আফগানিস্তানে ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা হুহু করে বেড়েই চলেছে। এরই মধ্যে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৪১১ জনে। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত তিন হাজার ১২৪ জনের আহত হওয়ার খবর জানা গেছে। তালেবান সরকারের মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
জবিহুল্লাহ মুজাহিদ আরও জানান, কুনার প্রদেশে ৬ মাত্রার শক্তিশালী এই ভূমিকম্পে পাঁচ হাজার ৪০০টিরও বেশি বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে। এর মধ্যে প্রদেশটির গাজীবাদ গ্রামটি প্রায় সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে গেছে।
আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল লতিফ (৫০) জানান, তার বাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ায় তার নিচে চাপা পড়ে মা, ছেলে ও স্ত্রী নিহত হয়েছে। একই সঙ্গে তার নিকটাত্মীয়দের দুটি বাড়িও ধসে পড়ে। একটিতে ১১ জন ও অন্যটিতে ১৩ জন ছিলেন। কেউই বেঁচে নেই।
তিনি বলেন, ‘আমরা এখন মরদেহ উদ্ধারে সহায়তা পাওয়ার চেষ্টা করছি। চারপাশে ঠান্ডা, খাবার নেই, আশ্রয়ের জায়গাও নেই। পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ।’
গ্রামের আরেক বাসিন্দা রাব্বানি জানান, তিনি নিজের বাবা-মা, স্ত্রী ও চার সন্তানসহ পরিবারের সাত জনকে হারিয়েছেন।
৪০ বছর বয়সি রাব্বানি বলেন, ‘এখনো অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন। ধ্বংসস্তূপ সরানোর কোনো উপায় আমাদের নেই। ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে, কিন্তু এখানকার মানুষ এখনো কোনো সাহায্য পায়নি।’
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) জানিয়েছে, আফগানিস্তানের কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ৩৯ হাজার বর্গ কিলোমিটারের বেশি গম চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে তিন লাখ ৪৯ হাজার টন প্রধান ফসল ঝুঁকির মুখে পড়বে। ভূমিকম্পের ফলে পশুপালন খাতও হুমকির মুখে পড়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলিতে ১ দশমিক ৩৮ মিলিয়ন পশু রয়েছে।
ভূমিকম্পের পরই মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানায়, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৬। জালালাবাদের উত্তর-পূর্বে ২৭ কিলোমিটার দূরে রোববার স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এর গভীরতা ছিল মাত্র ৮ কিলোমিটার।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন