কোরবানির পশু কেনার পর সঠিক পরিচর্যা ও যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি, যাতে পশুটি সুস্থ, সবল ও কোরবানির উপযোগী থাকে। ইসলামী শরিয়ত এবং সাধারণ অভিজ্ঞতা অনুযায়ী পশুকে ভালোভাবে রাখা আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
পরিষ্কার ও আরামদায়ক স্থান নিশ্চিত করুন
কোরবানির পশুকে এমন জায়গায় রাখা উচিত যা পরিষ্কার, শীতল ও পর্যাপ্ত আলো-বাতাসযুক্ত। গরম বা আর্দ্র পরিবেশে পশুর অসুস্থতার ঝুঁকি বাড়ে। নিয়মিত খোলামেলা জায়গায় রেখে পশু যাতে পর্যাপ্ত শ্বাস-প্রশ্বাস পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
স্বাস্থ্যকর খাদ্য ও পানি সরবরাহ করুন
পশুর জন্য পুষ্টিকর খাদ্য দেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। ভালো মানের ঘাস, চারা, ও যথাযথ পরিমাণ খড় ও চারা দিয়ে নিয়মিত খাবার দিতে হবে। পাশাপাশি পরিষ্কার ও ঠান্ডা পানি যেন অবিরত পায়, সেটা নিশ্চিত করুন। খাদ্যের মধ্যে যেন কোনো ধরনের বিষাক্ত বা কেঁচো-মাকড় না থাকে, তা খেয়াল রাখতে হবে।
নিয়মিত পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও যত্ন
পশুর নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিত। যেকোনো অসুস্থতা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা করানো গুরুত্বপূর্ণ। শরীরের যেকোনো ত্রুটি- যেমন চোখে ফোঁড়া, কান বা পায়ের সমস্যা থাকলে তা তাড়াতাড়ি শনাক্ত করে চিকিৎসা দিতে হবে।
পর্যাপ্ত চলাফেরা ও ব্যায়াম
পশু যেন অল্প হলেও নিয়মিত চলাফেরা করতে পারে, তার ব্যবস্থা করতে হবে। দীর্ঘদিন কোনো পশু স্থির অবস্থায় থাকলে দুর্বল হয়ে যেতে পারে। সুতরাং পশুকে গৃহের আশপাশে হাঁটাচলা করানোর ব্যবস্থা রাখতে হবে।
পরিবেশগত ঝুঁকি থেকে রক্ষা
পশুকে ধুলো, গরম রোদ, বৃষ্টিপাত, মশা ও অন্যান্য পরজীবী থেকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। বিশেষ করে গরমকালে ছায়াযুক্ত জায়গায় রাখা ও মশারি দেওয়া জরুরি।
পশুর প্রতি দয়া ও মমত্ববোধ
ইসলামে পশুদের প্রতি সদয় হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো প্রাণীর প্রতি দয়া দেখায়, আল্লাহ তার প্রতি দয়া করেন।’ (সহীহ বুখারি)
কোরবানির পশুর সঙ্গে সদয় ব্যবহার করলে পশু কম রোগাক্রান্ত হয় এবং কোরবানি কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
কোরবানির পশু কেনার পর তার সঠিক যত্ন ও পরিচর্যা অত্যন্ত জরুরি। সুস্থ ও শক্তিশালী পশু কোরবানির জন্য আদর্শ। তাই পরিষ্কার পরিবেশ, পুষ্টিকর খাদ্য, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও মমত্ববোধ প্রদর্শন করে পশুর যত্ন নিলে কোরবানি ইবাদত আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য হয়।