কথায় বলে প্রেম মানে বাধা। প্রেমিকের সঙ্গে ধর্ম না মিললেও হৃদয়ের টান মেনে তাকে জীবনসঙ্গী করে নিয়েছিলেন এক কলেজ ছাত্রী। কিন্তু সেই প্রেমের মূল্য তাকে দিতে হলো এক অভূতপূর্ব ‘শাস্তি’র মাধ্যমে; জীবিত অবস্থাতেই নিজের শ্রাদ্ধ দেখতে হলো তাকে।
মেয়ের সিদ্ধান্ত মানতে না পেরে শনিবার (২১ জুন) জীবিত মেয়ের শ্রাদ্ধ করেছে পরিবার। যা দেখে অবাক প্রতিবেশীরাও।
ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের খাটুরা উত্তরপাড়ায়। প্রথম বর্ষের ওই কলেজ ছাত্রী ভালোবেসেছিলেন ভিন্ন ধর্মাবলম্বী এক যুবককে। সেই সম্পর্ক মেনে নেয়নি পরিবার। কিন্তু প্রেম তো সমাজ-সংস্কার-ধর্ম মানে না। তাই পরিবারের অমতেই গোপনে বিয়ে সেরেছেন তরুণী। আর এখানেই যেন ফুঁসে ওঠে পরিবার।
পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শনিবার তরুণীর সমস্ত ছবি, জামা-কাপড়, বই ও গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়। রীতিমতো শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করে মেয়ের স্মৃতিচিহ্ন মুছে ফেলে পরিবার ঘোষণা করে, ‘মেয়ে তাদের কাছে আজ থেকে মৃত’।
জানা গেছে, ওই ছাত্রীর বাবা কর্মসূত্রে ইসরায়েলে অবস্থান করছেন। মেয়ের এমন সিদ্ধান্ত তাকে মানসিকভাবে ভেঙে দিয়েছে বলেই জানায় পরিবার।
তরুণীর চাচা সোমনাথ বিশ্বাস জানান, আগে ছেলেটির সঙ্গে বাড়ির মেয়ে পালিয়ে গিয়েছিল। তাকে একবার বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়, কিন্তু ফের পালিয়ে যায়। তারা শুনেছেন যে ভিন্ন ধর্মের ছেলেটির সঙ্গে গোপনে বিয়েও সেরেছে মেয়ে। এবার তাই আর মেয়েকে ক্ষমা করতে পারবেন না তারা।
তিনি আরও বলেন, ‘পুরোহিত ডেকে ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী ওর ছবিতে মালা দিয়ে শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান করেছি। মেয়ে আমাদের ভালোবাসা-সম্মান কিছুই বোঝেনি, আজ থেকে সে আমাদের মেয়ে নয়।’
এই ঘটনার পরে প্রতিবেশীরা দ্বিধাবিভক্ত। কেউ পরিবারের ‘সংস্কার মেনে কঠিন সিদ্ধান্ত’কে সমর্থন করেছেন, আবার অনেকেই হতবাক ও ক্ষুব্ধ। কারও মতে, একটি প্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে তার জীবনসঙ্গী পছন্দ করার অধিকার রাখে। কেউ আবার বলছেন, ‘ভিন্ন ধর্মে বিয়ে করলেই কি এভাবে সম্পর্ক ছিন্ন করে দেওয়া যায়?’
আপনার মতামত লিখুন :