‘যেখানে অস্তিত্বের প্রশ্ন, সেখানে কোনো আপস নেই’ এই স্লোগানেই ফেটে পড়েছেন কক্সবাজার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সমিতিপাড়ার হাজারো মানুষ। মাথার ওপর থেকে ছাদ কেড়ে নেওয়ার শঙ্কায় তারা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘বাসস্থান ছাড়া বেঁচে থেকে কী করব?’
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সমিতিপাড়া এলাকায় উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিদর্শনে আসেন কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী, সহকারী কমিশনার (ভূমি) শারমিন সোলতানা ও জেলা প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তারা। এ সময় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। নারী-পুরুষের পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিশুরাও এতে যোগ দেয়।
স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে এলাকা, ‘উচ্ছেদ নয়, বাঁচার অধিকার চাই’, ‘বাসস্থান মানুষের মৌলিক অধিকার’, ‘পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ মানি না’।
সমিতিপাড়ার অধিকাংশ মানুষ দীর্ঘদিন ধরে জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে এখানে বসবাস করছেন। কেউ দিনমজুরি করেন, কেউ রিকশা চালান, কেউ আবার কষ্ট করে উপার্জিত টাকা দিয়ে টিনের ঘর গড়ে তুলেছেন। এসব ঘরে রয়েছে বৃদ্ধ বাবা-মা, অসুস্থ মা কিংবা কচি শিশুরা। হঠাৎ করে উচ্ছেদের নির্দেশে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন সবাই।
এক বৃদ্ধা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমরা পশু নই, মানুষ। আমাদের সন্তান আছে, ঘর আছে। উচ্ছেদ করলে যাব কোথায়?’
এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রশাসনের তরফ থেকে কেবল বলা হচ্ছে ‘সরকারি জায়গা, উচ্ছেদ হবে।’ তবে পুনর্বাসনের কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাদের প্রশ্ন, রাষ্ট্র যদি নাগরিকের বাসস্থান কেড়ে নেয়, তবে তারা যাবে কোথায়? সংবিধানেই স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে, খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান মানুষের মৌলিক অধিকার।
বাসিন্দারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা ছাড়া উচ্ছেদ কার্যক্রম মেনে নেবেন না। তাদের মতে, হঠাৎ উচ্ছেদ হলে হাজারো মানুষ খোলা আকাশের নিচে অসহায় হয়ে পড়বে।