বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মার্চ ১৭, ২০২৫, ১২:৪৫ এএম

হাসিনা-রেহানার বন্ধু পরিচয়ে ওবিই’র লুটপাট

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মার্চ ১৭, ২০২৫, ১২:৪৫ এএম

হাসিনা-রেহানার বন্ধু  পরিচয়ে ওবিই’র লুটপাট

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শেখ হাসিনা-রেহানার ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে পরিচিত ইকবাল আহমেদ ওবিইকে নিয়ে ব্রিটেনে শুরু হয়েছে নানা বিতর্ক। পতিত সরকারের আমলে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সীমার্ক গ্রুপের আড়ালে দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। 

ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্সের (এফএটিএফ) সাম্প্রতিক রিপোর্টে এই অর্থ পাচারের অভিযোগ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টি করে। বাংলাদেশকে ‘ধূসর তালিকা’ থেকে মুক্ত করতে ওবিই’র কেলেংকারির বিচার দ্রুত করার পরামর্শ দিয়েছে। শুধু তাই নয়, এর আগে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি চেম্বার অব কমার্সে অনিয়ম করে ২শ হাজার পাউন্ড গায়েবের অভিযোগে দেশটির আদালত ইকবাল আহমেদকে ৫ লাখ পাউন্ড জরিমানা করে এবং চেম্বার অব কমার্স থেকে আজীবন বহিষ্কার করে।

নানা অনিয়মের হোতা এই অবি’র উত্থান সম্পর্কে জানতে নানা মহলে কথা বলে রূপালী বাংলাদেশ। সূত্র জানায়, তিনি বিগত এক দশক ধরে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়ে রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে নিজের অবস্থান গড়ে তোলেন।

তার ফেসবুক প্রোফাইলজুড়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে অসংখ্য ছবি শেয়ার করা হতো, যা তাকে ‘হাসিনা বিশ্বস্ত’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল। শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার শীর্ষ ২০ জন অর্থদাতার মধ্যে ওবিইও একজন। কিন্তু ক্ষমতার পট পরিবর্তনে ভোল পাল্টেছেন এই ওবি। 

এখন নিজেকে আওয়ামীবিরোধী ও বর্তমান সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে তার যোগাযোগ রয়েছে সেই দাবি করছেন। প্রধান উপদেষ্টাসহ একাধিক উপদেষ্টার সঙ্গে ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দিয়ে প্রভাব বিস্তার করতে চাচ্ছেন। 

সূত্র আরও জানায়, ইকবাল আহমেদ ওবিই’র সীমার্ক গ্রুপের প্রধান ব্যবসা হলো মাছ ব্যবসা। তিনি বাংলাদেশ থেকে মাছ আমদানি করে ব্রিটেনে নিতেন। এই মাছের আড়ালে বিভিন্ন ইলেকট্রনিকস ও সোনা চোরাচালানের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন তিনি।

বাংলাদেশের একটি প্রভাবশালী পরিবারের সদস্য হিসেবে পরিচিত এই ব্যক্তি, বিদেশে বিশেষ করে লন্ডন ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ব্যাপক সম্পদের মালিকানা গড়ে তুলেছেন। শুধু লন্ডনেই তার প্রায় দু’ডজন বাড়ি ও অত্যাধুনিক প্রপার্টি রয়েছে, যা মূলত বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ দিয়ে ক্রয় করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। 

এই সম্পদের পরিমাণ শত শত কোটি টাকারও বেশি, যা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের করের টাকা ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ থেকে উৎসারিত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

লন্ডনে এই ব্যক্তির ভাই ও ভাতিজাসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা বিভিন্ন কোম্পানি পরিচালনা করে আসছেন। তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা কোম্পানিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ইবকো হোল্ডিংস লিমিটেড, মাই ইনভেস্টমেন্ট হোল্ডিংস লিমিটেড, ভারমিলিওন গ্রুপ লিমিটেড, ফ্লায়িং ইউনিকর্ন লিমিটেড, ওপেন হাও হোল্ডিংস লিমিটেড, ইবকো লিমিটেড, সিমার্ক পিএলসিসহ মোট ১৪টি কোম্পানি। 

এই কোম্পানিগুলো মূলত রিয়েল এস্টেট, বিনিয়োগ ও আর্থিক লেনদেনের সাথে জড়িত। শেখ রেহানাসহ শেখ পরিবারের অন্য সদস্যদের নামেও এই কোম্পানিগুলোতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করা হয়েছে।

ইকবাল আহমেদের ক্ষমতার জোরে করেছেন নানা অভাবনীয় কাণ্ডও। ব্রিটিশ-বাংলাদেশি চেম্বার অব কমার্সে অনিয়ম করে গায়েব করেন ২শ হাজার পাউন্ড। এরপর ব্রিটিশ-বাংলাদেশি চেম্বার অব কমার্সের নেতৃবৃন্দ ইকবাল আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা করলে ইকবাল আহমেদ মামলায় হেরে যান। 

দেশটির আদালত ইকবাল আহমেদের ওপর ৫ লাখ পাউন্ড জরিমানা করেন এবং চেম্বার অব কমার্স থেকে আজীবন বহিষ্কার করেন। এর আগে ব্রিটেনের কনজারভেটিভ পার্টির গোপন অর্থ দাতা ওবিই দলটিকে ১২ হাজার পাউন্ড ডোনেশন দেওয়ার পর খরচ ফেরতের দাবি করে বিতর্কিত হয়েছেন। 

ডেইলি মেইলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই দাতা তার বিলাসবহুল জীবনযাত্রার জন্য পার্টির তহবিল ব্যবহারের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। তার এই আচরণ নিয়ে ব্রিটিশ রাজনীতিতে সমালোচনার ঝড় উঠেছে, যেখানে জনগণের করের টাকা দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তীব্র হয়েছিল। 

এই ঘটনাকে ঘিরে দলটির অভ্যন্তরীণ আর্থিক নীতিমালা ও নৈতিকতা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছিল। স্থানীয় গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর অর্থায়নে কঠোর নিয়মকানুন ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছিল।

এদিকে, ওবিই’র অর্থপাচারের অভিযোগ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের সাম্প্রতিক রিপোর্টে বাংলাদেশকে ‘ধূসর তালিকা’ থেকে মুক্ত করতে ওবি’র কেলেঙ্কারি দ্রুত বিচারাধীন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, একজন ব্যক্তির মাধ্যমে এত বড় আকারের দুর্নীতি সম্ভব হয় শুধু রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায়। সরকারের উচিত এই নেটওয়ার্কের মূল হোতাদের বিচারের আওতায় আনা। তবে এ বিষয়ে ইকবাল আহমদ ওবি’র সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। 
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!