ক্রিকেট মাঠে মাশরাফি বিন মর্তুজা ও সাকিব আল হাসান যেমন দেশের দুই কিংবদন্তি, তেমনি দক্ষিণ ভারতের সিনেমা জগতে থালাপতি বিজয় এক বিশাল তারকা। এই তিনজনেরই জনপ্রিয়তা আকাশছোঁয়া।
কিন্তু যখন তারা রাজনীতির মাঠে নেমেছেন, তখন তাদের পথ সম্পূর্ণ ভিন্ন হয়ে উঠেছে। আর এই ভিন্ন পথই আজ বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
প্রশ্ন উঠেছে কেন মাশরাফি-সাকিবরা নিজেদের জনপ্রিয়তাকে স্বাধীন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের কাজে লাগাতে ব্যর্থ হলেন, যেখানে থালাপতি বিজয় ঠিক সেটাই করে দেখালেন?
মাঠের সফলতার পর মাশরাফি এবং সাকিব দুজনই বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের অধীনে রাজনীতিতে যোগ দেন। জনগণের আস্থার প্রতীক হয়েও তারা নিজেদের স্বতন্ত্র রাজনৈতিক দল গঠন করেননি।
তারা বেছে নেন এমন একটি পথ, যেখানে ক্ষমতাসীন দলের ছায়াতলে থেকে তাদের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার গড়তে হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত তাদের সমর্থকদের মধ্যে হতাশা তৈরি করেছে।
অনেকে মনে করেন, তাদের এই পদক্ষেপ স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে তাদের অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে তারা জনগণের কণ্ঠস্বর না হয়ে শাসক দলেরই একজন হয়েছেন, যার কারণে সমালোচনার মুখে পড়েছেন।
অন্যদিকে, তামিল সিনেমার সুপারস্টার থালাপতি বিজয় সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি পথে হেঁটেছেন। সিনেমার জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করে তিনি 'তামিলাগা ভেত্রি কাজহাগাম' নামে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন।
তিনি কেবল দল গঠন করেই ক্ষান্ত হননি, বরং প্রকাশ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বিজেপিকে 'ফ্যাসিস্ট' আখ্যা দিয়েছেন।
জনগণের অধিকার এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের পক্ষে তিনি শাসক দলের বিরুদ্ধে সরাসরি দাঁড়ানোর সাহস দেখিয়েছেন। এই পদক্ষেপ তাকে কেবল একজন অভিনেতা থেকে জনগণের নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন মাশরাফি, সাকিব এবং থালাপতি বিজয়ের মধ্যে ব্যাপক তুলনা চলছে। অনেকে মনে করেন, এই তিন তারকার মধ্যে মূল পার্থক্য হলো মেরুদণ্ড ও প্রতিবাদী মানসিকতায়।
থালাপতি বিজয় নিজের রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছেন, কারণ তিনি ক্ষমতার সুবিধা নিতে নয় বরং দমন-নীতি ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে চান।
পক্ষান্তরে, মাশরাফি ও সাকিব জনপ্রিয় তারকা হয়েও শাসক দলের সহায়ক হয়েছেন। জনগণের আক্ষেপ এখানেই, কেন যারা কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে আলো জ্বালিয়েছেন, তারা রাজনৈতিক মঞ্চে সেই আলো নিভিয়ে দিলেন? কেন তারা স্বাধীন কণ্ঠস্বর হয়ে উঠতে পারলেন না?
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন