আবাসনের দাবিতে চলমান ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাস (হল) দ্রুত খালি করে দিতে নির্দেশ দিয়েছে কলেজ প্রশাসন।
শনিবার (২১ জুন) কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কলেজের একাডেমিক ভবন ও আবাসিক হলগুলোর অবকাঠামোগত দুরবস্থার বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীরা দাবি জানিয়ে আসছেন। এর ফলে যে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে, তা নিরসনের লক্ষ্যে শনিবার জরুরি একাডেমিক কাউন্সিল সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একাডেমিক কাউন্সিল একমত পোষণ করেছে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
তবে দৃশ্যমান অগ্রগতির জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমার দাবি নিয়ে শিক্ষার্থীরা অনড় অবস্থান নিয়েছে। এরই মধ্যে গণপূর্ত বিভাগ ডা. ফজলে রাব্বি ছাত্রাবাসের মূল ভবনের চতুর্থ তলাকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে। বিকল্প আবাসনের ব্যবস্থা করলেও শিক্ষার্থীদের অসহযোগিতার কারণে তা খালি করা যায়নি।
প্রশাসনের ভাষ্য অনুযায়ী, এ অবস্থার ফলে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েছে। এছাড়া সদ্য ভর্তি হওয়া নতুন ব্যাচ (কে-৮২) নিজেদের উদ্যোগে বা ‘প্ররোচিত’ হয়ে ওরিয়েন্টেশন কর্মসূচি বর্জন করেছে, যা কলেজ প্রশাসনের মতে একটি ‘কালো অধ্যায়’। ফলে একাডেমিক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে রোববার (২২ জুন) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজের এমবিবিএস শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের রোববার দুপুর ১২টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পেশাগত এমবিবিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী এবং বিদেশি শিক্ষার্থীরা এই নির্দেশনার আওতার বাইরে থাকবে বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ কামরুল আলম।
কলেজ সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই আবাসনসহ পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতেই কলেজ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের দেওয়া পাঁচ দফাগুলো হলো...
১. নতুন ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাস নির্মাণের জন্য দ্রুত বাজেট পাস করতে হবে।
২. ছাত্রাবাস নির্মাণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিকল্প আবাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৩. নতুন একাডেমিক ভবনের জন্য আলাদা বাজেট পাস করতে হবে।
৪. আবাসন ও অ্যাকাডেমিক ভবনের বাজেট পৃথকভাবে অনুমোদন করতে হবে ও দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
৫. সব প্রকল্প ও কার্যক্রমের অগ্রগতি শিক্ষার্থীদের সামনে স্বচ্ছভাবে উপস্থাপনের জন্য শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ঠিক করতে হবে।