বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মাইনুল হক ভূঁইয়া ও দেলোয়ার হোসেন

প্রকাশিত: নভেম্বর ৮, ২০২৪, ১০:১০ পিএম

যশোর বিমানবন্দর

আউটসোর্সিংয়ের নামে ভয়াবহ জালিয়াতি

মাইনুল হক ভূঁইয়া ও দেলোয়ার হোসেন

প্রকাশিত: নভেম্বর ৮, ২০২৪, ১০:১০ পিএম

আউটসোর্সিংয়ের নামে ভয়াবহ জালিয়াতি

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

যশোর বিমানবন্দরের দুর্নীতির শিকড় যেন কিছুতেই উপড়ে ফেলা যাচ্ছে না। হোতা ম্যানেজার মাসুদকে ঢাকায় বদলি করা হলেও দুর্নীতি তার পিছু ছাড়ছে না। তার বদলিতে মিষ্টি বিতরণ করেছেন কর্মচারীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যশোর বিমানবন্দরের দুর্নীতিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন কয়েকজন প্রকৌশলীসহ কেরানি আব্দুস সামাদ। উপসহকারী প্রকৌশলী ই এম শামীম আল মামুনের বিরুদ্ধে রয়েছে দুর্নীতির অসংখ্য অভিযোগ। বদলির পরও তিনি আবার যশোর বিমানবন্দরে বহাল।

এদিকে টেন্ডার ছাড়াই আউটসোর্সিংয়ের কাজ করছে পতিত আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াকুব আলির আপন ভাই মুমিনুর রহমান জিহাদের প্রতিষ্ঠান ‘একতা এন্টারপ্রাইজ’। বারবার নবায়ন করে যাচ্ছে তার নিবন্ধন।

শুধু সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াকুবের ভাই নন, আওয়ামী দোসররাই বিভিন্ন বিমানবন্দরের মতো যশোর বিমানবন্দরেও লাউঞ্জ, দোকানপাট, বিজ্ঞাপনি বোর্ড বছরের পর বছর নবায়ন করে চালাচ্ছেন। নতুন করে কোনো টেন্ডার আহ্বান করা হচ্ছে না। এতে সরকার হারাচ্ছে মোটা অঙ্কের রাজস্ব। অভিনেত্রী শমী কায়সার, অভিনেতা মাহফুজের যশোর বিমানবন্দর লাউঞ্জও নবায়ন করা হয়েছে। ঢাকা শাহজালাল বিমানবন্দরসহ দেশের সব বিমানবন্দরে আওয়ামী দোসরদের রাজত্ব চলছে।

এদিকে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে কটূক্তি করার অপরাধে শমী কায়সারের নামে যশোর আদালতে মামলা হয়েছে। ই-কমার্স থেকেও পদত্যাগ করেছেন শমী।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, শমী কায়সার বেবিচকের আগের চেয়ারম্যানের অফিসে বসে প্রভাব বিস্তার করে দেশের বিভিন্ন এয়ারপোর্টে লাউঞ্জ বরাদ্দ নিতেন। শাহজালাল বিমানবন্দরে মাত্র ৬০ লাখ টাকায় লাউঞ্জ বরাদ্দ নিয়ে ২ কোটি ৬০ লাখ টাকায় সিটি ব্যাংককে ভাড়া দিয়েছেন। বেবিচক সেই লাউঞ্জ আবার গত আগস্টে নবায়ন করেছে। এর দায়ে ডিডি মোহন্ত ও মেম্বার অপসকে বদলি করা হয়েছে। কিন্তু শমীর লাউঞ্জ বরাদ্দ এখনো বাতিল করা হয়নি। বস্তুত আওয়ামী দোসরদের নামে থাকা কোনো লাউঞ্জের বরাদ্দই বাতিল করা হয়নি। বেবিচক একটার পর একটা নবায়ন করে যাচ্ছে।

ওদিকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদে চাকরি পাওয়া যশোর এয়ারপোর্টে কর্মরত উপসহকারী প্রকৌশলী ই এম শামীম আল মামুন অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে প্রতি মাসে হাতিয়ে নিচ্ছেন অর্থ। 

রূপালী বাংলাদেশের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ১২৫টা রানওয়ের পিটে ১২৫টা আর্থিং বাজ বার ও তামার তার সংযোগ না দিয়ে তিনি বিল তুলে নিচ্ছেন, যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৪ লাখ টাকা।

৮০ ফুট করে নতুন ৪১টা আর্থিং বোরিং ও পিট (২৪ বাই ২৪, ১০ ইঞ্চি ইটের গাঁথুনি) করার কথা। কিন্তু আর্থিং বোরিং করা হয়েছে ২০ ফুট করে, তাও আবার করা হয়েছে ১৬টি। প্রতিটি আর্থিং পিট থেকে হাজার হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন শামীম। এর বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ১০ লাখ টাকা। এর পুরোটিই আত্মসাৎ করা হয়েছে।

তিনি তার শ্বশুরকে সাবকন্ট্রাক্টে ঠিকাদারি কাজ পাইয়ে দিয়েছেন। বগুড়ায় ডেইরি ফার্ম ও শ্যালকের নামে গাড়ির শোরুম, গাজীপুরে পাঁচতলা বাড়ি এ ধরনের অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তিনি। লেবার সর্দার শহিদুলের টাকা মেরে দেওয়া ইত্যাকার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, যশোর বিমানবন্দরে সাবেক সাংসদ ইয়াকুবের ভাই জিহাদের প্রতিষ্ঠান একতা এন্টারপ্রাইজের নামে পরিচ্ছন্নতা কাজের আউটসোর্সিং কাজ ক্রমাগত নবায়ন করে যাচ্ছে বেবিচক। বেবিচক থেকে প্রদেয় টাকার প্রায় অর্ধেক কর্তন করে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বেতন দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাও আবার আড়াই মাস যাবৎ পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বেতন বকেয়া। বেতন চাইতে গেলে চাকরিচ্যুতির হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। বেতনের এই অর্ধেক টাকা ম্যানেজার, কেরানি সামাদ ও কোম্পানি পারস্পরিক যোগসাজশে লুটপাট করা হচ্ছে।

যশোর বিমানবন্দরে কার পার্কিংও সিন্ডিকেটের দখলে। এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন কেরানি সামাদ, পিয়ন মফিজ। সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। পকেট ভারী হচ্ছে ম্যানেজার, কেরানি সামাদ ও পিয়ন মফিজের। এই সিন্ডিকেট সদস্যরা গাড়ি পার্কিংয়ের সময় টিকিট দেন না। গাড়ি বের হওয়ার সময় টাকা নিয়ে গাড়ি ছেড়ে দেন। এই চিত্র নিত্যদিনের।

বিমানবন্দরের ম্যানেজার সাইদুর রহমান আওয়ামী আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত। ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পার্শ্ববর্তী এলাকার লোক তিনি। আওয়ামী লীগ সরকারের পছন্দের পদায়নকৃত। পিয়ন মফিজ, আল হেলাল ম্যানেজারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।

কর্মকর্তাদের নামে বরাদ্দকৃত বাসা আল হেলালের নামে কর্মচারী কোটায় বরাদ্দ নিয়ে ম্যানেজার বসবাস করছেন। আল হেলাল তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হলেও কর্মকর্তাদের বাসা তার নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সেই বাসায় ম্যানেজার বসবাস করে থাকেন।

আরবি/জেডআর

Link copied!