আমাদের দেহের সুস্থতার সঙ্গে খাদ্য ও পুষ্টি দুটিই জড়িত। খাদ্য আমাদের শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে প্রধান ভূমিকা পালন করে। পুষ্টিবিজ্ঞানে বলা হয়ে থাকে, আমরা যা খাই, আমরা তাই হয়ে উঠি।
পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান হিসেবে এ বিষয়েও ইসলামে রয়েছে সুনির্দিষ্ট কিছু সুন্নত, আদব ও বিধি-বিধান। অর্থাৎ, ইসলামে খাদ্যগ্রহণকেও ইবাদতের অংশ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। তবে আমাদের সমাজে একটি কথা প্রচলিত আছে যে, ‘খাবার গ্রহণকালে কথা বলা যাবে না। এটা হাদিসে নিষেধ।’ তাই অনেকেই জানতে চান, ‘খাদ্যগ্রহণকালে কথা বলা আসলেই কি হাদিসে নিষেধ? এমনটি করলে কি গোনাহ হয়?’
চলুন তাহলে জেনে নিই
প্রখ্যাত ইসলামী স্কলার শায়খ আহমাদুল্লাহ জানান, খাওয়ার সময় কথাবার্তা বলা নিষিদ্ধ নয়। ভাত খাওয়া আর নামাজ পড়া সমান- এ অর্থে হাদিসের নামে আমাদের সমাজে যা প্রচলিত আছে, তা বানোয়াট। মানুষের মনগড়া কথাবার্তা। বরং বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত বিভিন্ন হাদিস থেকে বোঝা যায়, আল্লাহর রাসুল (সা.) ও তার সাহাবিরা খাওয়ার সময় কথাবার্তা বলতেন।
আহমাদুল্লাহ বলেন, বোখারি ও মুসলিমে বর্ণনা করা হয়েছে, একবার নবীজি (সা.) খাবার খাচ্ছিলেন। এমন সময় তিনি (সা.) বলেন, ‘কেয়ামতের দিন আমি মানুষদের সর্দার হিসেবে আবির্ভূত হবো।’ এই হাদিস থেকে বোঝা যায় যে, নবীজি (সা.) খাবার খেতে বসে কথা বলেছেন। তাই খাওয়ার সময় কথাবার্তা বলা যেতে পারে, গোনাহ হওয়ার কোনো কারণ নেই। হ্যাঁ, অতিরিক্ত কথা বললে যদি কারও ক্ষতি হয়, তবে বিরত থাকা উচিত।
খাওয়ার সময় সালাম দেওয়া বা নেওয়া যাবে কি?
আহমাদুল্লাহ বলেন, সালাম দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নেক আমল। যে ব্যক্তি সালাম দেন, তাকে ন্যূনতম ১০টি নেকি দান করা হয়। কিন্তু যারা মনে করেন, খাওয়ার সময় সালাম দেওয়া যাবে না—তাদের এই ধারণা ভুল।
তিনি বলেন, আসলে সালাম যে কোনো স্বাভাবিক অবস্থায় দেওয়া যেতে পারে। খাবার খাওয়াও এমন একটি সময় যেখানে খাদ্যগ্রহণকালে সালাম দেওয়া যেতে পারে, নেওয়াও যেতে পারে।