ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা। রোববার ভোরে গাজা শহরের সাবরা মহল্লায় বিমান হামলা চালিয়ে একই পরিবারের ২৫ জনকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ভোররাতে সাবরা এলাকায় একাধিক বাড়িতে বিমান থেকে বোমা ফেলা হয়। আগস্টের শেষ দিক থেকে এলাকাটি ধ্বংস ও দখলের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ইসরায়েলি ট্যাঙ্কও এখানে অগ্রসর হয়েছিল।
উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, অন্তত ১৭ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পারিবারিক সূত্রের দাবি, ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে এখনো সাহায্যের জন্য আর্তনাদ শোনা যাচ্ছে।
এক স্বজন আবেগঘন কণ্ঠে বলেন, ‘আমি সমগ্র বিশ্বের কাছে আহ্বান জানাই, সাহায্য করুন। আমাদের আত্মীয়রা জীবন্ত অবস্থায় কবরের মধ্যে আছে। আমরা তাদের চিৎকার শুনতে পাই, কিন্তু পৌঁছাতে পারি না।’
তিনি অভিযোগ করেন, উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপে পৌঁছানোর চেষ্টা করলেই ইসরায়েলি ড্রোন গুলি চালাচ্ছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, আহতদের ছোট গাড়িতে করে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। এক মা কাঁদতে কাঁদতে বলছেন, ‘আমি আমার সব সন্তানকে হারিয়েছি।’
একই সময়ে গাজা শহরের পশ্চিমে শাতি শরণার্থী শিবির ও দক্ষিণ-পশ্চিমের তাল আল-হাওয়া এলাকায় তীব্র বিমান হামলা চালানো হয়েছে। নাসর এলাকার লাভাল টাওয়ার ও পাশের একটি বাড়িতেও হামলার খবর পাওয়া গেছে।
গাজার বুরেইজ শরণার্থী শিবিরে জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ পরিচালিত একটি ক্লিনিকের কাছে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত সাত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে চার শিশু রয়েছে।
বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, রোববার ভোর থেকে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬৮ জন নিহত হয়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় ৬৫ হাজার ২৮৩ জন নিহত এবং ১ লাখ ৬৬ হাজার ৫৭৫ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি অবরোধজনিত দুর্ভিক্ষে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে অনাহারে ১৪৭ শিশুসহ মোট প্রাণহানি দাঁড়িয়েছে ৪৪০ জনে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন