ঢাকা সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

৮১ পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধন দিল ইসি

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৮, ২০২৫, ১০:৫৭ পিএম
নির্বাচন কমিশনের লোগো। ছবি- সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে ততই নির্বাচনি প্রস্তুতি জোরদার করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচনি প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে এবার পাঁচ বছরের জন্য ৮১টি দেশীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধন দিয়েছে সংস্থাটি। 

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ শাখা বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

জাতীয় নির্বাচন ঘিরে গত ২৮ সেপ্টেম্বর ইসি ৭৩টি সংস্থার নাম প্রাথমিক তালিকা হিসেবে প্রকাশ করে। এই সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে যেকোনো দাবি, আপত্তি বা অভিযোগ ২০ অক্টোবরের মধ্যে দাখিল করার আহ্বান জানানো হয়। অভিযোগ পাওয়ার পর নির্বাচন কমিশন তা যাচাই-বাছাই করে সংস্থাগুলোর যোগ্যতা যাচাই করে।

দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তির পর প্রথম ধাপে ৬৬টি সংস্থাকে চূড়ান্তভাবে অনুমোদন দেয় ইসি। তাদের নিবন্ধন কার্যকর হয়েছে ২০২৪ সালের ৬ নভেম্বর থেকে এবং চলবে ২০৩০ সালের ৫ নভেম্বর পর্যন্ত।

এরপর দ্বিতীয় ধাপে আরও ১৫টি সংস্থাকে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে অনুমোদন দেওয়া হয়। এই সংস্থাগুলোর নিবন্ধন কার্যকর হয়েছে ৪ ডিসেম্বর থেকে, যা কার্যকর থাকবে ২০৩০ সালের ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ফলে মোট নিবন্ধিত সংস্থার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮১টি।

ইসির তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নিবন্ধিত ৯৬টি পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন ‘নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা ২০২৫’ অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়েছে। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী নতুন করে নিবন্ধন দিতে হয়েছে সব সংস্থাকে।

বাংলাদেশে পর্যবেক্ষক নিবন্ধন প্রথার যাত্রা শুরু হয় ২০০৮ সালে নবম জাতীয় নির্বাচনের আগে। তখন ১৩৮টি সংস্থা নিবন্ধন পেয়েছিল এবং সেসব সংস্থার হয়ে ১ লাখ ৫৯ হাজারেরও বেশি পর্যবেক্ষক ভোট পর্যবেক্ষণ করেছিলেন, যা বাংলাদেশের নির্বাচনি ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অংশগ্রহণ। পরবর্তী নির্বাচনগুলোতে সংস্থার সংখ্যা কমে আসে।

  • ২০১৪ সালে দশম জাতীয় নির্বাচনে ৩৫ সংস্থার প্রায় ৯ হাজার পর্যবেক্ষক কাজ করেন।
  • ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ১১৮ নিবন্ধিত সংস্থার মধ্যে ৮১ সংস্থার ২৫,৯০০ পর্যবেক্ষক ভোট দেখেন।
  • ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ৮০টির মতো সংস্থার প্রায় ২০ হাজার পর্যবেক্ষক মাঠপর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেন।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশ-বিদেশে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা তুঙ্গে। রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলন, দাবি-দাওয়া, নিরাপত্তা পরিস্থিতি, ভোটার উপস্থিতি—সবকিছুর ওপরই নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষণের গুরুত্ব এখন আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি।

নির্বাচন কমিশন বলছে, পর্যবেক্ষকদের মাঠপর্যায়ের কার্যক্রম নির্বাচনি প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা, ভোটগ্রহণের মান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও সামগ্রিক নির্বাচনি পরিবেশ মূল্যায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে দেশীয় পর্যবেক্ষকদের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের আমন্ত্রণ জানানো হবে বলেও জানিয়েছে কমিশন।