শুক্রবার, ০২ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


শাহীনুর ইসলাম শানু

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৪, ০৫:১৬ পিএম

টাকা লোপাটে পলাতক বাচ্চুর নামে পরোয়ানা

শাহীনুর ইসলাম শানু

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৪, ০৫:১৬ পিএম

টাকা লোপাটে পলাতক বাচ্চুর নামে পরোয়ানা

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

একই মামলায় বেস্ট হোল্ডিংস গ্রুপের চেয়ারম্যান আমিন আহমেদ দুই মাস জেলহাজত শেষে ৮ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্ত
৩০ কাটা জমি ১১০ কোটি টাকা ক্রয়চুক্তি করে ১৫ কোটি ২৫ লাখ টাকায় দলিল সম্পন্ন
৮ কোটি ৫২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা রাজস্ব ফাঁকি এবং ৯৫ কোটি টাকা গোপন করেন তারা


বেসিক ব্যাংকের সাবেক পলাতক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চু ও তার পরিবারের চার সদস্যের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুদকের অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে আবদুল হাই বাচ্চুসহ পলাতক পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালত এই আদেশ দেন।

ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন গতকাল বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। তার আগে একই মামলায় লা মেরিডিয়ান হোটেলের মালিক আমিন আহমেদকে আটক করে ১১ জুলাই জেলহাজতে পাঠিয়েছিলেন আদালত এবং ৮ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্ত হন তিনি। ২০১২ সালের ৮ আগস্ট তিনি বেস্ট হোল্ডিংস গ্রুপের চেয়ারম্যান আমিন আহমেদের সঙ্গে গুলশান সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের মাধ্যমে ১১০ কোটি টাকায় জমি ক্রয়ের চুক্তি করেন। চুক্তি অনুসারে প্রায় ৯৫ কোটি টাকা গোপন করার চেষ্টা ও সাড়ে ৮ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ সম্পর্কে গতকাল বৃহস্পতিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মীর আহমেদ আলী সালাম।

তিনি বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের মামলায় গত বছরের ২ অক্টোবর সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চু, লা মেরিডিয়ানের মালিক আমিন আহমেদসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। এর মধ্যে আমিন আহমেদ ৮ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্ত হন। এ ছাড়া আবদুল হাই ও তার পরিবারের সদস্যরা পলাতক রয়েছেন। আদালত দুদকের দেওয়া অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে পলাতক আবদুল হাইসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন। পরোয়ানা জারির আগে গত বছরের ১৫ নভেম্বর বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঘটনায় জড়িত শেখ আবদুল হাই ওরফে বাচ্চু ও তাঁর পরিবারের চার সদস্যের সম্পদ জব্দের (ক্রোক) আদেশ দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত।

মামলায় বলা হয়, আবদুল হাই নিজ নামে এবং তাঁর স্ত্রী ও ছেলেমেয়ের নামে ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট বাজার এলাকায় ৩০ দশমিক ২৫ কাঠা জমি কিনেছিলেন। জমির প্রকৃত দাম ছিল ১১০ কোটি টাকা। যদিও তিনি দর দেখান মাত্র ১৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা। জমির দাম কম দেখিয়ে ৯৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা মানি লন্ডারিং করা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী অপরাধ। জমি ক্রয় দেখিয়ে আত্মসাতের প্রায় ৯৫ কোটি টাকা গোপন করার চেষ্টা ও সাড়ে ৮ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ রয়েছে আমিন আহমেদের বিরুদ্ধে।

বাচ্চু ও তার পরিবার এখন দেশান্তর। তার আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় লা মেরিডিয়ান হোটেলের মালিক আমিন আহমেদ ১১ জুলাই আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। প্রায় দুই মাস হাজতবাসের পরে ৮ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্ত হন তিনি।

জানা যায়, বাগেরহাট-১ আসন থেকে ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টির মনোনয়নে সংসদ সদস্য হন শেখ আবদুল হাই বাচ্চু। আওয়ামী লীগ সরকার প্রথম মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বরে বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে তিন বছরের জন্য নিয়োগ পান তিনি।

সেই মেয়াদের শেষ দিকে ২০১২ সালের ৮ আগস্ট তিনি বেস্ট হোল্ডিংস গ্রুপের চেয়ারম্যান আমিন আহমেদের সঙ্গে গুলশান সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের অধীন ক্যান্টনমেন্ট বাজার এলাকার লালসরাইস্থিত মৌজার ৬নং প্লটের ৩০ দশমিক ২৫ কাঠা ভূমি ক্রয়ের জন্য সমঝোতা চুক্তিপত্র সম্পাদন করেন। চুক্তি অনুযায়ী মূল্য ধরা হয় ১১০ কোটি টাকা। পরে চুক্তিপত্র অনুযায়ী, ২০১২ সালের ১৬ অক্টোবর দুটি দলিল মোতাবেক ভূমির দলিল রেজিস্ট্রি করা হয়। যার মধ্যে ৮০৮৮৫নং দলিলে ১৮ কাঠা জমি রেজিস্ট্রি হয়। যার মূল্য ধরা হয় ৯ কোটি টাকা। এই দলিলের গ্রহীতারা হলেন শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু, তার ভাই শেখ শাহরিয়ার পান্না ও স্ত্রী মিসেস শিরিন আক্তার। অপরদিকে ৮০৮৮৬নং দলিলে ১২ দশমিক ২৫ কাঠা জমি রেজিস্ট্রি করা হয়। যার মূল্য ধরা হয় ৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এই দলিলের গ্রহীতা আব্দুল হাই বাচ্চুর দুই ছেলে শেখ ছাবিদ হাই অনিক ও শেখ রাফা হাই। তাই দুটি দলিলে জমির মোট রেজিস্ট্রেশন মূল্য দাঁড়ায় ১৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা।

অথচ জমি ক্রয় বাবদ আসামি শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু ১৩৪টি পে-অর্ডারের মাধ্যমে সর্বমোট ৭৮ কোটি ৫০ লাখ এবং নগদে ৩১ কোটি ৫০ লাখ, অর্থাৎ মোট ১১০ কোটি টাকা আসামি আমিন আহমেদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে পরিশোধ করেন। যা আসামি আমিন আহমেদ বুঝে পেয়েছেন মর্মে স্বীকার করেন।

এর মাধ্যমে আসামি শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু তার স্ত্রী, ভাই ও সন্তানদের নামে ৯৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা হস্তান্তর, স্থানান্তর, রূপান্তর, ছদ্মাবরণের মাধ্যমে অপরাধলব্ধ অর্থ গোপন করেছেন। আর ১১০ কোটি টাকায় ক্রয় করা সত্ত্বেও ১৫ কোটি ২৫ লাখ টাকায় দলিল করে আসামি শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু সরকারের ৮ কোটি ৫২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছেন। আসামি আমিন আহমেদ আসামি শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুর অবৈধ অর্থ বৈধতা প্রদানে সরাসরি সহায়তা করেছেন।

এর মাধ্যমে আসামিরা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এর আগে ২০২৩ সালের ৩ অক্টোবর দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক নুরুল হুদা বাদী হয়ে মামলা করেন।

আরবি/জেডআর

Link copied!