আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে পৌঁছানোটা প্রোটিয়াদের জন্য একটি ঐতিহাসিক অর্জন। যেখানে এখন পর্যন্ত ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিল কেবল নিউজিল্যান্ড, ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। সেখানে নবাগত দক্ষিণ আফ্রিকা লর্ডসের ক্রিকেট মঞ্চে আজ থেকে শুরু হওয়া ফাইনালে প্রথমবারের মতো পা রাখছে।
তবে ‘নবাগত’ হয়েও তারা এসেছে দাপট দেখিয়ে ২০২৩-২৬ চক্রের পয়েন্ট টেবিলে ১ নম্বর দল হিসেবেই জায়গা করে নিয়েছে ফাইনালে। কিন্তু শুধু অংশগ্রহণই নয়, দক্ষিণ আফ্রিকার লক্ষ্য এবার একটাই—শিরোপা জেতা।
কারণ তাদের সামনে এখন একটা সুযোগ ফাইনাল ব্যর্থতার ইতিহাস ভেঙে নতুন করে নিজেদের প্রমাণ করার। আজ বুধবার (১১ জুন) বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩.৩০ মিনিটে অজিদের বিপক্ষে আজ মাঠে নামবে দক্ষিণ আফ্রিকা।
অবশ্য ফাইনালের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া। ইতিহাস, অভিজ্ঞতা, শক্তি—সবদিক থেকেই তারা এক মহাশক্তিধর প্রতিপক্ষ। একদিকে ওয়ার্নার-স্মিথ-লাবুশেনদের ব্যাটিং, অন্যদিকে কামিন্স-স্টার্ক-হ্যাজলউডের বিধ্বংসী বোলিং অ্যাটাক। দক্ষিণ আফ্রিকার শক্তির জায়গাও তাদের পেস ইউনিট।
অস্ট্রেলিয়ার অভিজ্ঞ ব্যাটার স্টিভ স্মিথও তাই মনে করেন, ‘কাগিসো রাবাদার নেতৃত্বে দুর্দান্ত পেস আক্রমণ রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার। তারা দলে জায়গা পেয়ে নয়, পারফর্ম করেই ফাইনালে এসেছে।’
তবে শুধু পেসেই নয়, ম্যাচ যত গড়াবে, স্পিনও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে বলে মত স্মিথের। বিশেষ করে এবারের লর্ডসের আবহাওয়া ও উইকেট অনেকটা শুষ্ক যা স্পিনারদের কাজে লাগবে বলেই বিশ্বাস তার।
স্মিথের নিজেরও লর্ডসের সঙ্গে দুর্দান্ত স্মৃতি জড়িয়ে। এখানে খেলা ৫ টেস্টে করেছেন ৫২৫ রান, যার মধ্যে রয়েছে একটি শতক ও একটি দ্বিশতক। উইকেট ব্যাটিংয়ের পক্ষে হলেও, আকাশে মেঘ জমলে বল সুইং করে, আর তখন পরিস্থিতি হয়ে পড়ে কঠিন, স্মিথের সেই অভিজ্ঞতাও অন্তর্ভুক্ত ফাইনাল বিশ্লেষণে।
অবশ্য এমন ‘কঠিন’ মুহূর্তেই বারবার নিজেদের প্রমাণ করেছে অস্ট্রেলিয়া। বিপরীতে, দক্ষিণ আফ্রিকা বারবারই ধাক্কা খেয়েছে ফাইনালে এসে। তাই র্যাঙ্কিংয়ে যতই শীর্ষে থাকুক, ফাইনালের ফেবারিট হিসেবে অস্ট্রেলিয়াই এগিয়ে।
তবু প্রোটিয়াদের কোচ শুকরি কনরাডের বিশ্বাস, এবার ইতিহাস বদলাবে। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ‘ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকা পারে না! এই তকমা আমরা আর নিতে চাই না।
এটা আমাদের দলের ওপর চাপ সৃষ্টি করে না, বরং আমরা জানি, এবার জিততে হবে, কারণ আমাদের আরেকটা আইসিসি ট্রফি দরকার।’
১৯৯৮ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পর বড় মঞ্চে শিরোপাহীন দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে আজ সুযোগ—অপবাদ ঘোচানোর, আত্মবিশ্বাসের প্রমাণ দেওয়ার, ইতিহাস গড়ার। সবকিছু নির্ভর করছে টেম্বা বাভুমা ও তাঁর দলের সাহস, ধৈর্য আর নিষ্ঠার ওপর।
এদিকে লর্ডসে আজ শুরু, এক ঐতিহাসিক লড়াই যেখানে শুধু ম্যাচ নয়, বদলাবে একটি দেশের ক্রিকেট নিয়তি।