ঢাকা মঙ্গলবার, ০৫ আগস্ট, ২০২৫

মেক্সিকোর পরিত্যক্ত বাড়িতে মিলল ৩২টি ছিন্নভিন্ন মরদেহ

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ৫, ২০২৫, ১২:৩২ পিএম
মেক্সিকোর গুয়ানাহুয়াতো রাজ্যের পরিত্যক্ত বাড়ি, যেখানে উদ্ধার হয়েছে ৩২টি মরদেহ। ছবি- সংগৃহীত

মেক্সিকোর গুয়ানাহুয়াতো রাজ্যের ইরাপুয়াতো শহরে একটি পরিত্যক্ত বাড়ির গণকবর থেকে ছিন্নভিন্ন ৩২টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানে তল্লাশি চালানোর সময় এই দেহাবশেষগুলো উদ্ধার করা হয়। মরদেহগুলো এতটাই বাজে অবস্থায় রয়েছে যে, শনাক্তের প্রক্রিয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে ১৫টি মরদেহ শনাক্ত করেছে রাষ্ট্রীয় প্রসিকিউটর দপ্তর। সংবাদমাধ্যম ফ্রান্স ২৪ মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়েছে, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো প্লাস্টিকের ব্যাগে মোড়ানো অবস্থায় উদ্ধার করেন তদন্তকারীরা।

মেক্সিকোতে নিখোঁজ ব্যক্তিদের খোঁজার উদ্দেশ্যে তৈরি সংগঠন ‘হাস্তা এনকনত্রার্তে’ সোমবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তারা আশা করেছিলেন প্রিয়জনদের সন্ধান বা নতুন কোনো প্রমাণ পাওয়া যাবে।

পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমরা প্রিয়জনদের খুঁজে পেতে চাই। অনেক বছর পেরিয়ে গেল, এখনো কিছুই জানি না। যখনই এ ধরনের গণকবর আবিষ্কৃত হয়, আমরা সেখানে ছুটে যাওয়ার চেষ্টা করি।’

সহিংসতার পটভূমি

শিল্প ও পর্যটনের জন্য পরিচিত গুয়ানাহুয়াতো মেক্সিকোর সবচেয়ে সহিংস রাজ্য হিসেবেও বিবেচিত। সরকারিভাবে প্রকাশিত হত্যাকাণ্ডের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই রাজ্যে মাদক চক্রগুলোর আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সহিংসতা চরমে পৌঁছেছে। ২০২৪ সালে রাজ্যটিতে ৩ হাজার ১০০টিরও বেশি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে, যা পুরো দেশের হত্যাকাণ্ডের ১০.৫ শতাংশ।

একই বছরে রাজ্যজুড়ে প্রায় ৩ হাজার ৬০০ জন নিখোঁজ হয়েছেন। মেক্সিকোজুড়ে মোট নিখোঁজের সংখ্যা ১ লাখ ২০ হাজার ছাড়িয়েছে।

গুয়ানাহুয়াতোর অধিকাংশ সহিংসতা সান্তা রোসা ডে লিমা গ্যাং এবং জালিসকো নিউ জেনারেশন কার্টেল-এর মধ্যে চলমান সংঘাতের ফলে হয়ে থাকে। জালিসকো কার্টেলকে লাতিন আমেরিকার অন্যতম কুখ্যাত অপরাধী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

গত জুনে ইরাপুয়াতোতে একটি পাড়াভিত্তিক অনুষ্ঠানে বন্দুকধারীদের হামলায় ১১ জন নিহত এবং প্রায় ২০ জন আহত হন। তার এক মাস আগেই, একই শহরের একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে ১৭টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

তদন্ত চলছে

রাষ্ট্রীয় প্রসিকিউটর অফিস জানিয়েছে, নতুন করে পাওয়া দেহাবশেষ শনাক্তের কাজ চলছে এবং নিখোঁজদের পরিবারের সদস্যদের সহায়তায় তদন্ত আরও এগিয়ে নেওয়া হবে।

নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, এই গণকবর ও সহিংসতার মাধ্যমে গুয়ানাহুয়াতোতে সংঘবদ্ধ অপরাধ ও দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থার একটি ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠেছে। সরকারের তরফ থেকে এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।