ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই, ২০২৫

নারী-শিশু নির্যাতন রোধে উপজেলা পর্যায়ে হচ্ছে ‘কুইক রেসপন্স টিম’

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ৩, ২০২৫, ০৫:৪৩ পিএম
প্রেস ব্রিফিংয়ে কথা বলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ। ছবি- সংগৃহীত

নারী-শিশু নির্যাতন রোধে উপজেলা পর্যায়ে কুইক রেসপন্স টিম হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে সারা দেশে অব্যাহত নারীর প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণ ও নিপীড়ন বন্ধে গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নেতৃত্বে কুইক রেসপন্স টিম গঠন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এর কাঠামো চূড়ান্ত করা হয়েছে।’

উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের মন্ত্রণালয়ের একটি টোলফ্রি হট লাইন আছে। সেখানে গত ১০ থেকে ১১ মাসে আমাদের কাছে ২ লাখ ৮১ হাজার অভিযোগ এসেছে। এর বেশির ভাগ অভিযোগ এসেছে নানা ধরনের তথ্য চেয়ে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা বলেন আমাদের মতো মন্ত্রণালয়ে কত জনবল আছে যে আমরা এই লাখ লাখ অভিযোগ সমাধান করব। তবে যেগুলো গুরুতর সেগুলো আমরা সমাধান করেছি। আমরা গত ১০ থেকে ১১ মাসে ১০০টির বেশি নারীকে সহায়তা দিতে পেরেছি।’

শারমিন এস মুরশিদ বলেন, ‘আমি নারী ও শিশু নির্যাতন নিয়ে কাজ করছি গত ৪০ বছর ধরে। সরকার এসেছে সরকার গেছে, কেউ কিন্তু এটা সামাল দিতে পারেনি। এর একটা বড় কারণ হচ্ছে রাজনীতি, একটা বড় কারণ হচ্ছে মাদক। আর একটা বড় কারণ হচ্ছে আমরা আমাদের তরুণ, বাচ্চা ছেলে-মেয়েদের ঠিকমতো মানুষ করতে পারছি না।’

মোবাইল ও পর্নোগ্রাফি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এখন এসেছে এই মোবাইল এবং পর্নোগ্রাফি। কিছুদিন আগে আমার কাছে একটা অভিযোগ এসেছে, অভিযোগ শুনে আমি হাত পা ছেড়ে দিয়ে ভাবছি- আমি এটা নিয়ে কী করব! ১০ বছরের একটি বাচ্চা আড়াই বছরের একটি মেয়েকে...এটাকে আমি কি করে ধর্ষণ বলি?’ 

শারমিন বলেন, ‘এটা আমি কোন ভাষায় ব্যাখ্যা করব? এই বাচ্চা ছেলেটাকে যখন আনা হলো সে তো বোঝেই না। সে কি দেখে? সে দেখে বড়রা যা দেখে। তার যে মানসিক বিকৃতি ঘটছে, আমরা যারা দায়িত্বশীল তারা কী করছি? আমরা এই শিশুদের প্রোটেকশন দিতে পারছি না।’

মহিলা ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের তো একজনকে মেডিকেলি ট্রিট করতে হচ্ছে। অন্য বাচ্চাটাকে কাউন্সিলিং, একটা ১০ বছরের বাচ্চা কাউন্সিলিং কতটুকু বোঝে আমি জানি না। তাকে তো সে রকম কিছু একটা করতে হবে। এগুলো হচ্ছে জটিল সামাজিক সমস্যা। কিন্তু সমস্যা বলে তো আমি এগুলো কার্পেটের নিচে লুকিয়ে রাখতে পারছি না।’

পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘এই সহিংসতাগুলো এতই ব্যাপক যে এগুলোর ব্যাপারে আমরা মন্ত্রণালয় থেকে কঠোর কতগুলো আইনি দাবি তুলতে যাচ্ছি। একটি হচ্ছে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ। সারা পৃথিবী যদি পর্নোগ্রাফির নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, আমার দেশ কেন করতে পারে না! একটি বয়সের নিচে এর অ্যাক্সেসই (প্রবেশের সুযোগ) থাকবে না। এই দাবিটা আমি সবার সামনে করছি, আমি আমার জায়গা থেকে সরকারে বসে যতটুকু সম্ভব এটা নিয়ে যুদ্ধ করব। আমাদের বাচ্চাদের হাতে এটা (পর্নোগ্রাফি) তুলে দেওয়া যাবে না।’