থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে অন্যতম অংশগ্রহণকারী দেশ বাংলাদেশ। বাংলাদেশসহ আরও ৭টি দেশের অংশগ্রহণে এই অঞ্চলের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক নানা বিষয় নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই সম্মেলন।
কিন্তু বাংলাদেশের জন্য এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পার্শ্ব বৈঠক।
গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী দুই দেশের মধ্যকার তৈরি হওয়া শিথিল সম্পর্কের বরফগলা এ বৈঠকের মধ্য দিয়েই শুরু হয়েছে বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, দুই সরকারপ্রধানের বৈঠক পরবর্তীতে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সূত্রপাত হিসেবে দেখা যেতে পারে।
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশটিতে আশ্রিত থাকায় এই দুই নেতার মধ্যে বৈঠকই সম্ভব নয়Ñ এমন গুঞ্জনের মধ্যেও শেষ পর্যন্ত সফলভাবে বৈঠকটি হওয়ায় আশার আলো দেখছেন তারা।
এই বৈঠকের মাধ্যমে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনাসহ দেশটির সঙ্গে অন্যান্য রাজনৈতিক এবং ব্যাবসায়িক সম্পর্কের দ্বার পুনরায় স্বাভাবিক হতে পারে বলেও মনে করছেন তারা।
খোদ প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর জানিয়েছে, শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দিতে ভারতের কোনো নেতিবাচক মনোভাব নেই। ফলে দেশে ফিরিয়ে এনে তার বিচার সম্ভব বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
কাঙ্ক্ষিত বৈঠক
থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের সাংরিলা হোটেলে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের শুরু থেকেই আলোচনায় ছিল অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদির বৈঠক।
কিন্তু যেহেতু গত বছরের আগস্ট মাস থেকে দেশটির সঙ্গে রাজনৈতিক নানা বিষয়ে শিথিল সম্পর্ক তৈরি হয়েছে তাই শেষ পর্যন্ত বৈঠকটি হবে কি না তা নিয়ে দ্বিধান্বিত ছিলেন অনেকেই।
অবশেষে সম্মেলন শেষে গত শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুরের পর প্রতিবেশী দুই দেশের শীর্ষ নেতা বৈঠকে বসেন। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে অধ্যাপক ইউনূসের এটিই ছিল প্রথম বৈঠক।
আলোচনায় যা ছিল
বৈঠকের ছবি বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরপরই দেশের সাধারণ মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে কি কথা হলো তাদের দুজনের। বিশেষ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশটিতে যেহেতু পলাতক অবস্থায় অবস্থান করছেন তাই তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কি কোনো আলোচনা হয়েছে?
এই প্রশ্নের উত্তর আসে খোদ প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে। বৈঠকের পর দুই দেশের পক্ষ থেকেই সাংবাদিকদের ব্রিফিং করা হয়। ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, শেখ হাসিনার প্রত্যার্পণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
খুবই গঠনমূলক এবং ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, দুই দেশের প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। রাজনৈতিক, ব্যাবসায়িক, অর্থনৈতিকসহ নানা দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। তবে শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার বিষয়ে স্পষ্ট কোনো আশ্বাস পাওয়া গেছে কি না- এ বিষয়ে কিছু বলেননি তিনি।
শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ দেখতে চায় ভারত
বৈঠকে নরেন্দ্র মোদি কি বলেছেন- এ নিয়ে জানার আগ্রহ সাধারণ মানুষের মধ্যে তৈরি হয়। এর উত্তর হিসেবে একই সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি জানান, দেশটির প্রধানমন্ত্রী একটি গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, প্রগতিশীল এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের প্রতি ভারতের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
