ঢাকা বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০২৫

মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র হত্যাকাণ্ডের গোপন নথি প্রকাশ

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ২২, ২০২৫, ০৮:১৫ পিএম
মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র । ছবি- সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের বর্ণবাদবিরোধী ও নাগরিক অধিকার আন্দোলনের নেতা মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের হত্যাকাণ্ড নিয়ে বেশ কিছু গোপন নথি প্রকাশ করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। এর মধ্যে লুথার কিংয়ের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআইয়ের নজরদারির তথ্যসংক্রান্ত নথিও আছে। খবর বিবিসির

১৯৬৮ সালের ৪ এপ্রিল ৩৯ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রের মেমফিস শহরে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র। এ হত্যার ঘটনায় জেমস আর্ল রে নামের এক পেশাদার অপরাধী দোষ স্বীকার করেছিলেন। হত্যার পর, জেমস আর্ল রে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। ফেরারি হয়ে ঘুরে বেড়ান কানাডা, পর্তুগাল ও যুক্তরাজ্যসহ নানা দেশে।

পরে যুক্তরাষ্ট্রের মেমফিসে ফিরিয়ে আনা হয় তাকে। ১৯৬৯ সালে তিনি আদালতে দোষ স্বীকার করেন এবং তাকে ৯৯ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে অবশ্য তিনি সেই স্বীকারোক্তি প্রত্যাহার করলেও তা বিবেচনায় নেয়নি আদালত। ১৯৯৮ সালে ৭০ বছর বয়সে মারা যান জেমস আর্ল রে।

১৯৭৭ সাল থেকে মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র হত্যা মামলার ২ লাখ ৩০ হাজার পৃষ্ঠার এসব নথি জনসমক্ষে প্রকাশ নিষিদ্ধ করে আদালত। চলতি বছরের জানুয়ারিতে মার্টিন লুথার কিং, সাবেক প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি এবং রবার্ট এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ড-সংক্রান্ত নথিগুলো প্রকাশ করার নির্দেশ দেন ট্রাম্প।

এদিকে, মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের সন্তানেরা এ নথি প্রকাশের বিরোধিতা করেছেন। তার জীবিত থাকা দুই সন্তান এক বিবৃতিতে বলেন, বাবার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টায় এ নথিগুলো অপব্যবহারের যেকোনো চেষ্টার নিন্দা জানান তারা। তাদের  অভিযোগ, মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র বেঁচে থাকতে তাকে ঘিরে গোপন নজরদারি ও মিথ্যা রটনা চালানো হয়েছিল। এর ফলে মার্টিন লুথার কিং সাধারণ নাগরিক হিসেবে যে সম্মান আর স্বাধীনতা পাওয়ার কথা ছিল, তা পাননি বলে অভিযোগ করেন তারা। সে সময় এফবিআই-এর তৎকালীন পরিচালক জে এডগার হুভারের পরিকল্পনায় আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থাটি এসব কাজ করেছিল।

পরিবারের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, ১৯৯৯ সালে এক দেওয়ানি মামলার রায়ে বিচারক বলেছিলেন, কিং শুধু একজন বর্ণবিদ্বেষী বন্দুকধারীর হাতে মারা যাননি; বরং এটি ছিল একটি বড় ষড়যন্ত্রের ফল।

তবে ট্রাম্পবিরোধীরা বলছেন, এ নথি প্রকাশ আসলে একধরনের নজর ঘোরানোর চেষ্টা। কারণ এমন সময় এটি প্রকাশ হয়েছে, যখন কিনা ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে কুখ্যাত যৌন নিপীড়ক জেফ্রি এপস্টেইনের মৃত্যুর নথি নিয়ে স্বচ্ছ আচরণ না করার অভিযোগ উঠেছে। এপস্টেইন ২০১৯ সালে জেলে মারা যান। পরে বলা হয়, তিনি কারাগারে আত্মহত্যা করেছেন।