ফরজ গোসল ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ শারঈ বিধান। পবিত্রতা অর্জনের জন্য আল্লাহ তাআলা পূর্ণ শরীর ধোয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। অনেক নারীই জানতে চান, ফরজ গোসলের সময় লম্বা চুল কিভাবে ধুতে হবে? এ বিষয়ে ইসলামী বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা রয়েছে।
গোসল শব্দের অর্থ পুরো শরীর ধোয়া। শরিয়তের দৃষ্টিতে পবিত্রতা ও ইবাদতের উপযুক্ততা অর্জনের উদ্দেশ্যে পানির মাধ্যমে শরীর ধোয়াকেই গোসল বলা হয়।
গোসলের ফরজ তিনটি: (১) কুলি করা, (২) নাকে পানি পৌঁছানো, এবং (৩) শরীরের প্রতিটি অংশে পানি পৌঁছানো। কোনো অংশ শুকনো থাকলে গোসল শুদ্ধ হবে না।
মহান আল্লাহ বলেন: ‘যদি তোমরা অপবিত্র হও, তাহলে ভালোভাবে পবিত্রতা অর্জন করো।’(সূরা মায়েদা, আয়াত: ৬)
নারীদের চুল ধোয়ার নিয়ম: সাধারণভাবে নারীদের চুল খোলা থাকলে তা পুরোপুরি ধোয়া ফরজ। চুলের কোনো অংশ শুকনো থাকলে গোসল সহিহ হবে না। তবে যদি চুলে শক্ত বেণি বা খোঁপা বাঁধা থাকে এবং তা খুলে ধোয়া কষ্টকর হয়, সে ক্ষেত্রে শুধু চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছানো যথেষ্ট।
এ বিষয়ে সাহাবিয়া হজরত উম্মে সালামা (রা.)-এর বর্ণনায় এসেছে, তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘আমি চুলে শক্ত বেণি বাঁধি, গোসলের সময় কি তা খুলতে হবে?’ রাসুল (সা.) উত্তরে বলেন:
‘না। তুমি মাথায় তিন আঁজলা পানি ঢেলে দাও এবং শরীর ভিজিয়ে নাও, তাহলেই যথেষ্ট।’(সহিহ মুসলিম: ২৩০)
ফিকহের ব্যাখ্যা: প্রখ্যাত হানাফি ফিকহগ্রন্থ বাহরুর রায়েক-এ বলা হয়েছে: ‘যদি বেণি খোলা কষ্টকর হয়, তাহলে চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছানোই যথেষ্ট। তবে যদি খোলা অবস্থায় চুল থাকে, তাহলে সব চুল ধোয়া ফরজ-এ ব্যাপারে ইজমা রয়েছে।’ (বাহরুর রায়েক: ১/৫৪)
তবে শরীর ও চুল ভালোভাবে ধুয়ে গোসল করাই উত্তম, যেন কোনো জায়গায় পানি পৌঁছাতে বাদ না পড়ে। ইসলাম পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতায় যত্নবান হওয়ার নির্দেশ দেয়।
আপনার মতামত লিখুন :