কোনো হানাহানি নয় বরং সাধারণ মানুষের স্বস্তির দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে দেখতে চান তিনি। ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে জনগণকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্বাস করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার সম্পর্ক রয়েছে।
যা উভয় দেশ ও দেশের জনগণকে বাস্তব সুবিধা দিয়েছে। এই আলোকে বাস্তবতার নিরিখে একটি ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক গড়তে ভারতের আকাঙ্ক্ষার কথাও নরেন্দ্র মোদি অধ্যাপক ইউনূসকে জানিয়েছেন বলেও জানান বিক্রম মিশ্রি।
শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ বিষয়ে যত আলোচনা
ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট দেশ থেকে পালাতে বাধ্য হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সঙ্গে নিয়ে যান ছোট বোন শেখ রেহানাকেও। ওইদিনই শেখ হাসিনা প্রথমে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার আগরতলায় হেলিকপ্টার থেকে অবতরণ করেন। 
সেখানে তিনি কিছু সময় অপেক্ষার পর ভারতের রাজধানী দিল্লির উদ্দেশে একটি বিমানে রওনা হন। এরপর থেকে দিল্লিতেই অবস্থান করছেন তিনি।
মোদি এবং অধ্যাপক ইউনূসের বৈঠকে তাকে ফিরিয়ে দিতে হয়েছে দীর্ঘ আলোচনা। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, শেখ হাসিনা ওখানে বসে যে উসকানিমূলক মন্তব্য করছেন, সেগুলোর বিষয়ে কথা বলেছেন।
বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজে দেওয়া পোস্টেও উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, অধ্যাপক ড. ইউনূস বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর জন্য বাংলাদেশের অনুরোধের বিষয়ে নরেন্দ্র মোদির কাছে জানতে চান।
এ বিষয় এখন ভারত সরকারের কাছে বিবেচনাধীন। অধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে উসকানিমূলক মন্তব্য করে বাংলাদেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন, যা ভারতের তার প্রতি আতিথেয়তার অপব্যবহার বলে মনে হচ্ছে।
তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে মিথ্যা ও উসকানিমূলক অভিযোগ করে আসছেন। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমরা ভারত সরকারকে অনুরোধ করছি যে, তিনি আপনার দেশে থাকাকালীন এই ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত রাখার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
নতুন বাস্তবতায় কতটুকু বাস্তব আলোচনার বাস্তবায়ন
রাজনৈতিক হিসেবে দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের ইতিহাস দীর্ঘদিনের। গণঅভ্যুত্থানের সময়ও দেশটি দলটির প্রতিই তাদের পূর্ণ সমর্থন দিয়েছে। এমনকি পলাতক দলীয়প্রধানকে আশ্রয়ও দিয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশের রাজনীতিতে সম্পূর্ণ নতুন এক অবস্থা তৈরি হয়েছে। তাই নতুন বাস্তবতায় বৈঠকে আলোচিত বিষয়গুলো কতটুকু বাস্তবায়ন সম্ভব তা নিয়েও শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যত যাই হোক প্রতিবেশীকে কখনো অস্বীকার করা সম্ভব নয়। তাই নতুন বাস্তবতায়ও দুই দেশের সম্পর্কে যাতে প্রভাব না পরে সে বিষয়টি নিশ্চিত করার পরামর্শ তাদের। তবে অনিশ্চয়তা কাটিয়ে ব্যাংককে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদি যে প্রথমবারের মতো দ্বিপাক্ষিক বৈঠককে ‘ইতিবাচক’ ঘটনা হিসেবেই দেখছেন তারা। দেখা হচ্ছে।
গত বছরের আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারে পতনের আকস্মিকতায় থমকে গিয়েছিল দুই দেশের সম্পর্কের গতি। তারপর থেকে দুই দেশের মধ্যকার টানাপোড়েন কূটনৈতিক পরিসর ছাপিয়ে রাজনৈতিক বিদ্বেষমূলক বক্তব্য এমনকি অনেক সাধারণ মানুষের বয়ানেও ছড়িয়ে পড়ে। মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদির শুক্রবারের বৈঠকটিকে, কয়েক মাস ধরে চলে আসা সেই টানাপোড়েন থেকে উত্তরণের সুযোগ বলে বর্ণনা করছেন বিশ্লেষকরা।
