কোরবানি আর্থিক ইবাদত। আল্লাহ তাআলা রাজি-সন্তুষ্টি করার জন্য ও ইবরাহিম (আ.)-এর সুন্নত পালনের জন্য কোরবানি করা হয়। যারা সামর্থ্যবান, তাদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব। কোরবানি দেওয়ার আগে এই বিষয়ে বিভিন্ন মাসআলা জেনে রাখা জরুরি।
পাঠকদের জন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মাসআলা উল্লেখ করা হলো-
মৃতের পক্ষ থেকে কোরবানি
মৃতের পক্ষ থেকে কোরবানি করা জায়েজ। মৃত ব্যক্তি যদি অসিয়ত না করে থাকে, তবে সেটি নফল কোরবানি হিসেবে গণ্য হবে। কোরবানির স্বাভাবিক গোশতের মতো তা নিজেরাও খেতে পারবে; আত্মীয়-স্বজনকেও দিতে পারবে। আর যদি মৃত ব্যক্তি কোরবানির অসিয়ত করে থাকে, তাহলে এর গোশত নিজেরা খেতে পারবে না। বরং গরিব-মিসকিনদের মাঝে সদকা করে দিতে হবে। (মুসনাদে আহমাদ : ১/১০৭, হাদিস ৮৪৫; ইলাউস সুনান : ১৭/২৬৮; রদ্দুল মুহতার : ৬/৩২৬; ফাতাওয়া কাজিখান : ৩/৩৫২)
অন্য কারো ওয়াজিব কোরবানি আদায় করা
অন্যে কোনো ব্যক্তির ওয়াজিব কোরবানি দিতে চাইলে- ওই ব্যক্তির অনুমতি নিতে হবে। অনুমতি নিলে করলে- ওই ব্যক্তির কোরবানি আদায় হয়ে যাবে। নতুবা ওই ব্যক্তির কোরবানি আদায় হবে না। অবশ্য স্বামী বা পিতা যদি- স্ত্রী বা সন্তানের বিনা অনুমতিতে তার পক্ষ থেকে কোরবানি করে, তাহলে তাদের কোরবানি আদায় হয়ে যাবে। তবে অনুমতি নিয়ে আদায় করা ভালো।
কোরবানির গোশত ও চর্বি বিক্রির বিধান
কোরবানির গোশত ও চর্বি ইত্যাদি বিক্রি করা জায়েজ নেই। বিক্রি করলে- পূর্ণ মূল্য সদকা করে দিতে হবে। (ইলাউস সুনান : ১৭/২৫৯; বাদায়িউস সানায়ি : ৪/২২৫; ফাতাওয়া কাজিখান : ৩/৩৫৪; আলমগিরি : ৫/৩০১)
প্রবাসী কোরবানি অন্য কোথাও করা
বিদেশে অবস্থানরত ব্যক্তির জন্য নিজ দেশে বা অন্য কোথাও কোরবানি করা জায়েজ। এ ছাড়াও কোরবানিদাতা এক স্থানে আর কোরবানির পশু ভিন্ন স্থানে থাকলে কোরবানিদাতার ঈদের নামাজ পড়া বা না পড়া ধর্তব্য নয়; বরং পশু যে এলাকায় আছে ওই এলাকায় ঈদের জামাত হয়ে গেলে পশু জবাই করা যাবে। (আদ্দুররুল মুখতার : ৬/৩১৮)
কোরবানি করতে না পারলে যা করবেন
কেউ যদি কোরবানির দিনগুলোতে কোনো কারণে ওয়াজিব কোরবানি দিতে না পারে, তাহলে তিনি যদি কোরবানির পশু যদি কিনে না থাকেন, তখন তার ওপর কোরবানির উপযুক্ত একটি ছাগলের মূল্য সদকা করা ওয়াজিব। আর যদি পশু ক্রয় করে থাকে, কিন্তু কোনো কারণে কোরবানি দেওয়া হয়নি, তাহলে ওই পশু জীবিত সদকা করে দেবে। (বাদায়িউস সানায়ি : ৪/২০৪; ফাতাওয়া কাজিখান : ৩/৩৪৫)