফিতরে ২০২০ সালে ৫ দিন ও গত বছর ২০২৪ সালে ঈদুল ফিতরে ৫ দিন ও চলতি বছর ঈদুল ফিতরে ৩ দিন ছুটি পালিত হয়েছে। আর ইলেকট্রনিক ও অনলাইন গণমাধ্যমে ছুটি পালনের কোনো সিদ্ধান্ত কেউ দেয় না।
এ অবস্থায় সব গণমাধ্যমে সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মীদের ছুটি ভোগের বিষয়ে বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে পবিত্র ঈদুল আজহায় কমপক্ষে ৫ দিনের ছুটিসহ সরকারি ছুটির দিনগুলোতে গণমাধ্যমেও ছুটি ঘোষণার সরকারি সিদ্ধান্ত গেজেট আকারে জারি করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়।
সেই সঙ্গে ছুটির দিনে কোনো গণমাধ্যমে বিশেষ ব্যবস্থায় কাজ করানো হলে দ্বিগুণ মজুরি নগদে দেওয়ার নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে স্মারকলিপিতে।