বিশ্লেষকদের মত
দুই দেশের শীর্ষ নেতার এই সময়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকটিকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. লাইলুফার ইয়াসমিন বলেন, কী আলোচনা হলো তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো ইউনূস-মোদির দেখা হওয়া, বৈঠক হওয়া।
৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর এই প্রথম দুই দেশের সরকারপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক হলো। সম্পর্কের যে অস্বস্তিকর অবস্থা চলছিল, আমি মনে করি তার বরফ গলা শুরু হলো। এর মধ্য দিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে বলে ধারণা করেন এই অধ্যাপক।
তিনি বলেন, দুই দেশের সরকারপ্রধান তাদের ইস্যুগুলো বলেছেন। এখন সেই ইস্যু নিয়ে কাজ করা যাবে। ভারত বাংলাদেশের ইস্যুগুলো জানল। আর বাংলাদেশও ভারতের ইস্যুগুলো জানল। ফলে দুই দেশই ভাবতে পারবে। যদি কথা না হয়, আলোচনা না হয়, তাহলে তো সম্পর্ক এগোবে না।
এই বৈঠকটি তার একটি ক্ষেত্র তৈরি করল বলে আমি মনে করি।একই মত সাবেক কূটনীতিক সাকিব আলীরও। তিনি বলেন, আমার বিবেচনায় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে একটি চলমান সম্পর্ক থাকা উচিত। যেকোনো সংকটে তারা যেন সরাসরি কথা বলতে পারেন। দুই দেশের মধ্যে একটা আস্থার সম্পর্ক দরকার। আমি মনে করি, এই বৈঠকটি তার সুযোগ তৈরি করেছে।
বৈঠকে আশার আলো দেখছে বিএনপি
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠক নতুন আশার সঞ্চার করেছে বলে মনে করছে দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপিও।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, এটা খুবই আনন্দের কথা। আমরা মনে করি, ভূরাজনীতিতে এবং বর্তমান বিশ্ব প্রেক্ষাপট, বাংলাদেশ ও ভারতের যে অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট, সে প্রেক্ষাপটে প্রধান উপদেষ্টা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকটা আমাদের সামনে একটা আশার আলো তৈরি করছে।
এ বৈঠকের ফলে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলে আশা প্রকাশ করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কের মধ্যে যে একটা ‘বিটারনেস’ (তিক্ততা) তৈরি হয়েছে, সেটা যেন আর বেশি সামনে না যায় অথবা এটা যেন কমে আসে, সে সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।
শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ ইস্যুতে মোদির প্রতিক্রিয়া নেতিবাচক ছিল না
শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে নরেন্দ্র মোদির প্রতিক্রিয়া নেতিবাচক ছিল না বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক স্ট্যাটাস দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব।
সম্মেলন শেষ করে দেশে ফেরার কয়েক ঘণ্টা পর শনিবার দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অধ্যাপক ইউনূসের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল ছিলেন এবং তার কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
বৈঠকে তিনি যা বলেছিলেন তার মধ্যে একটি ছিল, শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক থাকাকালে, আমরা আপনার প্রতি তার অসম্মানজনক আচরণ দেখেছি। কিন্তু আমরা আপনাকে সবসময় সম্মান ও মর্যাদা দিয়ে আসছি।
প্রেস সচিব পোস্টে আরও লেখেন, যখন অধ্যাপক ইউনূস শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়টি উত্থাপন করেন, তখন মোদির প্রতিক্রিয়া নেতিবাচক ছিল না। আমরা আত্মবিশ্বাসী, এক দিন শেখ হাসিনাকে ঢাকায় প্রত্যর্পণ করা হবে এবং আমরা ‘শতাব্দীর সেরা বিচার’ প্রত্যক্ষ করব।

 
                             
                                     সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন