ভারতের উত্তরাখণ্ডে ভয়াবহ হড়কা বান। উত্তরকাশী জেলার থারালি গ্রামের উপর মেঘ ফেটে সৃষ্টি হলো হড়কা বানের। তীব্র গতিতে নেমে আসা পানির তোড়ে কেঁপে উঠল বাড়িঘর, নামল ধস। হড়কা বানের কাদা-পাথর ও পানির স্রোতে তলিয়ে গিয়েছেন অনেকে। ঘটনায় কমপক্ষে চারজনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। নিখোঁজ অন্তত ৬০ জন। পর্যটকের ক্যামেরায় ধরা পড়ল উত্তরকাশী জেলার ধরলি গ্রামে খীর গঙ্গা নদীর উপরের অংশে প্রবল বন্যার ভয়াবহ দৃশ্য।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। উত্তরকাশীর জেলা ম্যাজিস্ট্রেট প্রশান্ত আর্য ধরলি গ্রামে আকস্মিক বন্যায় চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘এই অঞ্চলে আকস্মিক বন্যার এক বিশাল ঢেউ আঘাত হেনেছে। আমরা বর্তমানে জীবন ও সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ মূল্যায়ন করছি। সেনাবাহিনী, জাতীয় দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বাহিনী (এনডিআরএফ) এবং রাজ্য দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বাহিনী (এসডিআরএফ) দলবদ্ধভাবে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে।’
আর্য আরও বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বেশ কয়েকটি ছোট গেস্ট হাউস, হোটেল এবং রেস্তোরাঁ রয়েছে। এটি মাথায় রেখেই আমরা উদ্ধারকারী দল পাঠিয়েছি। তহসিল এবং গণপূর্ত বিভাগের (পিডব্লিউডি) দল ইতোমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে।’
এদিকে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ উত্তরকাশীর ধরলি অঞ্চলে আকস্মিক বন্যার ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামির সঙ্গে কথা বলেছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত পুলিশ (আইটিবিপি) এবং এনডিআরএফ-কে ত্রাণ ও উদ্ধার প্রচেষ্টার জন্য দ্রুত ঘটনাস্থলে দল পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। ধরালি গ্রামে সৃষ্ট বন্যার তীব্র স্রোতের নাটকীয় দৃশ্য ধরা পড়েছে পর্যটকের ক্যামেরায়। এতে দেখা গেছে, ঘরবাড়ি, দোকানপাট এবং রাস্তা ভাসিয়ে নিয়ে গেছে পানির স্রোত, যা এখন ধ্বংসাবশেষ ও কাদার স্তূপ।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, বন্যায় কিছু হোটেল এবং হোমস্টে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে। স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন, ধ্বংসস্তূপের নিচে ১০ থেকে ১২ জন শ্রমিক আটকা পড়ে থাকতে পারেন। এছাড়াও, বারকোট তহসিলের বনলা পট্টি এলাকায় প্রায় ১৮টি ছাগল কুদ গাধেরা স্রোতে ভেসে গেছে।
আবহাওয়া বিভাগ ১০ আগস্ট পর্যন্ত উত্তরাখণ্ড রাজ্যজুড়ে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার সতর্ক করেছে, বিশেষ করে পাহাড়ি অঞ্চলে তীব্র বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। হারসিল ও ভাটোয়ারি থেকে উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়েছে, আটকে পড়াদের খুঁজে বের করার এবং তাদের সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।