বিশ্ববাসী নতুন এক আকাশযুদ্ধের সাক্ষী হয়েছে। চলমান পাকিস্তান-ভারত সংঘাতে চীনের তৈরি জেট এবং ফ্রান্সের তৈরি রাফাল ফাইটার জেটের মধ্যে কে সফল হলো, তা নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা।
সংঘর্ষটি মূলত বাস্তব যুদ্ধে চীনের উন্নত জে-১০ ফাইটার জেট এবং পিএল-১৫ ক্ষেপণাস্ত্রের প্রয়োগ নিয়ে সারা বিশ্বের সামরিক বিশ্লেষকদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
বুধবার (৭ মে) দুটি শক্তিশালী ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে পাকিস্তানের জে-১০ জেট। এটিকে চীনের সামরিক শক্তির একটি বড় মাইলফলক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই যুদ্ধ থেকে যে তথ্য পাওয়া যাবে, তা ভবিষ্যতে আকাশযুদ্ধের কৌশল এবং প্রযুক্তির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
চীন, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় দেশ এবং অন্যান্য অঞ্চলের সামরিক বিশ্লেষকরা এরই মধ্যেই এ ঘটনা থেকে শিক্ষা নিতে শুরু করেছে।
আন্তর্জাতিক কৌশলগত গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিমানযুদ্ধ বিশেষজ্ঞ ডগলাস ব্যারি বলেন, এ ধরনের আকাশযুদ্ধ বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি সরাসরি আধুনিক অস্ত্রের কার্যকারিতা পরীক্ষা করার সুযোগ দিয়েছে, যা বিশ্বের একাধিক দেশের জন্য অমূল্য তথ্য প্রদান করবে।
চীনা পিএল-১৫ ও ফরাসি মেটিওর ক্ষেপণাস্ত্রের তুলনা
চলমান এ যুদ্ধের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল পিএল-১৫ এবং মেটিওর ক্ষেপণাস্ত্রের পারফরম্যান্স। চীনা পিএল-১৫ ক্ষেপণাস্ত্রটির পারফরম্যান্স বিশ্বব্যাপী বিশেষজ্ঞদের মধ্যে আলোচিত, কারণ এটি পশ্চিমা মেটিওর ক্ষেপণাস্ত্রের সমকক্ষ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
যদিও এখনো এই মিসাইলগুলো ব্যবহৃত হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি, তবে কিছু সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ও সূত্র অনুযায়ী, পিএল-১৫ ব্যবহৃত হয়েছে। এটি অত্যন্ত কার্যকরী হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।
সামরিক বিশেষজ্ঞ বায়রন কলান বলেন, এই সংঘর্ষ থেকে প্রযুক্তির ব্যাপারে অনেক কিছু শেখা যাবে। ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের মতো পরিস্থিতিতে যেমন অস্ত্রের কার্যকারিতা মূল্যায়ন হচ্ছে, এখানেও একই রকম মূল্যবান তথ্য পাওয়া যাবে।
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীন ও ভারত বিশেষভাবে নিজেদের বিমানবাহিনী আধুনিকীকরণে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। যদি চীনা জে-১০ এবং পিএল-১৫ ক্ষেপণাস্ত্রগুলি কার্যকরী প্রমাণিত হয়, তবে তা ভারতের সামরিক পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনতে পারে।
এর ফলে ভারত তার বিমান বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করতে নতুন কৌশল এবং আধুনিক অস্ত্র গ্রহণে আগ্রহী হতে পারে।
ভবিষ্যৎ প্রতিরক্ষা কৌশল
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এই সংঘর্ষের পর থেকে নিজেদের আকাশযুদ্ধ কৌশল ও প্রযুক্তি নিয়ে নতুন করে চিন্তা করতে শুরু করেছে।
বিশেষজ্ঞরা অনুমান করছেন, এই সংঘর্ষ থেকে অর্জিত তথ্য ভবিষ্যতে আকাশ যুদ্ধ কৌশল এবং অস্ত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন আনতে সাহায্য করবে।
এরই মধ্যে, বিভিন্ন দেশ তাদের বিমানবাহিনীর শক্তি বাড়াতে এবং আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় নতুন প্রযুক্তি গ্রহণে আগ্রহী হয়েছে।
চীনা তৈরি পাকিস্তানি জেট এবং ফরাসি তৈরি ভারতীয় রাফালদের মধ্যে এই আকাশযুদ্ধ কেবল একটি সামরিক সংঘর্ষ নয়, বরং এটি বিশ্বব্যাপী বিমানযুদ্ধ কৌশল এবং প্রযুক্তির উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
আকাশযুদ্ধে ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্র এবং যুদ্ধ কৌশলগুলির বাস্তব কার্যকারিতা বিশ্লেষণ করা হবে, যা ভবিষ্যতে সামরিক পরিকল্পনা এবং প্রতিরক্ষা কৌশলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
সূত্র : রয়টার্স, আন্তর্জাতিক কৌশলগত গবেষণা ইনস্টিটিউট
আপনার মতামত লিখুন :