ঢাকা শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৫

রূপগঞ্জে ৬’শ টাকা মূলধন থেকে কারখানার মালিক

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২৫, ১১:৫৯ এএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গ্রামের এক সাধারণ নারী উদ্যোক্তা রাশিদা বেগমের হাতে তৈরি ‘বিউটি বার’ এখন স্থানীয় জেলা শহর ছাড়িয়ে সারাদেশে পৌঁছাচ্ছে। শুরুতে পথ ছিল কঠিন, কিন্তু দক্ষতা, ধৈর্য ও সাহসিকতার কারণে তিনি সফলতার পথে এগিয়ে যাচ্ছেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, আতলাপুর এলাকায় রাশিদা বেগমের বাড়িতে প্রাকৃতিক উপাদানে ‘ফিহা নিম বিউটি বার’ তৈরি হচ্ছে। কস্টিক সোডা, সোডিয়াম সিলিকেট, নারকেল তেল, পারফিউম, গ্লিসারিন, কাঁচা হলুদ ও নিমপাতা দিয়ে সাবানের পেস্ট তৈরি করা হয়।

পেস্টটি বিশেষ ডাইসে ঢেলে বাতাসে শুকানো হয় এবং ২৯ দিন পর বিক্রি করা হয়। অনলাইনে অর্ডার করলেই কুরিয়ার মাধ্যমে পণ্যটি গ্রাহকের হাতে পৌঁছে যায়।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বিউটি বার ব্যবহারে চুলকানি, খোসপাঁচড়া ও ত্বকের বিভিন্ন সমস্যায় উপকার হচ্ছে। ফলে গ্রাহকরা পুনরায় পণ্যটি ব্যবহার করছেন।

নারী শ্রমিক নাসিম বেগম বলেন, ‘আমি প্রায় ৬ মাস ধরে এখানে কাজ করছি। নিজ হাতে কোল্ড পদ্ধতিতে বিউটি বার তৈরি করি এবং নিজেও উপকৃত হয়েছি। তবে, কোল্ড পদ্ধতিতে তৈরি হওয়ায় খরচ বেশি পড়ছে। সরকারি সহযোগিতা পেলে আরও নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হবে, যা কর্মসংস্থান এবং বেকারত্ব দূরীকরণে সহায়ক হবে।’

রাশিদা বেগমের গল্প নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য অনুপ্রেরণার উদাহরণ। মাত্র ৬’শ টাকা পুঁজি দিয়ে শুরু হওয়া এই উদ্যোগ ধীরে ধীরে দেশের বাজারে নাম করে চলেছে।

নারী উদ্যোক্তা রাশিদা বেগম বিসমিল্লাহ হোমিও হল পরিচালনা করছিলেন। ২০২৩ সালে স্থানীয় সড়ক প্রশস্তকরণের কারণে তার দোকান ভেঙে প্রায় বন্ধ হয়ে যায় ব্যবসা।

পাশাপাশি স্বামী প্রবাসে থাকায় অর্থনৈতিক সংকটে পড়েন তিনি। একমাত্র সন্তান তাবাসুম ফিহার চর্মরোগের সমস্যা সমাধানে কাঁচা হলুদ ও নিমপাতা ব্যবহার করে অল্প দিনের মধ্যে সফলতা পেয়ে রাশিদা উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখে।

মাত্র ৬’শ টাকায় শুরু হওয়া এই উদ্যোগ ধীরে ধীরে সফলতার পথে এগুচ্ছে। তবে, মোড়কজাতকরণ ও সিএম/লাইসেন্স না থাকায় ব্যবসার সম্প্রসারণে বাধা রয়েছে। তিনি সরকার ও সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

ভোলাব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন টিটু বলেন, ‘রাশিদা সোপ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছেন। তার তৈরি বিউটি বারের গুণগত মান যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে ভালো হবে।’