মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের বুকে বিখ্যাত নাইটলাইফ জোন বুকিত বিন্তাংয়ে হঠাৎ করেই যেন লকডাউন পরিস্থিতি তৈরি হয়। টেবিলের নিচে লুকিয়ে থাকা, দোকানের ভেতর বা ছাদে উঠে পালানোর চেষ্টা—সবকিছুই ব্যর্থ হলো দুই ঘণ্টার এক বিশাল অভিযানে। মঙ্গলবার রাতে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগের অভিযানে প্রায় ৪০০ বাংলাদেশিসহ ৭৭০ জন গ্রেপ্তার হন। তারা সবাই অবৈধ অভিবাসী বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। সংবাদমাধ্যম নিউ স্ট্রেইটস টাইমস বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
‘অপস বেলাঞ্জা’ নামের এ অভিযানে রাজধানীর তিনটি ব্লক ঘিরে ফেলা হয়। জালান নাগাসারি ও জালান সেলাইনের সব প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ সিলগালা করে দেওয়া হয়, ফলে পালানোর আর কোনো পথ ছিল না। অভিযান শুরু হয় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এবং গভীর রাত পর্যন্ত চলে।
ইমিগ্রেশন বিভাগের মহাপরিচালক বাসরি ওসমান জানান, মোট দুই হাজার ৪৪৫ জনকে যাচাই করা হয়েছে। এর মধ্যে এক হাজার ৬০০ জন বিদেশি এবং ৮৪৫ জন মালয়েশিয়ার নাগরিক।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন—বাংলাদেশের ৩৯৪ জন পুরুষ ও ২ জন নারী, মিয়ানমারের ২৩৫ জন পুরুষ, নেপালের ৭২ জন, ভারতের ৫৮ জন, ইন্দোনেশিয়ার ১৭ জন পুরুষ ও ২ জন নারী এবং আরও বিভিন্ন দেশের নয়জন নাগরিক। তাদের অধিকাংশই ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণ, বৈধ পরিচয়পত্রবিহীন বা অনুমতি ছাড়া কর্মরত ছিলেন।
অভিযানের আগে তিন সপ্তাহ ধরে নজরদারি চালানো হয়েছিল বলে জানান বাসরি। তিনি বলেন, ‘বুকিত বিন্তাং দীর্ঘদিন ধরেই অভিবাসীদের আড্ডাখানা হিসেবে পরিচিত। নাইটলাইফ ও শহরের কেন্দ্রস্থল হওয়ায় অনেক বিদেশি এখানে ভিড় করেন।’
অভিযানে একটি গোপন জুয়ার আসরও ধরা পড়ে, যেখানে প্রায় সাত-আটজন বিদেশি অনলাইন জুয়ায় মেতে ছিলেন। তাদেরও আটক করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের প্রাথমিক যাচাই শেষে পুত্রাজায়ার ইমিগ্রেশন সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হবে এবং সেখান থেকে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হবে।
বাসরি ওসমান আরও বলেন, ‘অভিযান অব্যাহত থাকবে। আমরা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও নজরদারি বাড়াব, যাতে নিয়োগকারীরা কেবল অনুমোদিত কোটার মধ্যে বিদেশি কর্মী নিয়োগ করেন।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন