ভুয়া আদালত সাজিয়ে বৃদ্ধের কাছ থেকে ১ কোটি ৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র। ‘ডিজিটাল গ্রেপ্তারে’র পর তোলা হয় ভুয়া ‘আদালতে’ও। টানা একমাস চলে শুনানি। এই ঘটনায় ইতোমধ্যে সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা সবাই ২০ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে। ঘটনাটি ভারতের উত্তরপ্রদেশের শাহজাহানপুর এলাকার।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী শরদ চন্দ (৬০) নামের ওই বৃদ্ধ প্রথমে প্রতারকদের ‘ডিজিটাল গ্রেপ্তার’-এর শিকার হন। গত ৬ মে তিনি একটি ফোনকল পান, যেখানে নিজেদের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ইডি এবং সিবিআইয়ের কর্মকর্তা পরিচয়ে কথা বলেন প্রতারকরা।
তাকে জানানো হয়, ২ কোটি ৮০ লাখ টাকার একটি বেআইনি লেনদেনের মামলায় তিনি তদন্তের আওতায় রয়েছেন। এরপর তাকে ভার্চুয়াল ‘আদালতে’ তোলা হয়, যা সম্পূর্ণভাবে প্রতারকদের দ্বারা সাজানো। প্রায় এক মাস ধরে চলা এই ভুয়া শুনানিতে ‘বিচারক’ ও ‘আইনজীবী’ পরিচয়ধারী প্রতারকরা বৃদ্ধকে ভয় দেখিয়ে ও চাপ প্রয়োগ করে বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মোট ১ কোটি ৪ লাখ টাকা পাঠাতে বাধ্য করেন। ওই সময় তিনি পুলিশের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেননি।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, এর মধ্যেও ভুয়া আইনজীবী ও ভুয়া বিচারকরা বিভিন্নভাবে তাকে ভয় দেখাতে থাকেন। ‘শুনানি’ চলাকালীন ৪০টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মোট ১ কোটি ৪ লাখ টাকা পাঠাতে বাধ্য করা হয় তাকে।
পরে প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে শরদ চন্দ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ একটি সন্দেহজনক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৯ কোটি টাকার লেনদেনের খোঁজ পায়। সেখান থেকেই তদন্তের সূত্র ধরে সাত অভিযুক্তকে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, মিথ্যা পরিচয়ে প্রতারণা, সরকারি কর্মকর্তা পরিচয় ভাঁড়ানো এবং তথ্যপ্রযুক্তি আইনে একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।
শাহজাহানপুরের পুলিশ সুপার রাজেশ দ্বিবেদী জানিয়েছেন, এই প্রতারণার পেছনে একটি সুসংগঠিত চক্র সক্রিয় রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তদন্ত চলছে এবং আরও তথ্য সংগ্রহের জন্য গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :