ভারত-পাকিস্তান সংঘাত শুধু যুদ্ধক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ ছিল না। এ যুদ্ধের সরাসরি প্রভাব পড়েছে অর্থনীতি, বিনিয়োগ এবং আকাশপথেও।
প্রতি ঘণ্টায় প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের ক্ষতিতে উন্মোচিত হয়েছে আধুনিক যুদ্ধের ভয়াবহ মূল্য।
রোববার (১১ মে) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে দ্য নিউজ ডটকম ডট পিকে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার (৬ মে) দিবাগত রাত ১টা ৫ মিনিটে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের একটি সামরিক অভিযান শুরু করে ভারতীয় বাহিনী। অভিযানটি মাত্র ২৩ মিনিট স্থায়ী ছিল। এ হামলায় পাকিস্তানের অভ্যন্তরে নয়টি বেসামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়।
হামলায় ফ্রান্সের তৈরি রাফাল যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে ভারত। দূরপাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও নির্ভুল গ্লাইড বোমা দ্বারা সজ্জিত রাফাল বিমানগুলোর লক্ষ্যমাত্রা ছিল প্রায় ৫৫০ কিলোমিটার।
৭ থেকে ১০ মে পর্যন্ত পাকিস্তানের আকাশ প্রতিরক্ষা কাঠামো পর্যালোচনার জন্য কিছু স্বচালিত অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে রাডার এবং ভূমি থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিক্রিয়া পরীক্ষা করে ভারত।
জবাবে পাকিস্তানের বিমানবাহিনী, স্থলবাহিনী ও ক্ষেপণাস্ত্র ইউনিট একযোগে হামলা করে ভারতের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায়। পাকিস্তান বিমানবাহিনী যুদ্ধবিমান হিসেবে চীনের তৈরি জে-১০সি বিমান ব্যবহার করে, যা দূরপাল্লার আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র ও উন্নত বৈদ্যুতিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা দ্বারা সজ্জিত ছিল।
পাকিস্তান বিমানবাহিনী তিনটি ফরাসি রাফাল যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়। এ ধরনের বিমানের যুদ্ধক্ষেত্রে পতনের ঘটনা এটিই প্রথম।
পাকিস্তান দাবি করে, বৈদ্যুতিক প্রতিরোধ, বিমানবিধ্বংসী কামান ও স্বল্পপাল্লার ভূমি থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের সম্মিলিত ব্যবহার তারা মোট ৭৭টি ভারতীয় ড্রোন ধ্বংস করেছে ।
মঙ্গলবার (৬ মে) মধ্যরাত থেকে শনিবার (১০ মে) পর্যন্ত মোট ৮৭ ঘণ্টা ২৫ মিনিটের সংঘাতে ভারতের প্রধান শেয়ারবাজার সূচক নিফটি ও সেনসেক্স একত্রে প্রায় ৮২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূলধন হারায়।
উত্তর ভারতের আকাশপথ বন্ধ থাকার কারণে প্রতিদিন প্রায় ৮০ লাখ ডলারের বাণিজ্যিক বিমান চলাচলের ক্ষতি হয়। জনপ্রিয় ক্রিকেট টুর্নামেন্ট স্থগিত হওয়ায় সম্প্রচার, টিকিট বিক্রি ও বিজ্ঞাপন থেকে প্রায় ৫ কোটি ডলারের ক্ষতি হয়।
সামরিক খাতে প্রায় ১০ কোটি ডলার ও যুদ্ধবিমান ধ্বংসের ফলে প্রায় ৪০ কোটি ডলারের ক্ষতি হয়েছে। পণ্য পরিবহন ও বাণিজ্যিক লেনদেনে বিঘ্ন ঘটায় প্রায় ২০০ কোটি ডলারের ক্ষতি হয়েছে।
সব মিলিয়ে ভারতের মোট ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় আনুমানিক ৮৩০০ কোটি ডলার।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের শেয়ারবাজারের প্রধান সূচক প্রায় ৪ দশমিক ১ শতাংশ কমে গিয়ে মোট ২৫০ কোটি ডলারের মূলধন হারিয়েছে। পাকিস্তানের ক্রিকেট লিগ স্থগিত হওয়ায় সম্প্রচার ও বিজ্ঞাপন থেকে প্রায় ১ কোটি ডলারের ক্ষতি হয়। আকাশপথ বন্ধে বাণিজ্যিক বিমান চলাচলে প্রায় ২ কোটি ডলারের ক্ষতি হয়েছে।
প্রতিদিনের সামরিক ব্যয় ছিল প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ ডলার। ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র পরিচালনার জন্য আনুমানিক ৩০ কোটি ডলার ব্যয় হয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগের আস্থা কিছুটা কমে গেলেও তা পরিমাপযোগ্য নয়। মোট ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে আনুমানিক ৪০০ কোটি ডলার।
এই ৮৭ ঘণ্টার যুদ্ধ শুধু আকাশে হয়নি। এ যুদ্ধ শেয়ারবাজারে ধস, মুদ্রার মান পতন, ব্যবসা-বাণিজ্যের বিঘ্ন, বিমান চলাচলের স্থবিরতা এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতার রূপে দেশের ভেতর ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতি ঘণ্টায় প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে।
শনিবার (১০ মে) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি দেয় পাকিস্তান-ভারত। এরপর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন দুই দেশের সীমান্তে বসবাসকারী জনগণ।
আপনার মতামত লিখুন :