ইরান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা এবং সংঘাতের ইতিহাস দীর্ঘদিনের। ১৯৭৯ সালের ইসলামিক বিপ্লবের পর থেকে ইরান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক ক্রমাগত বৈরিতাপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
বর্তমানে আমেরিকা যখন ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের ভবিষ্যৎ নিয়ে কৌশল নির্ধারণ করছে, তখন অনেক মার্কিন আইনপ্রণেতা ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক বিগত চার দশকের ইরানি কার্যকলাপকে নতুন দৃষ্টিতে মূল্যায়ন করছেন।
মার্কিন সিনেটর টম কটন (রিপাবলিকান-আরকানসাস) এক পোস্টে বলেন, ‘চিরকালীন যুদ্ধ হলো সেই যুদ্ধ, যা ইরান ১৯৭৯ সাল থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল এবং গোটা সভ্য বিশ্বের বিরুদ্ধে চালিয়ে আসছে।’
ইরানের হামলার ধরনগুলো নানা রকম- সরাসরি ও প্রক্সির মাধ্যমে মার্কিন সেনাদের ওপর হামলা, অন্য গোষ্ঠীগুলোর পৃষ্ঠপোষকতা এবং মার্কিন নাগরিকদের টার্গেট করে হত্যার চেষ্টা করেছে।
ইরানের কর্মকাণ্ড ও আমেরিকানদের উপর হামলার কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা তুলে ধরে...
১৯৭৯ সালের মার্কিন দূতাবাস জিম্মি সংকট
ইরানের ইসলামী বিপ্লবের প্রারম্ভিক পর্যায়ে, কট্টরপন্থি ছাত্ররা তেহরানে মার্কিন দূতাবাস দখল করে। ইরানের তৎকালীন সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি এই ঘটনার নেতৃত্ব দেন এবং আন্তর্জাতিক আহ্বান উপেক্ষা করে জিম্মিদের মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানান। প্রায় ৪৪৪ দিন পর শেষ পর্যন্ত মার্কিন জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হয়।
১৯৮৩ সালের বৈরুত বোমা হামলা
২০২৩ সালে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির লেবানন প্রতিনিধি সাইয়েদ ইসা তাবাতাবাই স্বীকার করেন যে, ১৯৮৩ সালে লেবাননে মার্কিন লক্ষ্যবস্তুর ওপর সংঘটিত দুটি ভয়াবহ বোমা হামলার সঙ্গে ইসলামিক রিপাবলিক জড়িত ছিল।
এর মধ্যে বৈরুতের মার্কিন দূতাবাসে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১৭ জন মার্কিন নাগরিকসহ ৬৩ জন নিহত হন। একই বছর বৈরুতে বহুজাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনীর ব্যারাকে আত্মঘাতী ট্রাক বোমা হামলায় ২২০ জন মার্কিন মেরিন, ১৮ জন নৌবাহিনীর নাবিক, ৩ জন সেনা এবং ৫৮ জন ফরাসি সেনা নিহত হন।
১৯৯৬ সালের খোবার টাওয়ার বোমা হামলা
১৯৯৬ সালের ২৫ জুন, সৌদি আরবের ধাহরানে খোবার টাওয়ার আবাসিক কমপ্লেক্সের বাইরে ট্রাক বোমা হামলায় ১৯ জন মার্কিন বিমানবাহিনীর সদস্য নিহত হন।
২০০৬ সালে একটি মার্কিন আদালত এই হামলার জন্য ইরান সরকারকে দায়ী করে রায় দেয়।
আদালতের ভাষ্য অনুযায়ী, হামলাটি ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহর সৌদি শাখার সদস্যরা পরিচালনা করেছিল। ক্ষতিপূরণ হিসেবে আদালত ইরান সরকারকে ২৫৪ মিলিয়ন ডলার প্রদানের নির্দেশ দেয়।