শনিবার, ১৪ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: জুন ১১, ২০২৫, ১০:৩৩ পিএম

ফাঁকা ঢাকায় গলা কাটছে রিকশাভাড়া

এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: জুন ১১, ২০২৫, ১০:৩৩ পিএম

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ।

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ।

ঈদুল আজহার পঞ্চম দিনে রাজধানীর অধিকাংশ সড়ক ছিল প্রায় ফাঁকা। তবে গাবতলী, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, সদরঘাটসহ কমলাপুর রেলস্টেশন এলাকার চিত্র ছিল ভিন্ন। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন শেষে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছে কর্মজীবী মানুষ। সড়ক ও নৌপথের পাশাপাশি রেলপথেও ফিরছেন তারা। রাজধানীতে প্রবেশের পর নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে রিকশা বা সিএনজি অটোরিকশায় গুনতে হচ্ছে দ্বিগুণের বেশি ভাড়া বলে অভিযোগ করছেন ঢাকায় ফেরা যাত্রীরা।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কর্মব্যস্ত মহানগরীতে সাধারণত দিনে যে সড়ক পাড়ি দিতে ঘণ্টাখানেক সময় লাগে, ঈদের ছুটিতে তা মাত্র ১৫-২০ মিনিটেই সম্ভব হয়েছে। তেজগাঁও, মালিবাগ, বাড্ডা, পল্টন ও বিমানবন্দর সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, যানজটের তেমন কোনো চিহ্ন ছিল না। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি পরিবহন চালকেরাও এই অবস্থাকে ‘স্বস্তিদায়ক’ বলে মনে করছেন। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টায় মালিবাগ থেকে বনানী আসতে মাত্র ১০ মিনিট লেগেছে। বিকেল ৪টা পর্যন্ত রাজধানীর গুরুত্বপ‚র্ণ কয়েকটি সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, গাড়ির চাপ ছিল অনেক কম। তবে, গুলিস্তান থেকে কাকরাইল হয়ে বাড্ডা পর্যন্ত যে রাস্তায় সাধারণত ব্যস্ততম সময়গুলোতে এক থেকে দেড় ঘণ্টা লাগে, সেই রাস্তা পাড়ি দিতে লেগেছে মাত্র ৪০ মিনিট। গুলিস্তানে ঢাকাং ফেরা পবিবহনের সঙ্গে প্রধান সড়কে ছিল রিকশার জটলা।

উত্তরা থেকে পল্টনগামী ভিক্টর পরিবহনের একজন বাসচালক বলেন, ‘আজ (গতকাল) সকাল ৮টা থেকে গাড়ি চালাচ্ছি। প্রতিদিন এই বাড্ডা থেকে গুলিস্তানে যেতেই এক ঘণ্টা লাগে। কিন্তু আজ ১৫ মিনিটেই গুলিস্তানে পৌঁছে গেছি।’ বাড্ডা লিংক রোডে দেখা যায় প্রাইভেট কার, সিএনজি অটোরিকশা ও কিছু বাস চললেও সংখ্যা খুবই সীমিত। পথচারীও কম। রিকশাও ছিল হাতেগোনা। মিলন নামে এক পথচারীর সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘বছরের এই কয়েকটা দিনই আমরা ফাঁকা রাস্তায় একটু স্বস্তি পাই। বাচ্চাদের নিয়ে বেড়াতে বের হয়েছি, যানজট না থাকায় মজা লাগছে, খুব কম সময়ে বিনোদন স্পটে যেতে পারছি।’

রাজধানীর অন্যান্য সড়কেও একই চিত্র দেখা গেছে। উত্তরা থেকে মহাখালী পর্যন্ত এই ব্যস্ত সড়কে গতকাল দুপুরে কোনো জ্যাম চোখে পড়েনি। এই রুটের একজন বাসচালক বলেন, সাধারণ দিনে এই পথে কমপক্ষে চার-পাঁচবার থেমে থেমে যেতে হয়, আজ একবারও দাঁড়াতে হয়নি। পল্টন মোড়ে এক পথচারী জানান, গতকালও সড়কে গাড়ি ছিল কম, তবে আজ আরও কম। ঈদের ছুটি ও অধিকাংশ মানুষ রাজধানীর বাইরে থাকায় সড়কগুলো ফাঁকা। কোনো যানজটের খবর নেই। কোথাও ট্রাফিক সিগন্যালও লাগছে না অনেক সময়।

ঈদের ছুটির পঞ্চম দিন ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, আজকেও ঢাকা ছেড়ে গ্রামে যাচ্ছে মানুষ। প্ল্যাটফর্মে অনেক যাত্রী অপেক্ষা করছে নির্ধারিত ট্রেনের জন্য। ছুটি এখনো চার দিন বাকি আছে। দীর্ঘ ছুটি হওয়ায় মানুষ ধীরে ধীরে ঢাকা ছাড়ছে। যাওয়ার যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ না থাকলেও প্রতিটি ট্রেনে যাত্রীদের দাঁড়িয়ে ভ্রমণ করতে দেখা গেছে। যারা যাচ্ছে, তারা ঈদের ভিড় ঠেলে যেতে পারেনি। ফলে এখন স্বচ্ছন্দে যাচ্ছে। অন্যদিকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনগুলো কমলাপুরে নির্ধারিত সময়ে পৌঁছাচ্ছে। ঈদের ছুটি কাটিয়ে ট্রেনগুলোতে ফিরছে মানুষ। তবে ঈদের ছুটি শেষে হবে আগামী শনিবার। বেসরকারি নানা প্রতিষ্ঠান, স্কুল-কলেজ এখনো বন্ধ রয়েছে। অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও বন্ধ। এসব কারণে ঈদে গ্রামে ফেরা অনেকেই একটু লম্বা ছুটি কাটিয়ে নগরীতে ফিরছে। বিভিন্ন গন্তব্য থেকে আসা ট্রেনগুলো অনেকটা ফাঁকাই ছিল। ট্রেনগুলো যথানিয়মেই যাতায়াত করছে।

