ব্রহ্মপুত্র নদের উজানে তিব্বতে নির্মাণাধীন জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করেছে চীন। বেইজিং জানিয়েছে, প্রকল্পটি শুধুমাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য, এতে কোনো সেচ প্রকল্প নেই এবং পানি প্রত্যাহারেরও কোনো পরিকল্পনা নেই।
বাংলাদেশকে এই প্রকল্প নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘চীনের রাষ্ট্রদূত আমার সঙ্গে দেখা করে জানিয়েছেন, তারা একটি নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে ধাপে ধাপে পানির প্রবাহ ব্যবহার করে হাইড্রোপাওয়ার উৎপাদন করবেন। এতে কোনো পানি সরিয়ে নেওয়ার বা কৃষিকাজের জন্য ব্যবহার করার বিষয় নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের অবস্থান পরিষ্কার। আমরা চাই হাইড্রোলজিকাল তথ্য দুই দেশের বিশেষজ্ঞদের মধ্যে বিনিময় হোক এবং পরিবেশগত ও ভাটির দেশের স্বার্থ বিবেচনায় রাখা হোক। চীন তাদের প্রকল্প চালিয়ে নিলেও আমাদের চেষ্টা থাকবে যেন বাংলাদেশ কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় বা ক্ষতি সীমিত থাকে।’
ভারতের স্বার্থও এই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের অনেক নদীরই উৎস বিদেশে। সেইসব উজানে বিভিন্ন ধরনের কাঠামো নির্মাণ হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও হবে। সেগুলো পুরোপুরি ঠেকানো সম্ভব নয়। তবে আমাদের দায়িত্ব হলো, এসব প্রকল্পের কারণে যেন আমাদের ওপর বিরূপ প্রভাব না পড়ে সেদিকে নজর রাখা।’
উল্লেখ্য, চীন সম্প্রতি তিব্বতে বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ কাজ শুরু করেছে। তাদের দাবি, এই প্রকল্পটি চালু হলে এটি যুক্তরাজ্যের এক বছরের সমপরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবে। ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৭ হাজার কোটি মার্কিন ডলার।
এই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটি ইয়ারলুং জাংপো নদীর ওপর নির্মিত হচ্ছে, যা ভারত হয়ে ব্রহ্মপুত্র নামে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ফলে প্রকল্পটি নিয়ে বাংলাদেশসহ ভাটির দেশগুলোতে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। কারণ এই নদীর পানি কৃষি, জীবিকা এবং পরিবেশের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখে। তবে বেইজিংয়ের আশ্বাসে আপাতত স্বস্তিতে রয়েছে ঢাকা।
আপনার মতামত লিখুন :