ইসরায়েল-ইরানের চলমান সংঘাতের উত্তাপের মধ্যেই প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আমেরিকার বি-২ স্টিলথ বোমারু বিমানের চলাচল নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সামরিক তৎপরতা শুধু মধ্যপ্রাচ্যের জন্য নয়, বরং চীনের দিকেও একটি শক্তিশালী বার্তা পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
বিমানগুলো বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি অঙ্গরাজ্যের ঘাঁটি থেকে পশ্চিমমুখী হয়ে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দিকে যাচ্ছে। তাদের প্রাথমিক গন্তব্য গুয়াম দ্বীপ। যদিও এই বাহিনীগুলো মধ্যপ্রাচ্যের দিকে রওনা দেয়নি।
বিশ্লেষকদের মতে, এগুলো পর্যায়ক্রমে সারা বিশ্বে মোতায়েন হতে পারে এবং পরে মধ্যপ্রাচ্য বা মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) এর আওতাধীন অঞ্চলেও যুক্ত হতে পারে।
পেন্টাগন সূত্রের বরাতে জানা গেছে, এই বি-২ বিমানের চলাচল সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য ও বিশ্লেষণ হোয়াইট হাউসের কাছে পাঠানো হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি ও শক্তি প্রদর্শন বজায় রাখা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে চীনের সম্ভাব্য সামরিক কৌশল এবং সম্প্রসারণবাদী নীতি প্রতিহত করা যায়।
প্রসঙ্গত, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক শক্তি বৃদ্ধির নির্দেশ দিয়েছেন। এর ফলে প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকা থেকে ইউএসএস নিমিৎজ বিমানবাহী রণতরী এবং তার স্ট্রাইক গ্রুপকে মধ্যপ্রাচ্যে পুনঃমোতায়েন করা হয়েছে। এর আগে ইউএসএস নিমিৎজ এশিয়ার পানিসীমায় মোতায়েন ছিল।
বিশ্লেষকদের মতে, চীনের সম্প্রসারণবাদী উচ্চাকাঙ্ক্ষা, বিশেষ করে তাইওয়ান ইস্যু, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি তাৎক্ষণিক সামরিক ও কৌশলগত চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক শক্তি কেন্দ্রীভূত হওয়ায় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সামরিক ভারসাম্য ধরে রাখা আরও কঠিন হয়ে পড়ছে।
এ ছাড়াও, দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগতভাবে চীন নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে যে, ইরান-ইসরায়েল সংকটে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়। এই পরিস্থিতিতে তাইওয়ান ইস্যুতে চীনা নেতৃত্বের কাছে মার্কিন ভূমিকা আরেকটি বড় বিদেশি যুদ্ধে না জড়ানোর একটি ইঙ্গিতও দিতে পারে। এটি চীনের জন্য উৎসাহব্যঞ্জক হতে পারে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।
আপনার মতামত লিখুন :