ফিরতি যাত্রীরা বলছেন, ভিড় হওয়ার আগেই ঢাকায় ফিরছেন তারা। এদিকে সরকারি অফিসসহ অনেক বেসরকারি অফিসের কার্যক্রম এখনো বন্ধ রয়েছে। ঈদের ছুটি চলবে আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত। অফিস খুলবে ১৫ জুন। ফলে রাজধানীর প্রশাসনিক ও আর্থিক কেন্দ্রগুলো যেমন মতিঝিল, আগারগাঁও বা উত্তরা অফিস পাড়া সব জায়গায় একপ্রকার নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও ছুটি চলছে। এদিকে রাজধানীতে যারা ঈদের ছুটিতে বাইরে যাননি, তাদের অনেকেই এই সময়টাকে ব্যবহার করছেন পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরে বেড়াতে কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাতে। তাই শহরজুড়ে একধরনের প্রশান্তির আবহ বিরাজ করছে।

রাজধানীর মহাখালী ও সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল ঘুরে এবং যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যাত্রীরা নির্বিঘ্নে ঢাকায় পৌঁছাতে পারছেন। পথে বড় কোনো যানজট নেই। ঢাকায় প্রবেশের গাজীপুর, আমিনবাজার, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টেও যান চলাচল ছিল স্বাভাবিক। সাধারণত ঈদের পরদিন ও তৃতীয় দিন থেকেই ঢাকায় লোকজন ফিরতে শুরু করে। তবে এবার ঈদ-পরবর্তী ছুটি লম্বা হওয়ায় এখনো চাপ বাড়েনি। ঢাকার রাস্তা ফাঁকা থাকলেও যাত্রীদের অভিযোগ, দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়া নিয়ে গলা কাটছেন রিকশা ও সিএনজিচালকেরা।

ঈদের ছুটি শেষ করে সিলেট থেকে মহাখালী বাস টার্মিনালে এসেছেন মো. সেলিম মিয়া। তিনি মিরপুরে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন।

সেলিম বলেন, ‘আমি ঈদের দুই দিন আগেই বাড়ি গিয়েছিলাম। ফেরার পথে কোনো জ্যাম পাইনি। ঈদের ছুটি শেষ করে কর্মস্থলে যোগ দিতে ঢাকায় ফিরেছি। সাধারণত ঈদের পর রাস্তায় অস্থিরতা থাকে, কিন্তু এবার দেখলাম পরিস্থিতি শান্ত। আগামীকাল গাড়ির টিকিট পাওয়া বেশ কঠিন। তাই এক দিন আগেই ঢাকায় চলে এলাম। আসতে কোনো ভোগান্তি হয়নি। তবে, সিলেট থেকে ঢাকায় আসছি ৬০০ টাকা বাস ভাড়া দিয়ে। মহাখালী থেকে মিরপুর ২ নম্বরে যেতে সিএনজিচালক ভাড়া চান ৬০০ টাকা। এটা রীতিমতো জুলুম।

যাত্রাবাড়ী বাস টার্মিনালে সজীব মিয়া নামে এক যাত্রীর সঙ্গে কথা হয়। তিনি থাকেন লালবাগ। রূপালী বাংলাদেশকে তিনি বলেন, যাত্রাবাড়ী থেকে ১১০ থেকে ১৩০ টাকা রিকশাভাড়া মাঝে মাঝে ১০০ টাকায় পাওয়া যায়। কিন্তু রাস্তা ফাঁকা হওয়া সত্ত্বে ও ভাড়া চাচ্ছে ২৫০ টাকা। বাসের ভাড়া কমানোর পদক্ষেপ দেখা গেলেও রিকশা, সিএনজি ভাড়া নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেই সরকারের।

গতকাল ভোর থেকেই রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল, কমলাপুর ও বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছাচ্ছেন যাত্রীরা। এ সময় কমলাপুর ও বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে মানুষের ভিড় চোখে পড়ে। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনার কয়েকটি লঞ্চে ফিরতি যাত্রীর সংখ্যা বেশি।

এদিকে সরকারি অফিসসহ অনেক বেসরকারি অফিসের কার্যক্রম এখনো বন্ধ রয়েছে। ঈদের ছুটি চলবে আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত। অফিস খুলবে ১৫ জুন। ফলে রাজধানীর প্রশাসনিক ও আর্থিক কেন্দ্রগুলো যেমন মতিঝিল, আগারগাঁও বা উত্তরা অফিস পাড়া সব জায়গায় একপ্রকার নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও ছুটি চলছে।

এদিকে রাজধানীতে যারা ঈদের ছুটিতে বাইরে যাননি, তাদের অনেকেই এই সময়টাকে ব্যবহার করছেন পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরে বেড়াতে কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাতে। তাই শহরজুড়ে একধরনের প্রশান্তির আবহ বিরাজ করছে।

এখন ঢাকা শহরের বিভিন্ন রেস্তোরাঁ ও চায়ের দোকানগুলোতে মানুষের আড্ডা লক্ষ করা যায়। ছুটির দিনে পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে চিরচেনা আড্ডা দিতে দ‚র থেকেও অনেকে চলে আসছেন টং দোকানগুলোতে। ঈদের সম্প্রীতি এইভাবে আটুট থাকুক।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!