রবিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২৫, ০৯:৪০ পিএম

মারওয়ান বারগুতিই কি ফিলিস্তিনের সম্ভাব্য রাষ্ট্রনায়ক

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২৫, ০৯:৪০ পিএম

মারওয়ান বারগুতি। ছবি- সংগৃহীত

মারওয়ান বারগুতি। ছবি- সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে মারওয়ান বারগুতি এমন এক নাম, যাকে বহু ফিলিস্তিনি ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক ‘ভবিষ্যতের ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের সম্ভাব্য নেতা’ হিসেবে দেখেন। বর্তমানে তিনি ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি থাকলেও তার রাজনৈতিক প্রভাব ও জনপ্রিয়তা ক্রমবর্ধমান। তাকে প্রায়শই দক্ষিণ আফ্রিকার নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে তুলনা করা হয়, কারণ দীর্ঘ কারাবাসেও তিনি ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ঐক্য ও সংগ্রামের প্রতীক হিসেবে অবস্থান ধরে রেখেছেন।

৬৬ বছর বয়সি বারগুতি দীর্ঘকাল ধরে ইসরায়েলের কারাগারে রয়েছেন। ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কারাগারে স্থানান্তরের সময় তাকে আটজন রক্ষী মিলে অজ্ঞান হওয়া পর্যন্ত মারধর করেছে এবং চারটি পাঁজরের হাড় ভেঙে দিয়েছে। এতে তার শারীরিক ও রাজনৈতিক অবস্থার ওপর গভীর প্রভাব পড়েছে। তার পরিবার আশঙ্কা করছে, ইসরায়েল সরকার যদি দীর্ঘমেয়াদি আঘাত করে, তবে হয়তো তিনি অক্ষম হয়ে যাবেন, এর ফলে ফিলিস্তিনিরা একজন শক্তিশালী নেতাকে হারাতে পারে।

যদিও এই মারধরের অভিযোগ ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ অস্বীকার করেছে, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো বারগুতিকে মারধরের বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

১৯৫৯ সালে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের কোবার গ্রামে জন্ম নেওয়া বারগুতি অল্পবয়সে ফাতাহে যোগ দেন এবং ফাতাহের যুবসংগঠন শাবিবার সহ-প্রতিষ্ঠাতা হন। দ্বিতীয় ইন্তিফাদার সময় তিনি ফাতাহের সশস্ত্র শাখা তানজিমের গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন।

দীর্ঘ কারাবাসেও বারগুতি শিক্ষাগত ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে গেছেন। তিনি হিব্রু ভাষা শিখেছেন, রাজনৈতিক অধ্যয়ন করেছেন এবং আন্তর্জাতিক নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। তার লেখনী ও উদ্যোগ ফিলিস্তিনি বন্দিদের মধ্যে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের প্রতি সমর্থন জোরদার করেছে।

বারগুতি ও ফিলিস্তিনের রাজনীতি

বারগুতির গুরুত্ব শুধুমাত্র তার রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, বরং তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা ও আন্তঃদলীয় গ্রহণযোগ্যতাতেও। ফাতাহ ও হামাসসহ অন্যান্য রাজনৈতিক গোষ্ঠীর মধ্যে বিভেদ দূর করার ক্ষমতার কারণে তাকে সম্ভাব্য ভবিষ্যতের রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে দেখা হয়।

জরিপ অনুযায়ী, ফিলিস্তিনে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে বারগুতি তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় অনেক বেশি ভোট পেতে সক্ষম হবেন।

অনেক প্রাক্তন ইসরায়েলি কর্মকর্তাও উল্লেখ করেছেন, বারগুতি ফিলিস্তিনের স্বীকৃত অধিকারের পক্ষে এত স্পষ্টবাদী নেতা যে তাকে দমন করা দীর্ঘমেয়াদে রাজনৈতিক প্রভাব ফেলতে পারে।

বারগুতি দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের দৃঢ় সমর্থক। তিনি কখনো হামাসের সদস্য ছিলেন না এবং তাদের সহিংস কার্যক্রমের সমালোচনা করেছেন। কারাগারেও তিনি ফিলিস্তিনি বন্দিদের মধ্যে জাতীয় ঐক্যের জন্য কাজ চালিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, তার মুক্তি হলে ফাতাহ ও হামাসকে একত্রিত করে শক্তিশালী ও বিশ্বাসযোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তোলা সম্ভব। এটি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

বারগুতিকে কারাগারে রাখা ইসরায়েলের রাজনৈতিক ভয়কে প্রতিফলিত করে। যে নেতা শান্তি আলোচনা ও ফিলিস্তিনি ঐক্যের পথ খুলতে পারে, তাকে সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করে আটক রাখা হচ্ছে বলে ধারণা করা হয়। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনি জনগণকে সম্ভাব্য শক্তিশালী নেতৃত্ব থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। তার মুক্তি শুধুমাত্র বন্দি বিনিময় নয়, বরং ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের এক গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা।

Link copied!