মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আগামী ১৩ নভেম্বর কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার রায় ঘোষণার তারিখ ট্রাইব্যুনাল জানাবে। এই রায়কে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ সারা দেশে যাতে কোনো ধরনের নৈরাজ্য সৃষ্টি না হতে পারে, সেদিকে কঠোর নজরদারি রেখেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুলিশের টহল পার্টি, মোবাইল পার্টি ও পিকেট পার্টিকে সক্রিয় করা হয়েছে।
রায় ঘোষণার দিনকে কেন্দ্র করে যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোনোভাবেই বিঘ্নিত না হয়, সেজন্য পুলিশ সদর দপ্তর থেকে দেশের সব জেলার পুলিশ সুপারদের (এসপি) কাছে বিশেষ বার্তা দেওয়া হয়েছে।
এই বার্তা অনুযায়ী, ঝটিকা মিছিল কঠোরভাবে ঠেকাতে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পুলিশের আশঙ্কা, দলটির নেতাকর্মীরা অনলাইন ও অফলাইনে সংঘবদ্ধ প্রচারের মাধ্যমে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা চালাতে পারে। তাদের কাছে তথ্য আছে যে, তারা সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার পরিকল্পনা করতে পারে।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ১ সপ্তাহ ধরে টিকটকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দেশ-বিদেশ থেকে ছোট ছোট ভিডিও তৈরি করে উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে হামলার নির্দেশ দিচ্ছে। এ ছাড়াও ১৩ নভেম্বর হাসিনা দিল্লি থেকে বাংলাদেশে ঢুকবে এমন তথ্যও দেওয়া হচ্ছে। এসব টিকটকারদের তালিকা তৈরি করেছে পুলিশ। পাশাপাশি বিদেশে পলাতক থাকা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম, প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নওফেলসহ যারা ফেসবুকে প্রচার চালাচ্ছে তাদেরও তালিকা করেছে পুলিশ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৩ নভেম্বর ঘিরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যাতে ঢাকায় প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য প্রবেশপথগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। গাড়ি তল্লাশি এবং সন্দেহভাজনদের দেহ তল্লাশি করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ ছাড়াও ধর্মীয় উপাসনালয় ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। র্যাবকে ঢাকার সড়কে টহল দিতে দেখা গেছে।
পুলিশের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেও দেশ-বিদেশে ছদ্মবেশে তৎপর রয়েছে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। দেশে হঠাৎ হঠাৎ ঝটিকা মিছিল করে তারা অস্তিত্বের জানান দিচ্ছে। তারা ঝটিকা মিছিল করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। ফ্যাসিবাদী শক্তি অনলাইনেও সক্রিয় হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আগামী ১৩ নভেম্বরকে কেন্দ্র করে তারা গোপনে একত্র হয়ে সহিংসতা বা হামলার পরিকল্পনা করতে পারে- এমন আশঙ্কা রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর।
পুলিশ জানিয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে পুলিশের সব ইউনিটকে রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ, সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও যানবাহনের ওপর নজরদারি, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার এবং সাইবার গোয়েন্দা কার্যক্রম তীব্র জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন